বন্ধন ব্যাঙ্কের কর্তাদের সঙ্গে লিয়েন্ডার পেজ় (মাঝে)। ছবি: সংগৃহীত।
বিনেশ ফোগাট নিয়ে গোটা দেশ যখন উত্তাল, তখন এই বিষয়ে বিশেষ কিছু বলতে চাইলেন না লিয়েন্ডার পেজ। আন্তর্জাতিক টেনিসের ‘হল অফ ফেম’-এ জায়গা পাওয়ার পর লিয়েন্ডার প্রথম সংবর্ধিত হলেন কলকাতায়। বন্ধন ব্যাঙ্ক সংবর্ধনা দিল শহরের এক হোটেলে। ১৯৯৬ অলিম্পিক্সে পদকজয়ী এ বারের অলিম্পিক্স নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে রাজি হলেন না।
লিয়েন্ডার থাকবেন অথচ খেলা থাকবে না, তা হয় কী করে! কারও নাম না করে লিয়েন্ডারের বক্তব্য, ‘‘ভারতের হয়ে যে যেখানে যাই খেলুক, আমার সমর্থন সব সময় থাকে। থাকবেও।’’ বিনেশ ফোগাটের ঘটনা নিয়ে বললেন, ‘‘সবটা ভাল করে না জেনে কথা বলতে চাই না। আমাদের আরও অপেক্ষা করা উচিত। তবে সকলের মতো আমারও খুব খারাপ লেগেছে।’’
ভারতের টেনিস ভবিষ্যৎ নিয়ে আশাবাদী শোনাল না লিয়েন্ডারকে। দেশের অন্যতম সেরা খেলোয়াড় বললেন, ‘‘ভারতের টেনিসকে অনেক পথ যেতে হবে। আমরা অনেক পিছিয়ে আছি। উন্নতির প্রচুর জায়গা আছে।’’ এই কথার সূত্রে লিয়েন্ডারের সংযোজন, ‘‘আমরা আইপিএল, আইএসএল, বিশ্বকাপ, বিশ্বব্যাপী বিশ্বচ্যাম্পিয়নশিপ, অলিম্পিক্স নিয়ে ভাবি। একেবারে নীচের স্তরের দিকে তাকাই না। ভাবি না। চ্যাম্পিয়ন তৃণমূল স্তর থেকেই তৈরি হয়।’’
প্যারিসে ভারতের অনেক খেলোয়াড় পদকের কাছে গিয়েও ব্যর্থ কেন? লিয়েন্ডার বললেন, ‘‘কাউকে নিয়ে আলাদা মন্তব্য করব না। সেটা ঠিক নয়। চ্যাম্পিয়ন হওয়ার জন্য শারীরিক এবং মানসিক শক্তি দুটোই প্রয়োজন। আমরা মানসিক শক্তিতে পিছিয়ে যাচ্ছি হয়তো। আগেই বললাম, চ্যাম্পিয়ন তৈরি করতে হয়। আমাদের সকলের মধ্যেই কিছু না কিছু প্রতিভা আছে। সেটা খুঁজে বার করে তৈরি করতে হয়।’’
বন্ধন ব্যাঙ্কের সঙ্গে হাত মিলিয়ে সেই কাজটাই করতে চান লিয়েন্ডার। অন্তত আড়াই কোটি শিশুর ভবিষ্যৎ গঠনে সাহায্য করতে চান। তাদের পছন্দ মতো ক্ষেত্রে এগিয়ে দিতে চান। কাজ শুরুতে চান নিজের শহর কলকাতা থেকে। আপাতত চলছে পরিকল্পনা। ১০ বা ১৫ বছর পর ফলাফল দিয়ে সব প্রশ্নের জবাব দেবেন। কাজ শুরুর আগে বেশি কথা বলতে নারাজ লিয়েন্ডার।
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বন্ধন ব্যাঙ্কের এমডি ও সিইও (অন্তর্বর্তিকালীন) রতন কুমার কেশ বলেন, “লিয়েন্ডার পেজের আন্তর্জাতিক টেনিস হল অফ ফেমে অন্তর্ভুক্তি গোটা দেশের জন্য একটি গর্বের মুহূর্ত। উনি এক জন কিংবদন্তি এবং আমাদের সকলের জন্য অনুপ্রেরণা। বন্ধন ব্যাঙ্ক ওঁকে সম্মানিত করতে পেরে গর্বিত।’’
লিয়েন্ডার বলেন ‘‘প্লেয়ার ক্যাটাগরিতে প্রথম এশিয়ান এবং ভারতীয় হিসেবে আন্তর্জাতিক টেনিস হল অফ ফেমে অন্তর্ভুক্ত হওয়া আমার জন্য অত্যন্ত সম্মানের মুহূর্ত। বহু বছরের কঠোর পরিশ্রম, নিষ্ঠা এবং আমার পরিবার, কোচ, আমার দল এবং বিশ্বের সমস্ত ভারতীয়দের অবিচল সমর্থনের ফল। আমাকে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য আমি বন্ধন ব্যাঙ্কের কাছে কৃতজ্ঞ।’’