কে এল রাহুল।—ছবি এএফপি।
ওয়াংখেড়ের প্রথম ম্যাচ হারের পরে নানা প্রশ্ন উঠেছিল। কিন্তু পরের দুটো ম্যাচ এবং সিরিজ জিতে বিরাট কোহালিরা দেখিয়ে দিল, কেন তারা অপ্রতিরোধ্য। এই দলটা এ বার নিউজ়িল্যান্ডের বিমানে উঠবে ভরপুর আত্মবিশ্বাস নিয়ে।
চিন্নাস্বামীতে ২৮৭ রানের লক্ষ্যটা যে বিশাল, তা বলা যাবে না। কিন্তু ভারত তো ব্যাট করতে নামার আগেই বড় ধাক্কা খেয়ে যায়। চোটের জন্য ছিটকে যায় শিখর ধওয়ন। যার মানে হল, শূন্য রানে এক উইকেট হারিয়ে নামতে হয়েছে ভারতকে। ১৫ বল বাকি থাকতে, সাত উইকেটে ম্যাচ জিতে ভারত বুঝিয়ে দিল, কতটা দাপট ছিল তাদের।
রোহিত আর বিরাট যখন একসঙ্গে খেলে, তখন বিপক্ষের বিশেষ কিছু করার থাকে না। এক জন সাদা বলের ক্রিকেটে অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান। অন্য জন আধুনিক ক্রিকেটের সেরা ‘চেজমাস্টার’। চিন্নাস্বামী তো কোহালির ঘরের মাঠ। ও এখানে নিখুঁত ভাবে রান তাড়া করবে না তো কে করবে।
অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটিংয়ের সময়ও আমরা খুব ভাল একটা জুটি হতে দেখেছিলাম। স্টিভ স্মিথ আর মার্নাস লাবুশেনের মধ্যে। দু’জনে মিলে ১২৭ রান যোগ করে। কিন্তু রোহিত আর কোহালির ১৩৭ রানের জুটির পাশে সেটা ম্লান হয়ে যায়। ষষ্ঠ ওভারে প্যাট কামিন্সের শেষ বলটা ফ্লিক করে মিডউইকেট গ্যালারিতে পাঠিয়ে রোহিত ছন্দে থাকার ইঙ্গিত দিয়েছিল। আর এক বার ছন্দ পেয়ে যাওয়া রোহিত কতটা ভয়ঙ্কর, তা আরও এক বার বোঝা গেল।
কোহালি শুরুটা ধীরে সুস্থে করল। ও জানত, তাড়াহুড়োর প্রয়োজন নেই। ধীরে ধীরে খেলাটা ছোট করে নিজেদের দখলে এনেছে। ওভার কমার সঙ্গে সঙ্গে আস্কিং রেটও কমতে শুরু করে। একটাই আক্ষেপ, কোহালি সেঞ্চুরিটা পেল না। তবে ম্যাচের সেরা শটটা পাওয়া গেল ওর ব্যাট থেকে। মিচেল স্টার্ককে মারা একটা কভার ড্রাইভ।
পিছিয়ে থেকে অস্ট্রেলিয়ার মতো দলের বিরুদ্ধে সিরিজ জয়ের পাশাপাশি ভারতের আরও কিছু প্রাপ্তি থাকল। যেমন, যশপ্রীত বুমরার প্রত্যাবর্তন। রাজকোট এবং চিন্নাস্বামীতে ভাল বল করে গেল। বিশেষ করে নতুন বলে। মহম্মদ শামিও সাদা বলের ক্রিকেটে ছাপ রাখল। দিনের সেরা বলটা বেরোল ওর হাত থেকেই। রিভার্স সুইং ইয়র্কারে প্যাট কামিন্সের স্টাম্প ছিটকে দিল। রিভার্স সুইংয়ের জন্য কিন্তু বলটাকে ‘বানাতে’ হয়। মিডঅফ, মিডঅনের ফিল্ডাররা বলের এক দিকের পালিশ ধরে রেখে দেয়। সে ক্ষেত্রে বল রিভার্স সুইং করে।
ভারতের সেরা প্রাপ্তি ‘অলরাউন্ডার’ কে এল রাহুল। ও হল ঠিক ‘স্টেপনি’র মতো। যখন প্রয়োজন সেখানে কাজে লাগানো যায়। এ দিনের কথাই ধরা যাক। চোট পেয়ে ধওয়ন বাইরে। রাহুল না থাকলে নতুন কাউকে দিয়ে ওপেন করাতে হত। ওপেনে, মিডল অর্ডারে এবং ফিনিশারের ভূমিকায় দারুণ মানিয়ে নিয়েছে। কিপিংটাও ভাল করছে। ২-১ সিরিজ জয়ে রাহুলই তাই সব চেয়ে বড় প্রাপ্তি হয়ে থাকবে।