অরুণ লাল।
মরসুমের শুরু থেকেই বলেছেন, ‘‘ঈশান পোড়েল, আকাশ দীপ ও মুকেশ কুমার জাতীয় স্তরের সেরা তিন পেসার।’’ তাঁর কথা অনেকেই উড়িয়ে দিয়েছেন। আস্থা রাখেননি কেউ কেউ। রবিবাসরীয় ইডেনে উৎসবের আবহের মধ্যে তাঁর পেস ত্রয়ীই দেশের সেরা ব্যাটিং লাইন-আপকে তিন ঘণ্টায় চূর্ণ করে তা প্রমাণ করে দিল।
রবিবার সকালে ৩১২ রানে বাংলার ইনিংস শেষ হওয়ার পরে বোলারদের কী বার্তা দিয়েছিলেন বাংলার কোচ? দিনের শেষে অরুণ বলেন, ‘‘তিনজনকে ডেকে একটাই কথা বলি। আমার দলে শামিকেও চাই না, বুমরাকেও চাই না। তোমরাই দেশের সেরা বোলিং আক্রমণ। তোমরাই পারবে বাংলার মুখ উজ্জ্বল করতে। বিপক্ষে থাকুক কে এল রাহুল, মণীশ পাণ্ডে। তোমাদের হাতে থাকবে চকচকে নতুন বল। উড়িয়ে দাও বিপক্ষকে। দেখি, কে দেশের সেরা ব্যাটসম্যান।’’
কোচ যদি এতটা আস্থা রাখেন, মনোবল দ্বিগুণ হয়ে যায় ক্রিকেটারদের। অরুণ সেই চেষ্টাই করেছেন। যে বাংলা গত বছর একাধিক ক্যাচ ফেলে ম্যাচের পর ম্যাচ ব্যর্থ। এ দিনের পারফরম্যান্স দেখলে সেই ছবি একেবারে মেলানো যায় না। পাঁচটি ক্যাচ উঠেছে স্লিপে। একটিও পড়েনি। কী করে এই পরিবর্তন? অরুণের উত্তর, ‘‘মরসুম শুরু হওয়ার দু’মাস আগে থেকে শুরু হয় ফিটনেস ট্রেনিং। সেই ফলই এখন পাচ্ছে বাংলা। তখন অনেকেই বলেছিল, মরসুমের এত আগে থেকে ট্রেনিং শুরু হলে, ক্লান্ত হয়ে পড়বে ক্রিকেটারেরা। নিন্দুকদের মুখ এখন বন্ধ। এগিয়ে চলেছে বাংলা।’’
ঈশানের প্রশংসা করে অরুণ বলেন, ‘‘বাংলার এই দল থেকে ভারতীয় দলের হয়ে দু’জন খেলবে। প্রথমজন ঈশান। দ্বিতীয়জন আকাশ। শুধুমাত্র ফিটনেস বাড়িয়ে অন্য রূপ ধারণ করেছে ঈশান। আগে ওকে দেখে মনেই হত না পেসার। এখন ওর আগ্রাসনই বলে দেবে, ও কতটা আত্মবিশ্বাসী।’’
কোচের প্রশংসায় মুগ্ধ ঈশান। বলছিলেন, ‘‘লালজি (অরুণ)-র অবদান কখনও ভুলব না। মরসুমের শুরুতে দু’মাস যে কঠোর পরিশ্রম করেছি। তার ফলই পাচ্ছি।’’
প্রথম দিনের শেষে হোটেলে ফিরে অশোক ডিন্ডার সঙ্গে কথা হয় বাংলার পেসারের। দল থেকে বাদ পড়া অভিজ্ঞ সৈনিক তাঁর উত্তরসূরিকে কী বললেন? ঈশানের উত্তর, ‘‘সুদীপদার ফোন থেকে কথা হয় ডিন্ডাদার সঙ্গে। আমাকে নির্দেশ দেয়, এক লাইন বেঁধে সমানে একই জায়গায় বল ফেলার। ডিন্ডাদার অভিজ্ঞতা আমাদের চেয়ে অনেক বেশি। ইডেনে প্রচুর ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা আছে। বল করার সময় ডিন্ডাদার সেই নির্দেশ কানে বাজছিল। আমার সাফল্যের সেটাও অন্যতম কারণ।’’
উইকেট পাওয়ার পরে বেশ কয়েকটি ভঙ্গিতে উৎসব পালন করেন ঈশান। কখনও দুই হাত কোমরের দুই পাশে টেনে নামিয়ে নেন। কখনও দু’কানে আঙুল দেখিয়ে অদ্ভুত ভঙ্গি করেন। এই উৎসবের রহস্য কী? ঈশানের উত্তর, ‘‘কখনও রবের্তো ফির্মিনোর উৎসব করেছি। কখনও রাহুলের উৎসব করেছি। একটি করে উইকেট পাব। নতুন ভঙ্গির উৎসব দেখতে পাবেন।’’