সফল: দুই সতীর্থের সঙ্গে বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে পদক জয়ী বক্সার অমিত (বাঁ দিক থেকে দ্বিতীয়) ও মণীশ। পিটিআই
বিশ্ব বক্সিং চ্যাম্পিয়নশিপে ইতিহাস সৃষ্টি করে আসা বক্সার অমিত পাঙ্ঘাল মনে করেন, তাঁকে এখনও অনেক কঠিন লড়াই লড়তে হবে। তবে সেই লড়াই লড়ার জন্য তিনি তৈরি।
বিশ্ব বক্সিংয়ে রুপো জিতে দেশে ফেরা অমিত সোমবার বলেছেন, ‘‘এই পদকটা জিততে পেরে দারুণ লাগছে। আমি আত্মবিশ্বাসী ছিলাম, খালি হাতে দেশে ফিরব না। কারণ সে ভাবেই প্রস্তুতি নিয়েছিলাম। এও জানতাম, বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে কোনও ভারতীয় বক্সার আগে ব্রোঞ্জ পদকের বেশি জিততে পারেনি। তাই চেয়েছিলাম, পদকের রংটা বদলে দিতে।’’
ভারতের ২৩ বছর বয়সি এই বক্সার বিশ্বমঞ্চে পদক পেলেও এখনও টোকিয়ো অলিম্পিক্সের যোগ্যতা অর্জন করতে পারেননি। তার কারণ, আন্তর্জাতিক বক্সিং অ্যাসোসিয়েশন অলিম্পিক্সের কোনও যোগ্যতা অর্জন প্রতিযোগিতা করতে পারবে না বলে আগেই জানিয়ে দিয়েছিল আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটি (আইওসি)। অমিত বলছেন, ‘‘বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপকে যদি অলিম্পিক কোয়ালিফায়ার হিসেবে ধরা হত, তা হলে আমাদের তিন-চার জন বক্সার ইতিমধ্যেই টোকিয়োর ছাড়পত্র পেয়ে যেত। সেটা একটা দারুণ কৃতিত্বের ব্যাপার হত।’’
অমিতের পরের লক্ষ্য এখন ফেব্রুয়ারিতে চিনে অনুষ্ঠেয় অলিম্পিক কোয়ালিফায়ার। যেখানে এশিয়া/ওসেনিয়া পর্বের লড়াই হবে। তার পরে থাকবে ওয়ার্ল্ড কোয়ালিফায়ার পর্ব। ৫২ কেজি বিভাগে সাফল্য পাওয়া অমিত বলেছেন, ‘‘আমরা যারা কম ওজন বিভাগে লড়ি, তাদের কাছে এশিয়ান কোয়ালিফায়ার্সের মান বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপের মতোই। বেশির ভাগ এশীয় বক্সারই তো অলিম্পিক্স আর বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে পদক পেয়ে থাকে। তাই লড়াইটা সহজ হবে না। তবে ওয়ার্ল্ড কোয়ালিফায়ার্সে আরও লড়াই হবে, কারণ ওখানে ইউরোপ আর আমেরিকার বক্সাররা লড়বে।’’
৪৯ কেজি বিভাগে সফল হওয়ার পরে ৫২ কেজি বিভাগে এখন লড়ছেন অমিত। তিনি জানিয়েছেন, শক্তি এবং দম বাড়ানোর উপরে তিনি বিশেষ জোর দেবেন। অমিতের মন্তব্য, ‘‘আমাকে এখন দারুণ পরিশ্রম করতে হবে। যে জিনিসগুলো করে উপকার পাচ্ছি, সেগুলো করে যেতে চাই। পাশাপাশি নিজের দুর্বলতাগুলোও ঠিক করে নেব। টোকিয়োতেও সফল হতে চাই আমি।’’
গত কয়েক বছরে ভারতীয় বক্সিংয়ের মুখ হয়ে উঠেছেন অমিত। এশীয় থেকে বিশ্বমঞ্চ— সব জায়গায় দাপট দেখিয়েছেন তিনি। গত বছর এশিয়ান গেমস এবং এশীয় বক্সিংয়ে সোনা জেতার পরে বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে রুপো। ‘‘আমি কখনও ভাবিনি কয়েক বছরের মধ্যে এই ভাবে একের পর এক পদক জিততে পারব। ব্যাপারটা খুব সহজ ছিল না। এর আগেও আমি বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে নেমেছিলাম। কিন্তু পদক পাইনি। পদক হারানোর শোকে কান্নাকাটিও করেছিলাম।’’ শুরুর দিককার দিনগুলো নিয়ে অমিত বলেছেন, ‘‘আমি প্রথম দিকে কিছুতেই নিজের পারফরম্যান্স ভাল করতে পারছিলাম না। ছবিটা বদলাতে থাকে এশীয় চ্যাম্পিয়নশিপে প্রথম ব্রোঞ্জ জেতার পরে। ওর পরে আমার আত্মবিশ্বাস বেড়ে যায়। আমার খেলাতেও বদল আসে, জীবনেও।’’
এ দিন ক্রীড়ামন্ত্রী কিরেন রিজিজু সংবর্ধিত করেন অমিত ও আর এক পদকজয়ী মণীশ কৌশিককে। বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে সাফল্যের পুরস্কার হিসেবে অমিতকে ১৪ লাখ টাকা ও ব্রোঞ্জজয়ী মণীশকে আট লাখ টাকা দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন তিনি।