আর একটা হার্ডল পার হতে পারলেই ফাইনালে আটলেটিকো দে কলকাতা। আজ মঙ্গলবার অ্যাওয়ে ম্যাচে মুম্বই সিটি এফসি-কে আটকাতে কী করা উচিত মলিনার? স্ট্র্যাটেজি কী হওয়া দরকার? ফুটবলারদের কী ভাবে তাতাতে পারেন মলিনা? হদিশ দিলেন ভারতের পাঁচ সফল কোচ।
সুব্রত ভট্টাচার্য
আর্মান্দো কোলাসো
এক গোলে এগিয়ে থাকার সুবিধে এটিকে পাবেই। একই সঙ্গে ফোরলানের না থাকাটা ওদের কাছে বড় লাভ। মুম্বই এখানে মানসিক ভাবে অনেকটা পিছিয়ে থাকবে। আর যেহেতু অ্যাওয়ে গোলের নিয়ম নেই, তাই এটিকে-র ড্র করলেই চলবে। কিন্তু ড্র করার মানসিকতা নিয়ে খেলতে নামলে সমস্যা হতে পারে। আমার মতে, রক্ষণে জোর দেওয়ার পাশাপাশি কাউন্টার অ্যাটাকেও বারবার উঠতে হবে। যাতে মুম্বই একটানা সুযোগ না পায়। গোল না করতে পারে। মুম্বই এক গোল করে দিলে ম্যাচ টাইব্রেকারে গড়াবে। পেনাল্টি শ্যুট আউটে সাধারণত অ্যাওয়ে টিমের উপরই চাপ বেশি থাকে।
আগের ম্যাচে এটিকে যে ভাবে খেলেছে, তাতে এই ম্যাচেও আমার বাজি ওরাই। তবে মুম্বইকে হাল্কা ভাবে নিলেই ভুল হবে। ফোরলান নেই ঠিকই, কিন্তু ওর জায়গায় আসতে পারে সনি নর্ডি। সনির খেলা আমি দেখছি। অভিজ্ঞ ফুটবলার। বড় মঞ্চে ভআল খেলে। আগের ম্যাচগুলোতে সে ভাবে সুযোগ না পাওয়ায় ও নিজেকে প্রমাণ করতে মরিয়া থাকবে। তাই ফোরলান নেই বলে কলকাতার খুশি হওয়ার বিশেষে কারণ দেখছি না। মুম্বই বধের আসল অস্ত্রই হল আক্রমণ। প্রতি-আক্রমণে ওদের জেরবার করে তুলতে হবে, তবে নিজেদের ডিফেন্স সামলে। ওদের আক্রমণ করার বেশি সুযোগ দিলে কিন্তু এক গোল শোধ হতে বেশি সময় যেমন লাগবে না, তেমনই গোলের ব্যবধান বাড়াতেও সময় নেবে না মুম্বই।
সঞ্জয় সেন
বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য
আগের ম্যাচে এটিকে খুব ভাল ফুটবল খেলেছে। ১-২ পিছিয়ে পড়ার পর ৩-২ করেছে টিমটা। মুম্বইয়ের মতো টিমের বিরুদ্ধে যা সহজ ছিল না। সে দিন এটিকে-র প্রত্যেকেই ভাল খেলেছিল। তাই টিমে পরিবর্তন জরুরি বলে আমি মনে করি না। সেটা মলিনার উপরই পুরোটা নির্ভর করবে। তবে এই পরিস্থিতিতে দু’টো জিনিস কোচেদের করতে হয়— ১) ফুটবলারদের মধ্যে আত্মতুষ্টি চলে আসার সম্ভাবনা থাকে। সেটা যাতে না আসে তার দায়িত্ব কোচকে নিতে হবে। আর ২) ফুটবলারদের মাথায় ঢুকিয়ে দিতে হবে, এটাই সেমিফাইনাল ম্যাচ। না জিতলে ছিটকে যেতে হবে টুর্নামেন্ট থেকে। ড্রয়ের ভাবনা ভাবলেই বিপদ।
আগের ম্যাচে এটিকে তুলনায় ভাল খেলেছিল। আমার মনে হয় না, মলিনা সেমিফাইনালের দ্বিতীয় লেগে উইনিং কম্বিনেশন ভাঙবে। তবে গোলকিপার বিদেশি না খেলিয়ে দেবজিৎকে খেলাতে পারে এটিকে। তাতে দ্যুতির উল্টো উইংয়ে জাভি লারাকে ব্যবহার করা যাবে। যেটা হলে উইং দিয়ে আক্রমণের ঝাঁঝ বাড়বে। আসলে দুই উইংয়ে জাভি এবং দ্যুতির মতো ফুটবলার যে কোনও টিমের কাছে বড় সম্পদ। ফোরলান যেমন নেই, তেমন শুনছিলাম শেহনাজেরও সম্ভবত চারটে কার্ড হয়ে গিয়েছে। শেহনাজও না থাকলে, সেটা কলকাতার কাছে সুবিধের হবে।
ডেরেক পেরিরা
এটিকে-র ডিফেন্স নিয়ে সতর্ক থাকতে হবে। অ্যাওয়ে ম্যাচে ওরা যেমন গোল করেছে, পাশাপাশি গোল খেয়েওছে। মুম্বই কিন্তু জেতার জন্য আজ সর্বশক্তি দিয়ে ঝাঁপাবে। ফোরলান নেই বলে হয়তো এটিকে সুবিধে পাবে। কিন্তু একটা টিমের ঘুরে দাঁড়ানো ছাড়া যখন কোনও উপায় থাকে না, তখন তারা বাঘের মতোই নখ-দাঁত বের করে ঝাঁপিয়ে পড়ে। মুম্বইয়ের সামনে আবার প্রথম বার ফাইনালে ওঠার শেষ সুযোগ। তাই রক্ষণে নজর দিতেই হবে। নেহাত অ্যাওয়ে গোলের নিয়ম নেই। তা বলে রক্ষণ বেশি সামলাতে গিয়ে যদি কাউন্টার অ্যাটাকে না ওঠে কলকাতা টিমের ফুটবলাররা, তা হলেও সমস্যা। মুম্বইয়ের নাগাড়ে আক্রমণ এটিকে-র ডিফেন্ডারদের পক্ষে সামলানো সে ক্ষেত্রে সহজ হবে না।