রায়: ঋদ্ধিকে ভোট কিরমানির।
প্রশ্ন: আধুনিক ক্রিকেটে দেখা যাচ্ছে জাতীয় দলে থাকতে হলে উইকেটকিপারদের খুব ভাল ব্যাটসম্যানও হতে হয়।
কিরমানি: আধুনিক ক্রিকেটে কেন, আমাদের সময়ের ক্রিকেটে কি উইকেটকিপারদের ব্যাট করতে হতো না? আমি কি নিয়মিত নেটে ব্যাট করতাম না? ফারুখ ইঞ্জিনিয়ার কি ব্যাটিং জানতেন না?
প্র: তা হলে এখন উইকেটকিপারদের ব্যাটিং দক্ষতার ওপর এত গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে কেন?
কিরমানি: আগে টপ-মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যানরাই বেশির ভাগ রানটা তুলে দিত। ব্যাটসম্যানদের ধারাবাহিকতাও অনেক ভাল ছিল। এখন সে সব দিন আর নেই। তাই সাত-আট নম্বর ব্যাটসম্যানদের কাছ থেকেও রান প্রয়োজন। সে জন্যই উইকেটকিপারদের ওপর প্রত্যাশা এখন বেশি।
প্র: সে দিক থেকে কি ঋদ্ধিমানই এখন ভারতের সেরা কিপার-ব্যাটসম্যান?
কিরমানি: নিশ্চয়ই তাই। না হলে কখনও টেস্ট দলের অটোমেটিক চয়েস হয়?
প্র: ঋদ্ধির কিপিংয়ের কোন ব্যাপারটা ওকে সবার চেয়ে এগিয়ে রেখেছে?
কিরমানি: ওর ‘রিঅ্যাকশন টাইম’ আর ফিটনেস, দু’টোই অসাধারণ। দু’টোরই খুব দ্রুত উন্নতি হচ্ছে দেখছি।
প্র: এমএস ধোনির সঙ্গে ঋদ্ধির কোনও মিল খুঁজে পান?
কিরমানি: যে দু’টো ব্যাপার বললাম, সে দু’টো ব্যাপার ধোনিরও খুব ভাল ছিল। ধোনির আর যেটা আছে, সেটা হল ঠান্ডা মাথাটা। মাথায় অনেক কিছু চললেও কখনও মেজাজ হারায় না। উপস্থিত বুদ্ধিও হারায় না। ধোনির এই মাথাটা যে দিন পাবে, সে দিন সাহাকেই সেরা বলবে সবাই। সে জন্য ওকে এখনও অনেক দিন ভারতীয় দলে খেলে অভিজ্ঞতাটা বাড়াতে হবে।
প্র: রাঁচী টেস্টে যে ব্যাটিংটা করলেন ঋদ্ধিমান, তার পর কি বলবেন, ব্যাটিংয়েও সমান উন্নতি করেছেন?
কিরমানি: নিশ্চয়ই করেছে। তবে ব্যাটিং টেকনিকের থেকেও ওর বেশি উন্নতি হয়েছে মানসিক শক্তিতে, আত্মবিশ্বাসে। এটাও কিন্তু খুব গুরুত্বপূর্ণ। এই শক্তিটাই ওকে দীর্ঘদিন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে টিকে থাকতে সাহায্য করবে। তবে তার জন্য অধিনায়ক, নির্বাচক ও বোর্ডকে পাশে পেতে হবে ঋদ্ধিকে।
আরও পড়ুন: পূজারা থাকা মানে একটা সেনাবাহিনী থাকা
প্র: আপনি নির্বাচক প্রধান থাকার সময়েই তো ধোনিকে ভারতীয় দলে নেওয়ার ভাবনা শুরু হয়। ধোনির আর কত দিন ভারতীয় দলে থাকা উচিত?
কিরমানি: এটা সম্পুর্ণ ওর ব্যাপার। নিজের ফিটনেস, মানসিকতা ধোনি ছাড়া আর কেউ ভাল বুঝতে পারবে না। তবে শুনেছি ওর অনেক চোট আছে, যেগুলো ওকে কিপিং করতে গিয়ে মাঝে মাঝেই ভোগায়। যত বয়স বাড়বে, এগুলো ওকে তত বেশি ভোগাবে। আমার মনে হয় কিপার-ব্যাটসম্যান হিসেবে ওর পরের বিশ্বকাপ পর্যন্ত খেলা কঠিন। বিশ্বকাপ খেলতে হলে ধোনিকে শুধু ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলতে হবে। নির্বাচকদেরই এই ব্যাপারে কথা বলতে হবে ওর সঙ্গে। কিপিংয়ের চাপটা ওর উপর থেকে সরিয়ে নিলে মনে হয় শুধু ব্যাটসম্যান হিসেবে পরের বিশ্বকাপ পর্যন্ত খেলে দিতেও পারে ধোনি।