সব ঠিক ঠাক থাকলে গত বছরই জোকোভিচের নামের পাশে ২২টি গ্র্যান্ড স্ল্যাম বসে যেতে পারত। ছবি: রয়টার্স
ফাইনালেও কোনও লড়াইয়ের সামনে পড়তে হল না নোভাক জোকোভিচকে। গ্রিসের স্টেফানোস চিচিপাসকে ৬-৩, ৭-৬ (৭-৪), ৭-৬ (৭-৫) গেমে হারিয়ে হাতে তুলে নিলেন দশম অস্ট্রেলিয়ান ওপেন ট্রফি। রাফায়েল নাদালের সঙ্গে ফরাসি ওপেনের যে রকম সম্পর্ক, ঠিক একই সম্পর্ক জোকোভিচ এবং অস্ট্রেলিয়ার। নিজের পছন্দের প্রতিযোগিতা জিতে সেই নাদালকেই ছুঁয়ে ফেললেন জোকোভিচ। একই সঙ্গে স্থানচ্যুত করলেন ‘ভবিষ্যতের নাদাল’ কার্লোস আলকারাজকে। শীর্ষস্থান আবার ফিরে পেলেন জোকোভিচ।এর আগে ৩৭৩ সপ্তাহ ক্রমতালিকার শীর্ষে ছিলেন তিনি। শুরু হল ৩৭৪তম সপ্তাহ।
গত একটা বছর বেশ টালমাটাল গিয়েছে নোভাক জোকোভিচের জীবনে। শুরুটা হয়েছিল গত বছরের জানুয়ারিতে। দুবাই থেকে অস্ট্রেলিয়ায় পৌঁছে জোকোভিচ জানতে পারেন, কোভিড প্রতিষেধক না নেওয়ায় তাঁকে খেলতে দেওয়া হবে না। পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছিল ডিটেনশন কেন্দ্রে। যে জীবনযাপনে তিনি অভ্যস্ত, সে সবের থেকে অনেক দূরে থেকে কয়েকটা দিন কাটাতে হয়েছিল সার্বিয়ার তারকাকে। আইনি লড়াইয়েও সাফল্য মেলেনি।
জোকোভিচ ভেঙে পড়েননি। দাঁতে দাঁত চেপে লড়াই করা ছোটবেলা থেকেই তাঁর অভ্যাস। চোখের সামনে গৃহযুদ্ধ, নৃশংস হত্যা দেখেছেন। লড়াইয়ের বীজ বপন হয়েছিল সেই সময় থেকেই। রজার ফেডেরার, রাফায়েল নাদালের যুগেও জোকোভিচ বিরাজমান। দুই মহাতারকার অনেক পরে তাঁর উত্থান। কিন্তু ২০২২-এ এসে তাঁর পাশে ২২টি গ্র্যান্ড স্ল্যাম। শুধু তাই নয়, বাকি দুই তারকার বিরুদ্ধে মুখোমুখি সাক্ষাতেও তাঁর পরিসংখ্যান বেশ ভাল। ফেডেরারের বিরুদ্ধে একটু বেশি।
সব ঠিক ঠাক থাকলে গত বছরই জোকোভিচের নামের পাশে ২২টি গ্র্যান্ড স্ল্যাম বসে যেতে পারত। হয়তো এই অস্ট্রেলিয়ান ওপেনে তিনি সবচেয়ে বেশি গ্র্যান্ড স্ল্যামের অধিকারী হতেন। ভাগ্যের ফেরে নাদালকে ছুঁতে হল ২০২৩-এ এসে। স্প্যানিশ তারকার টেনিসজীবনের সূর্য পাটে বসতে আর কয়েক দিন হয়তো বাকি। তাই সবচেয়ে বেশি গ্র্যান্ড স্ল্যাম জেতার নজির যে অদূর ভবিষ্যতে (হয়তো এই বছরেই) জোকোভিচের নামের পাশে বসতে চলেছে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
গত বছর অস্ট্রেলিয়ান ওপেন পাননি। ফরাসি ওপেন যায় নাদালের ক্যাবিনেটে। উইম্বলডন জিতলেও লাভ হয়নি। এটিপির তরফে মেলেনি কোনও র্যাঙ্কিং পয়েন্ট। ফলে এক নম্বর জায়গা মজবুত করার যে সুযোগ থাকা উচিত ছিল, সেটা পাননি। ইউএস ওপেন জিততে পারেননি। আরও এক বার এক নম্বরে ওঠার সুযোগ হারান। সেই সুযোগ আগামী দিনের তারকা কার্লোস আলকারাজ় উঠে আসেন। কিন্তু ৩৫ বছরের খেলোয়াড় সেরা ছন্দে থাকলে তাঁকে আটকানোর মতো ক্ষমতা খুব কম খেলোয়াড়েরই রয়েছে। জোকোভিচও তাই অপ্রতিরোধ্য। এগিয়ে যাচ্ছে তরতর করে। কবে থামবেন, কে থামাবে, কেউ জানে না।