প্রতীক্ষা: বছরের শেষে যে লড়াই দেখার জন্য আগ্রহ তুঙ্গে। বিরাট কোহালি বনাম প্যাট কামিন্স। ফাইল চিত্র
এই মুহূর্তে তিনি বিশ্বের এক নম্বর টেস্ট বোলার। আইপিএলের সব চেয়ে দামি বিদেশি ক্রিকেটার, যাঁকে নিলামে কিনে নিয়েছে কলকাতা নাইট রাইডার্স। বছরের শেষে ভারতের বিরুদ্ধে সিরিজকে কী ভাবে দেখছেন? কেকেআর ভক্তদের জন্যই বা তাঁর বার্তা কী? সব নিয়ে মুখ খুললেন অস্ট্রেলিয়ার অন্যতম সহ-অধিনায়ক প্যাট কামিন্স। আনন্দবাজারকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে।
প্রশ্ন: ইংল্যান্ড-ওয়েস্ট ইন্ডিজের মধ্যে টেস্ট সিরিজটা নিশ্চয়ই দেখছেন। আপনার কী মনে হয়, থুতু ব্যবহার না করায় সুইং বা রিভার্স সুইং কম হচ্ছে?
কামিন্স: আমি এত দূরে বসে একটা কথাই বলতে পারি। ব্যাট আর বলের মধ্যে দারুণ একটা লড়াই কিন্তু দেখতে পাচ্ছি। আমার কাছে এর থেকে বড় পাওনা আর কিছু হতে পারে না।
প্র: আপনারা প্র্যাক্টিস শুরু করেছেন। থুতু ব্যবহার না করে বলের পালিশ ঠিক রাখা কতটা কঠিন? আপনার কি মনে হয় অন্য কোনও ভাবে এই পালিশটা ঠিক রাখা যায়?
কামিন্স: আমরা জানি, বর্তমান পরিস্থিতিতে বাধ্য হয়ে এই নিয়মটা তৈরি করতে হয়েছে। এই নিয়ম এখন সবাইকেই মেনে চলতে হবে। এ বার এই নিয়মের মধ্যে থেকেও কী ভাবে বলের পালিশ ঠিক রাখা যায়, তা বার করার জন্য সবাইকে একটু উদ্ভাবনী শক্তির পরিচয় দিতে হবে। এখন পর্যন্ত দেখা যাচ্ছে, ঘামের সাহায্যে বলের পালিশ ঠিক রাখাটাই সব চেয়ে সহজ রাস্তা। তবে এটা বলব, দিনের শেষে সবাইকে একই নিয়ম মেনে চলতে হবে। তাই এখন আমাদের অপেক্ষা করে দেখতে হবে পরিস্থিতি কী দাঁড়ায়।
প্র: অনেক বিশেষজ্ঞই বলছেন, এত দিন ম্যাচ প্র্যাক্টিসের বাইরে থাকার পরে ছন্দে ফিরতে সব চেয়ে সমস্যায় পড়বেন ফাস্ট বোলাররা। কারণ শুধু ফিজিক্যাল ট্রেনিং করে একজন ফাস্ট বোলার ছন্দে থাকতে পারেন না। আপনি কী বলবেন?
কামিন্স: আমার তো সে রকম কিছু মনে হয় না। অন্তত আমার ক্ষেত্রে তো নয়ই। আমরা ইতিমধ্যেই বোলিং শুরু করে দিয়েছি। মরসুম শুরু হওয়ার আগে যেটা দরকার, সেটা হল, কয়েকটা প্রস্তুতি ম্যাচ। ও রকম কয়েকটা ম্যাচে খেলতে পারলেই ছন্দে ফিরতে সমস্যা হবে না। এই নিয়ে একদমই মাথা ঘামাচ্ছি না। আমরা পুরো তৈরি থাকব।
প্র: আপনার সঙ্গে ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের দ্বৈরথ সব সময়ই আলাদা একটা মাত্রা পায়। কোন ভারতীয় ব্যাটসম্যানকে বল করাটা সব চেয়ে কঠিন?
কামিন্স: শেষ বার অস্ট্রেলিয়া সফরে চেতেশ্বর পুজারা অসাধারণ খেলে গিয়েছিল। ওকে বল করাটা সব সময়ই একটা বড় চ্যালেঞ্জ। আর তা ছাড়া বিরাট কোহালি তো আছেই।
প্র: ভারতের এই ব্যাটিং সম্পর্কে আপনি কী বলবেন?
কামিন্স: দু’জনের কথা তো বললামই। কিন্তু এই ভাবে একজন-দু’জনকে আলাদা করে বেছে নিয়ে ভারতের ব্যাটিং শক্তি বিচার করা যায় না। নিজের দিনে ভারতের প্রত্যেক ব্যাটসম্যানের দক্ষতা আছে বড় রান করার। আমাদের কাজটা হবে, ভারতের সব ব্যাটসম্যানের উপরে চাপ তৈরি করা।
প্র: অনেকেই বলে থাকেন, কোহালিকে স্লেজ করলে ওঁর সেরা খেলাটা বেরিয়ে আসে। আপনি কী বলবেন? কোহালিকে স্লেজ করা ঠিক হবে নাকি তাঁকে একা ছেড়ে দেওয়াটাই ভাল?
কামিন্স: খুব ভাল প্রশ্ন। বিরাট এত ভাল ক্রিকেটার যে ওর খুঁত খুঁজে পাওয়া ভীষণই কঠিন কাজ। কী করলে বিরাটের থেকে এক পা এগিয়ে থাকা যাবে, বলা মুস্কিল। ও সব সময় একটা লড়াইয়ের মধ্যে থাকতে চায়। লড়াইয়ের এই আগুন, লড়াইয়ের এই উত্তাপ বিরাটের মধ্যে থেকে সেরাটা বার করে আনে।
প্র: গত বার ভারতের বিরুদ্ধে আপনাদের পুরো শক্তির দল ছিল না। এ বার আছে। সিরিজ নিয়ে আপনার ভবিষ্যদ্বাণী কী?
কামিন্স: এইটুকু বলতে পারি, দারুণ একটা লড়াই হবে সিরিজে।
প্র: অনেকে বলছে, অ্যাশেজের চেয়েও আকর্ষণীয় হয়ে দাঁড়িয়েছে ভারত-অস্ট্রেলিয়ার দ্বৈরথ। আপনি কী বলবেন?
কামিন্স: এই মুহূর্তে বিশ্ব ক্রিকেটে ভারত বনাম অস্ট্রেলিয়া আর অ্যাশেজ— এর চেয়ে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা আর কোনও সিরিজে হয় না। আমরা সৌভাগ্যবান যে, ঘরের মাঠে পরপর এ রকম দুটো সিরিজ খেলতে পারব।
প্র: টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ পিছিয়ে গিয়েছে এক বছর। ধরেই নেওয়া হচ্ছে এ বার আইপিএল হবে। আপনি কি আইপিএলের জন্য তৈরি?
কামিন্স: আমার মনে হয়, এখনও আইপিএল নিয়ে সব কিছু চূড়ান্ত হয়ে যায়নি। অনেক ব্যাপারেই সিদ্ধান্ত নেওয়ার আছে। তবে অবশ্যই আমি আইপিএল খেলতে চাই। আমার কাছে আইপিএল হল বিশ্বের সেরা সাদা বলের প্রতিযোগিতা। যেখানে বিশ্বের সেরা ক্রিকেটাররা খেলে। এ বার আইপিএলে খেলার সুযোগ পেলে সেটা দারুণ ব্যাপার হবে।
প্র: আপনি আবার কলকাতা নাইট রাইডার্সে ফিরে এসেছেন। কেকেআরের সমর্থকদের জন্য কী বার্তা দেবেন?
কামিন্স: কেকেআরের জার্সি পরে আবার মাঠে নামতে তর সইছে না। এই কেকেআরের হয়েই আমি আইপিএলে খেলা শুরু করি। আমাদের এ বারের দলটা দেখেছি। আমরা দারুণ শক্তিশালী। অনেক দুর্দান্ত সব ক্রিকেটার আছে। দলের গভীরতাও খুব ভাল। আমি আত্মবিশ্বাসী, আইপিএল হলে আমরা দারুণ কিছু করে দেখাব।