প্রতিপক্ষ: দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটিং কোচ অমল মুজ়ুমদার। ফাইল চিত্র
ভারতীয় দলের ব্যাটিং কোচের পদে আবেদন করেছিলেন অমল মুজ়ুমদার। কিন্তু তাঁর আবেদন গ্রাহ্য হয়নি। দায়িত্ব না পেয়ে বিমর্ষ হয়ে পড়েছিলেন অমল। গত সপ্তাহে একটি ফোন তাঁর সব গ্লানি মিটিয়ে দেয়। ফোনটি ছিল দক্ষিণ আফ্রিকা ক্রিকেট বোর্ডের ভারপ্রাপ্ত ডিরেক্টর কোরি ফান জ়াইলের।
অমলকে তিনি ফোনে কী বলেছিলেন? সোমবার মুম্বই থেকে ফোনে প্রাক্তন ব্যাটসম্যান আনন্দবাজারকে বলেন, ‘‘আমাকে জিজ্ঞাসা করা হয়, টেস্ট সিরিজের আগে দক্ষিণ আফ্রিকা দলকে তৈরি করতে পারব কি না। এই প্রস্তাবে না করতে পারিনি। সব সময়েই চেয়েছি ব্যাটসম্যানদের নিয়ে কাজ করতে। ফ্যাফ ডুপ্লেসি, কুইন্টন ডি’ককদের ভারতীয় পরিবেশের জন্য তৈরি করে দেওয়ার সুযোগ হারাতে চাইনি।’’
আন্তর্জাতিক ক্রিকেট না খেললেও প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ১৭১টি ম্যাচে ১১,১৬৭ রান করার অভিজ্ঞতা রয়েছে মুম্বই ব্যাটসম্যানের। ভারতীয় পরিবেশে এত রান করার পাশাপাশি বিরাট কোহালির দল সম্পর্কে তাঁর যথেষ্ট ধারণা রয়েছে। অমল জানেন, দক্ষিণ আফ্রিকার সব চেয়ে বড় ত্রাস হতে পারেন যশপ্রীত বুমরা। সেই বুমরাকে কী ভাবে সামলানো যায়, সেই ছক কষতে শুরু করেছেন সোমবার থেকেই। অমল বলছিলেন, ‘‘বিশ্ব ক্রিকেটের ত্রাস এখন বুমরা। ভারতকে হারাতে হলে বুমরার ছন্দ নষ্ট করতে হবে। ওর অদ্ভুত অ্যাকশনের জন্য একটি অ্যাঙ্গল তৈরি হয়। সেটা বুঝতে পারলেই অসুবিধা হবে না। কিন্তু তা কী ভাবে সম্ভব, সেটা জিজ্ঞাসা করবেন না!’’ আরও বলেন, ‘‘শুধু বুমরাই নয়, মহম্মদ শামি, ইশান্ত শর্মাকেও সামলানো কঠিন। আগে স্পিনারদের সামলানোর জন্য বিশেষ প্রস্তুতি নিয়ে এ দেশে টেস্ট খেলতে আসত বাকিরা। এ বার থেকে পেসার সামলানোর ক্লাসও করতে হবে।’’
কখনও আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে খেলার সুযোগ পাননি তিনি। অমলের গলায় যেন হতাশার সুর, ‘‘এমন একটা দায়িত্ব পেয়ে খুশি। রঞ্জি ট্রফিতে রান সংগ্রাহকদের তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে থেকেও ভারতীয় দলে খেলার সুযোগ পাইনি। বলতে পারেন, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে কোচ হিসেবেই অভিষেক হল। তাই আরও ভাল লাগছে।’’
কিন্তু আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের অভিজ্ঞতা না থাকায় অসুবিধা হবে না? অমলের সাফ উত্তর, ‘‘অসুবিধা যে হবে না, সেটাই আমি প্রমাণ করতে চাই। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট না খেললে আন্তর্জাতিক দলের সঙ্গে কাজ করা যায় না, এই ধারণা বদলানোর সময় এসেছে। এটাই আমার চ্যালেঞ্জ।’’ আন্তর্জাতিক ক্রিকেট না খেলেও যে কোচিং করানো যায় তা ইতিমধ্যেই প্রমাণ করেছেন ইংল্যান্ড কোচ ট্রেভর বেলিস। আন্তর্জাতিক মানের একটি ম্যাচেও অভিজ্ঞতা না থাকা সত্ত্বেও তিনি ইংল্যান্ডকে বিশ্বকাপ তুলে দিয়েছেন। তেমনই জন বুকানন, কখনও আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলেননি। তবুও অস্ট্রেলিয়াকে দু’টি বিশ্বকাপ দিয়েছেন। অমলের সামনেও তাঁরাই অনুপ্রেরণা।
মুম্বইয়ের প্রাক্তন ব্যাটসম্যানের ধারণা, ডুপ্লেসিদের তৈরি করতে তাঁর খুব একটা সমস্যা হবে না। ১২ মাসের মধ্যে দু’মাস এ দেশেই আইপিএল খেলেন ফ্যাফরা। কিন্তু এডেন মার্করাম, টেম্বা বাভুমাদের তৈরি করাই চ্যালেঞ্জ। অমলের কথায়, ‘‘মার্করামদের ভারতে খেলার অভিজ্ঞতা নেই। ওদের তৈরি করাই প্রধান লক্ষ্য। আশা করি, খুব একটা খারাপ ফল হবে না।’’