ফেডেরারের অবসরের দিনে আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েছিলেন জোকোভিচ। রজারকে জড়িয়ে ধরে কেঁদেছিলেন তিনি। —ফাইল চিত্র
টেনিস থেকে অবসর নিলেও টেনিস খেলোয়াড় ও সমর্থকদের মনের মধ্যেই রয়েছেন রজার ফেডেরার। আন্দ্রে রুবলেভকে হারিয়ে অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের সেমিফাইনালে উঠে ফেডেরারের কথাই মনে পড়ছে নোভাক জোকোভিচের। ধারাভাষ্যকারের সঙ্গে কথা বলার সময় খানিক আবেগপ্রবণ হয়ে পড়লেন জোকার।
ম্যাচ শেষে ধারাভাষ্যকার জোকোভিচকে জিজ্ঞাসা করেন, গ্র্যান্ড স্ল্যামে প্রথম বার সেমিফাইনাল লড়াইয়ের কথা কি মনে আছে তাঁর? জবাবে জোকোভিচ বলেন, ‘‘যত দূর মনে পড়ছে ২০০৭ সালের ইউএস ওপেনে প্রথম সেমিফাইনালে উঠেছিলাম। সেমিফাইনালে জিতেছিলাম। কিন্তু ফাইনালে ফেডেরারের কাছে হেরে গিয়েছিলাম।’’
জোকোভিচের মুখে ফেডেরারের কথা শুনে রড লেভার এরিনায় উপস্থিত দর্শকরা চিৎকার করে ওঠেন। লেভার নিজেও বসেছিলেন সেখানে। ফেডেরারের কথা বলার সময় জোকোভিচ নিজেও হাততালি দেন। তাঁর চোখের কোণ চিকচিক করছিল। জোকোভিচ বলেন, ‘‘সবাই মিলে ফেডেরারের জন্য হাততালি দিন। ও সত্যিই রাজা। এটা ওর প্রাপ্য।’’
ফেডেরারের সঙ্গে অনেক ঐতিহাসিক ম্যাচ উপহার দিয়েছেন জোকোভিচ। সে সব কথাও উঠে আসে তাঁর মুখে। জোকার বলেন, ‘‘আমরা বেশ কিছু কঠিন ম্যাচ খেলেছি। সবার মনে থাকবে সেগুলো। এখন পরিবারের সঙ্গে ও সময় কাটাচ্ছে। আগামী দিনের জন্য ওকে শুভেচ্ছা। কিন্তু টেনিস ওর অভাব বোধ করছে।’’
অস্ট্রেলিয়ান ওপেন শুরু হওয়ার আগেই হ্যামস্ট্রিংয়ে চোট পেয়েছিলেন জোকোভিচ। তাতে অবশ্য তাঁকে আটকানো যায়নি। বার বার চোট তাঁর কাছে হেরে গিয়েছে। হ্যামস্ট্রিংয়ে চোট পাওয়ায় বাঁ পায়ের উরুতে একটি ব্যান্ডেজ বেঁধে খেলছেন জোকোভিচ। কিন্তু ব্যান্ডেজ বেঁধে খেলার জন্য কোর্টে নড়াচড়া করতে কোনও সমস্যা হল না সার্বিয়ার খেলোয়াড়ের। গোটা ম্যাচ দাপট দেখিয়ে খেললেন। প্রতিপক্ষকে নাজেহাল করে ছাড়লেন। ৬-১, ৬-২, ৬-৪ সেটে জিতেছেন জোকোভিচ। গোটা ম্যাচে মাত্র ৭টি গেম জিততে পেরেছেন রুবলেভ। এই পরিসংখ্যানই বলে দিচ্ছে, কতটা দাপট দেখিয়ে খেলেছেন জোকোভিচ।
খেলার শুরু থেকেই ছন্দে খেলছিলেন জোকভিচ। নিজের সার্ভিস ধরে রেখে রুবলেভের সার্ভিস ভাঙার পরিকল্পনা করেছিলেন তিনি। প্রথম সেটে দাঁড়াতেই পারেননি ৬-১ প্রথম সেট জিতে নেন জোকোভিচ। তাঁর গতি, পাওয়ারফুল সার্ভিস সমস্যায় ফেলে দিয়েছিল রুবলেভকে। দ্বিতীয় সেটেও দেখা যায় একই ছবি। নিজের সার্ভিস ধরে রাখতে পারছিলেন না রুবলেভ। স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছিল, চাপে পড়ে গিয়েছিলেন তিনি। আনফোর্সড এরর করছিলেন। অন্য দিকে ঠান্ডা মাথায় ম্যাচ বার করে নিয়ে যাচ্ছিলেন জোকার। তাঁর মুখে ধরা পড়ছিল প্রত্যয়। দ্বিতীয় সেটও ৬-২ জিতে যান জোকোভিচ।
তৃতীয় সেটে কিছুটা লড়াই দেন রুবলেভ। খেলা যত গড়াচ্ছিল, তত নিজের চোট সামলে খেলছিলেন জোকোভিচ। তার মধ্যেই শরীর ছুড়ে দিয়ে রিটার্ন করতে দেখা গেল তাঁকে। অনেক চেষ্টা করেও স্ট্রেট সেটে হার বাঁচাতে পারেননি রুবলেভ। ৬-৪ তৃতীয় সেট জিতে অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের সেমিফাইনালে ওঠেন জোকোভিচ। তার পরেই ফেডেরারের কথা শোনা গেল তাঁর মুখে।