ফাইল চিত্র
আইএসএল ফাইনাল শুরু হওয়ার আগে দু’দলের ফুটবলারদের হাত ধরে মাঠে নামার কথা ছিল বাইশ জন খুদের। সপ্তাহ দু’য়েক ধরে নিয়মিত মহড়াও দিয়েছে তারা। কিন্তু করোনা-আতঙ্কে এখন শুধুই স্বপ্নভঙ্গের যন্ত্রণা।
এটিকে বনাম চেন্নাইয়িন এফসি আইএসএল ফাইনাল যে মারগাওয়ের দর্শক শূন্য ফতোরদা স্টেডিয়ামে হবে, চব্বিশ ঘণ্টা আগেই জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল। শুক্রবার বাতিল করা হল টানেল থেকে ফুটবলারদের হাত ধরে শিশুদের মাঠে যাওয়ার পরিকল্পনা। আইএসএলের এক কর্তা বলছিলেন, ‘‘যে শিশুদের ফুটবলারদের হাত ধরে মাঠে নামার কথা ছিল, তাদের কারও বয়সই দশ বছরের বেশি নয়। ওদের পক্ষে একা মাঠে আসা সম্ভব নয়। ফলে অভিভাবকেরাও আসবেন। এখন আমরা সেই ঝুঁকি নিতে পারব না।’’ এখানেই শেষ নয়। আইএসএলের সমাপ্তি অনুষ্ঠানও বাতিল করে দেওয়া হয়েছে।
এটিকে-কে সমর্থন করতে কয়েকশো সমর্থকের গোয়া আসার কথা ছিল। শুক্রবার বিমানবন্দর থেকে শোভাযাত্রা করে রয় কৃষ্ণ, ডেভিড উইলিয়ামসদের হোটেলে পৌঁছে দেওয়ার পরিকল্পাও ছিল তাঁদের। করোনা-আতঙ্কে সব ভেস্তে গিয়েছে।
গোয়ায় এমনিতেই সারা বছর পর্যটকদের ভিড় থাকে। শুক্র ও শনিবার তা কয়েক গুণ বেড়ে যায়। এ বার অন্য ছবি। খোঁজ নিয়ে জানা গেল, শুক্রবার পর্যন্ত জ্বর নিয়ে গোয়ার হাসপাতালে ডাক্তার দেখাতে গিয়েছেন ১৬জন। যদিও কারও শরীরেই করোনাভাইরাসের উপস্থিতি পাওয়া যায়নি। তাতে অবশ্য আতঙ্ক কমছে না। এক ধাক্কায় গোয়া-গামী বিমানের যাত্রী সংখ্যা অর্ধেকেরও বেশি কমে গিয়েছে। বেশির ভাগ হোটেলেরই অধিকাংশ ঘর খালি। শুধু তাই নয়। হোটেলে ঢোকার আগে প্রত্যেককে ইলেকট্রনিক থার্মোমিটার দিয়ে পরীক্ষা করছেন হোটেল কর্মীরা। শরীরের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি হলেই প্রবেশ নিষেধ। হোটেলের কর্মীদের ক্ষেত্রেও এক নিয়ম। একই ছবি সমুদ্র সৈকতে। ‘শ্যাক’ (সমুদ্র সৈকতের রেস্তরাঁ) ফাঁকা।
করোনা-আতঙ্ক প্রভাব ফেলেছে দুই শিবিরেও। সকলেই ‘মাস্ক’ পরে গোয়া এসেছে। স্যানিটাইজার নিয়ে ঘুরছেন। শুক্রবার হোটেলে গাড়ি থেকে নেমেই পকেট থেকে স্যানিটাইজার বার করে প্রথমে নিজের হাতে মাখলেন আন্তোনিয়ো লোপেস হাবাস। পরে তা এগিয়ে দিলেন সঙ্গে আসা রয় কৃষ্ণ ও সহকারীকে। শুধু তাই নয়। যাঁর সঙ্গেই দেখা হচ্ছে, স্যানিটাইজার এগিয়ে দিচ্ছেন এটিকে কোচ। সাংবাদিক বৈঠকে হাবাস বললেন, ‘‘মানুষের জীবনের চেয়ে ফুটবল মূল্যবান নয়। স্টেডিয়াম ভর্তি দর্শকের সামনে খেলার আনন্দই আলাদা। কিন্তু গোটা বিশ্বে যে ভাবে ছড়িয়ে পড়ছে করোনাভাইরাস, তাতে ঝুঁকি নেওয়া সম্ভব নয়।’’ কোচের পাশে বসে রয় কৃষ্ণও বলে দিলেন, ‘‘মানুষের জীবন সবার আগে।’’