চর্চায়: ফাইনালে ওঠার উচ্ছ্বাস জোকোভিচের। ছবি: পিটিআই।
আরও একটি ম্যাচ। আরও এক প্রতিপক্ষের সামান্য কিছু ক্ষণের জন্য লড়াই উপহার দিয়ে খরকুটোর মতো উড়ে যাওয়া। সেমিফাইনালে আমেরিকার টমি পলকে হারালেন ৭-৫, ৬-১, ৬-২।
আরও একটি অস্ট্রেলীয় ওপেন জয়ের থেকে মাত্র এক ধাপ দূরে তিনি। রবিবারের ফাইনালে প্রতিদ্বন্দ্বী গ্রিসের স্টেফানোস চিচিপাস। যিনি প্রথম সেমিফাইনালে রাশিয়ার কারেন হ্যাচানভকে হারালেন ৭-৬ (৬-২), ৬-৪, ৬-৭ (৬-৮), ৬-৩। চব্বিশ বছরের চিচিপাস কখনও গ্র্যান্ড স্ল্যাম জেতেননি। আর তিনি রবিবার জিতলে শুধু অস্ট্রেলীয় ওপেনই জিতে ফেলবেন দশ বার। সর্বাধিক গ্র্যান্ড স্ল্যাম জয়ের দৌড়ে ধরে ফেলবেন ২২ স্ল্যামের মালিক রাফায়েল নাদালকে।
তিনি নোভাক জোকোভিচ— তবু অস্ট্রেলীয় জনতার তুমুল অভিনন্দন, সমর্থন আর হাততালি যেমন পাচ্ছেন, তেমনই আচমকা বিতর্কেও জড়িয়ে পড়েছেন। মেলবোর্ন আর তিনি যেন বিতর্কের সুতোয় গাঁথা। কোভিড প্রতিষেধক না নিয়ে আসায় গত বার না খেলেই বিদায় নিতে হয়েছিল। আর এ বারে সব কিছু যখন দারুণ ভাবে এগোচ্ছে, তখনও হঠাৎ বিতর্ক আছড়ে পড়ল। কোয়ার্টার ফাইনাল ম্যাচের শেষে নোভাক-ভক্তদের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন তাঁর বাবা সার্জান জোকোভিচ। তখন রাশিয়ার সমর্থনে সে দেশের পতাকা নিয়ে এক দল সমর্থক বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন। জোকোভিচের বাবা নাকি সেই রুশ পতাকা হাতে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে রাশিয়ার জয়ধ্বনি দিয়ে গলা মিলিয়েছেন।
এই ঘটনা নিয়ে অস্ট্রেলিয়া ফের উত্তাল। একে তো রাশিয়ার যুদ্ধ লিপ্সাকে ক্রীড়া দুনিয়া এককাট্টা হয়ে নিন্দা করেছে। প্রতিযোগিতায় রুশ পতাকা দেখানোও নিষিদ্ধ। সেমিফাইনাল জেতার উৎসবের তাল কিছুটা কেটে যায় সাংবাদিক সম্মেলনে জোকোভিচকে এ নিয়ে সরাসরি প্রশ্ন করা হলে। তিনি কিছুটা বিরক্ত হন প্রশ্নকর্তার উপরে। বলেন, ‘‘আমি তো বলেইছি, আমার বাবাও বিষয়টা ব্যাখ্যা করেছে। আমার ভক্তদের সঙ্গে কথা বলছিল বাবা। প্রত্যেকটা ম্যাচেই যা করে। বুঝতে পারেনি, কারা কী বলছে। বাবা কিছু বলেনি। শুধু ভক্ত মনে করে ওদের পাশ দিয়ে গিয়েছে। বাবাকে অন্যায় ভাবে বিষয়টির সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে।’’
অভিযোগ উঠেছে, জোকোভিচের বাবা নাকি রাশিয়ার পতাকা হাতে দাঁড়িয়ে থাকা দলটির সঙ্গে গলা মিলিয়ে বলেন, ‘‘রুশরা দীর্ঘজীবী হোক।’’ জোকোভিচ উড়িয়ে দিয়ে বলেন, ‘‘আমরা অনেক যুদ্ধ দেখেছি। কেউ যুদ্ধকে সমর্থন করি না। আমাকে যে দর্শকেরা এত সমর্থন করছে, তা নিয়ে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতেই বাবা প্রত্যেক দিন সকলের সঙ্গে দেখা করতে যাচ্ছে। ছবিও তুলছে সমর্থকদের সঙ্গে। যে ছবিটা নিয়ে এত কথা তোলা হচ্ছে, সেটাও আমার ভক্তদের সঙ্গে ছবি তুলতে চাওয়ার মনোভাব নিয়ে তোলা। এটাকে অন্য ভাবে তুলে ধরা হচ্ছে।’’
তিনি যোগ করেন, ‘‘ভিড়ের মধ্যে অনেক সার্বিয়ার পতাকা ছিল। বাবা ভেবেছে, সার্বিয়ার পতাকা হাতে আমার ভক্তদের সঙ্গে ছবি তুলছে। এর বেশি কিছু নেই এর মধ্যে।’’
এ দিকে, আজ শনিবার মেয়েদের সিঙ্গলস ফাইনালে খেলতে নামছেন দুই নতুন তারা এলেনা রেবাকিনা এবং আরিনা সাবালেঙ্কা।