প্রস্তুতি: রবিবার ওয়াংখেড়েতে অনুশীলন কামিন্সের। পিটিআই
ভারতের বিরুদ্ধে সিরিজের জন্য পুরোদমে প্রস্তুতিতে নেমে পড়ল অস্ট্রেলিয়া। রাতের ওয়াংখেড়েতে ঘাপটি মেরে বসে থাকলেন অস্ট্রেলিয়ার কোচ অ্যান্ড্রু ম্যাকডোনাল্ড। পরীক্ষা করে দেখলেন, রাতে কতটা শিশির পড়ে। এরই মাঝে অস্ট্রেলীয় বোলাররা অনুশীলন চালালেন ভিজে বলে। লক্ষ্য একটাই। রাতের শিশিরকে সামলানো।
অস্ট্রেলীয় কোচের এই নৈশ অভিযানের কথা ফাঁস করে দিলেন তাঁরই দলের পেসার কেন রিচার্ডসন। রবিবার মুম্বইয়ে সাংবাদিকদের রিচার্ডসন বলেন, ‘‘গত কাল রাতে আমাদের কোচ অ্যান্ড্রু ম্যাকডোনাল্ড ওয়াংখেড়েতে ছিল। কোচ দেখতে চেয়েছিল, কখন শিশির পড়ে। আমরা সব কিছুর জন্যই তৈরি আছি।’’ জাস্টিন ল্যাঙ্গার এই সফরে না আসার কারণে দল নিয়ে এসেছেন ম্যাকডোনাল্ড। যিনি কিছু দিন প্রধান কোচ ল্যাঙ্গারের সহকারী হিসেবে কাজ করছেন।
রিচার্ডসন আরও বলেছেন, ‘‘আমরা নেট প্র্যাক্টিসে ভিজে বল ব্যবহার করব। যাতে শিশির পড়লে সমস্যা না হয়। তবে এ সব নতুন কিছু নয়। অস্ট্রেলিয়াতেও শিশিরের জন্য সমস্যা হয়।’’ অস্ট্রেলীয় পেসার স্বীকার করে নিচ্ছেন, ঘরের মাঠে ভারতই ফেভারিট। মুম্বইয়ে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে প্রথম ম্যাচ ১৪ জানুয়ারি। সেই ম্যাচ নিয়ে রিচার্ডসন বলছেন, ‘‘ঘরের মাঠে সব দলই ফেভারিট। ভারত তো বটেই। এই কয়েক দিন আগেই ফিঞ্চি (অ্যারন ফিঞ্চ) বলছিল, ভারতের মাটি থেকে পরপর দু’বার কেউ সিরিজ জিতে ফিরতে পারেনি। আমরা জানি, কাজটা কতটা কঠিন।’’
আরও পড়ুন: রাহুল এগিেয় কিছুটা, শিখরও নন সমর্থনহীন
শেষ বার ভারতের মাটিতে খেলা ওয়ান ডে সিরিজে ০-২ পিছিয়ে পড়েও ৩-২ জিতে নিয়েছিল অস্ট্রেলিয়া। ২৮ বছর বয়সি রিচার্ডসন বলছেন, ‘‘ভারত এ বার আমাদের জন্য তৈরি থাকবে। ভারতের মাটিতে, ভারতের বিরুদ্ধে সাদা বলের ক্রিকেট খেলাটা বোধ হয় সব চেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। এখানকার পিচ আর আমাদের পিচের মধ্যে প্রচুর ফারাক। তা ছাড়া ভারতের মাঠের বাউন্ডারিও বেশ ছোট। তাই বোলারদের কাছে চ্যালেঞ্জটা আরও কঠিন।’’
আরও পড়ুন: এ বার বলিউডে চাকদহের রূপকথা
রিচার্ডসন এ-ও জানাচ্ছেন, চ্যালেঞ্জ কঠিন হলেও ভারতীয় ক্রিকেটারদের থামাতে তাঁরা তৈরি। এই ডান-হাতি পেসারের কথায়, ‘‘ভারতের বিরুদ্ধে এই সিরিজটা নিয়ে আমরা অনেক আলোচনা করেছি। সবাই জানে কাকে কী করতে হবে। ভারতীয় ক্রিকেটারদের জন্য পরিকল্পনা করা শুরু হয়ে গিয়েছে। তবে এটা জানি, এখানে বড় রানের খেলা হবে।’’
অস্ট্রেলিয়া এই সিরিজ খেলতে এসেছে চার পেসারকে অস্ত্র করে। রিচার্ডসন ছাড়াও আছেন মিচেল স্টার্ক, প্যাট কামিন্স এবং জশ হেজলউড। রিচার্ডসন জানেন, প্রথম একাদশে জায়গা পাওয়া কঠিন তাঁর পক্ষে। তাঁর মন্তব্য, ‘‘ওদের তিন জনের সঙ্গে বা দু’জনের সঙ্গে খেলতে পারলে তো ভালই হত। আমি জানি না, টিম ম্যানেজমেন্ট কী ভাবছে। তবে আমি লাইনে দাঁড়াতে তৈরি।’’
মাঝে মধ্যেই দল থেকে ছিটকে যেতে হয়েছে রিচার্ডসনকে। তার পরেও অবশ্য ফিরে এসেছেন তিনি। রিচার্ডসনের কথায়, ‘‘আমি মাঠে নেমে ভাল খেলেই আবার দলে ফিরে এসেছি। ম্যাচের বাইরে থাকলে বাড়তি পরিশ্রম করার সুযোগ থাকে। নিজের দোষত্রুটি ঠিক করে নেওয়া যায়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত মাঠে নেমে কী করছি, সেটাই আসল কথা।’’
কয়েক দিন আগেই বিগ ব্যাশ লিগে খেলার সময় অস্ট্রেলিয়ার অলরাউন্ডার মার্কাস স্টোয়নিসের সঙ্গে ঝামেলায় জড়িয়ে পড়েন রিচার্ডসন। যার পরে রিচার্ডসনের উদ্দেশে সমকাম নিয়ে বিদ্বেষপূর্ণ মন্তব্য করেন স্টোয়নিস। যা নিয়ে রিচার্ডসন এখন বলছেন, ‘‘এ রকম রাগতে স্টোয়নিসকে কখনও দেখিনি। তবে এখান থেকে শিক্ষাটা হল যে, ভবিষ্যতে যেন এ রকম ঘটনা
কিছু না ঘটে।’’