আলেয়ান্দ্রোর উপরে অভিমান এখনও যায়নি এনরিকের।
ইস্টবেঙ্গলের নতুন হেড কোচ মারিয়ো রিভেরাকে মেক্সিকো থেকে একবুক শুভেচ্ছা জানালেন লাল-হলুদের প্রাক্তন স্ট্রাইকার এনরিকে এসকুয়েদা। সদ্য প্রাক্তন হয়ে যাওয়া স্পেনীয় কোচ আলেয়ান্দ্রো মেনেন্দেজকে বিঁধতেও ছাড়লেন না এই মেক্সিকান ফুটবলার।
গত মরসুমে লাল-হলুদ জার্সিতে এনরিকে ৯টি গোল করেছিলেন। কিন্তু সুপার কাপের ঠিক আগে তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়। ইস্টবেঙ্গলের তরফে জানানো হয়েছিল, ব্যক্তিগত কারণেই এনরিকে ফিরে যাচ্ছেন দেশে। কিন্তু নিন্দুকরা বলেন, আলেয়ান্দ্রোই তাঁকে চাননি। সেই কারণে ক্লাব ছাড়তে হয়েছিল গত বারের আই লিগে তিন-তিন বার ম্যান অব দ্য ম্যাচ হওয়া ৯ নম্বর জার্সিধারীকে।
মেক্সিকান স্ট্রাইকার ইস্টবেঙ্গল ছেড়ে চলে গিয়েছেন অনেকদিন হল। আলেয়ান্দ্রোর উপরে অভিমান এখনও যায়নি লাল-হলুদের কাছে পরিচিত ‘প্যালেটা’র। কেন তাঁকে ইস্টবেঙ্গল ছাড়তে হয়েছিল? মেক্সিকো থেকে এনরিকে বললেন, ‘‘টনি ডোভাল, জনি অ্যাকোস্টা, আমাকে এবং অবশ্যই মারিয়োকে কেন ইস্টবেঙ্গল ছাড়তে হয়েছিল তা আলেয়ান্দ্রোকেই জিজ্ঞাসা করে দেখুন। ও কি কোনও কারণ দেখাতে পারবে? আমাদের কেন সরে যেতে হয়েছিল, তার উত্তর আমার কাছে নেই।’’
আরও পড়ুন: ভাইয়ের জন্য ইস্টবেঙ্গল সমর্থক হয়ে গিয়েছেন এটিকে-কে চ্যাম্পিয়ন করা দাদা
তিন তারকাকেই ছাড়তে হয় ইস্টবেঙ্গল। এনরিকের নিশানায় আলেয়ান্দ্রো।
আলেয়ান্দ্রোর সহকারী হিসেবে গত মরসুমে কাজ করেছিলেন মারিয়ো। সাংবাদিক বৈঠকে আলেয়ান্দ্রোর দোভাষীর কাজ করতেন তিনি। সেই মারিয়োই ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে চলে যান স্পেনে। চলতি মরসুমে তিনি আর কাজ করেননি কোলাডোদের ‘হেডস্যর’-এর সঙ্গে। ডার্বি ম্যাচে হারের পরে আচমকাই চাকরি ছেড়ে চলে যান আলেয়ান্দ্রো। পুরনো ক্লাবে হেড কোচ হয়ে ফিরছেন গত বারের সহকারী কোচ। কলকাতা ময়দানে কান পাতলে অবশ্য অন্য গল্প শোনা যায়। আলেয়ান্দ্রোর সঙ্গে বনিবনা না হওয়ায় চলে যেতে হয়েছিল মারিয়োকে। এনরিকেও সেই ঘটনারই ইঙ্গিত দিচ্ছেন। তাঁর সঙ্গে কথা বলে বোঝা যাচ্ছিল, এনরিকের ক্ষতে এখনও প্রলেপ পড়েনি।
আলেয়ান্দ্রোর উপর থেকে অভিমান না গেলেও, মারিয়ো সম্পর্কে গভীর শ্রদ্ধাশীল ইস্টবেঙ্গলের প্রাক্তন ফুটবলার। তিনি বলছিলেন, ‘‘মারিয়োই তো আসল লোক। ফুটবল সম্পর্কে ওর অগাধ জ্ঞান।’’ ইস্টবেঙ্গলের নতুন হেড কোচ গত মরসুমেও কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করেছেন এনরিকে-অ্যাকোস্টা-ডোভালদের সঙ্গে। খুব ভাল বন্ধন ছিল। এনরিকে বলছিলেন, ‘‘মারিয়োই তো দলটাকে তৈরি করেছিল। পিছন থেকে আসল কাজটা করত ও। সেই কারণেই মারিয়ো গ্রেট। আলেয়ান্দ্রো মোটেও গ্রেট নয়।’’ সোজাসাপটা বলছেন এনরিকে। গত মরসুমে নেরোকার বিরুদ্ধে জোড়া গোল দিয়ে ইস্টবেঙ্গলে আবির্ভাব হয়েছিল এনরিকের। মরসুমের মাঝপথে পাঁজরে চোট পাওয়ায় কলকাতা ছাড়তে হয় তাঁকে। চোট সারিয়ে ফেরার পরেও গোলের মধ্যেই ছিলেন মেক্সিকোর হয়ে ২০১৫ সালে কোপা আমেরিকায় প্রতিনিধিত্ব করা স্ট্রাইকার।
এখন দেশে থাকলেও তাঁর মন পড়ে কলকাতায়। পুরনো ক্লাবের সব খোঁজখবরই রাখেন তিনি। ইস্টবেঙ্গল ডাকলে ফের নেমে পড়তে চান এনরিকে। ক্লাবকে বিভিন্ন ভাবে সাহায্য করতে আগ্রহী তিনি। চলতি মরসুমের আই লিগে ৮ ম্যাচ থেকে ১১ পয়েন্ট ইস্টবেঙ্গলের। এই মুহূর্তে পয়েন্ট টেবলে পাঁচ নম্বরে। টানা তিন ম্যাচে হারের পরে চেন্নাই সিটি এফসি-কে মাটি ধরিয়েছেন মার্কোস-কোলাডোরা। ইস্টবেঙ্গলের ফিরে আসা দেখে আশায় বুক বাঁধছেন ভক্তরাও। এই সমর্থকরাই তো আলেয়ান্দ্রোর ‘দশ নম্বর’ জার্সিধারী। তাঁদের উদ্দেশে এনরিকে বলছেন, ‘‘ইস্টবেঙ্গল অনেক বড় ক্লাব। ভাল অবস্থায় দল যদি নাও থাকে, তবুও ক্লাবের পাশে থাকা উচিত সমর্থকদের।’’
আরও পড়ুন: উইনিং কম্বিনেশন ভেঙে দলে কি একটি বদল? দেখে নিন হ্যামিল্টনে ভারতের সম্ভাব্য একাদশ
আগামী মাসেই স্পেন থেকে কলকাতায় পা রাখছেন মারিয়ো। দলের রিমোট কন্ট্রোল হাতে তুলে নেবেন তিনি। ইস্টবেঙ্গলের অসংখ্য ভক্তদের মতো এনরিকেও তাকিয়ে থাকবেন মারিয়োর দিকে। ইস্টবেঙ্গলের জয় দেখলে অন্যদের মতো এনরিকে এসকুয়েদাও উচ্ছ্বসিত হবেন মনে মনে।