আলেসান্দ্রো মেনেন্দেস গার্সিয়া
গোকুলম এফসির বিরুদ্ধে ম্যাচের আটচল্লিশ ঘণ্টা আগে আলেসান্দ্রো মেনেন্দেস গার্সিয়া কি আদৌ শান্তিতে ঘুমতে পারবেন? ইস্টবেঙ্গল কোচের উদ্বেগের কারণ একাধিক।
এক) রক্ষণ ও মাঝমাঠের ভরসা মার্তি ক্রেসপি এবং কাশিম আইদারা তিনটি করে হলুদ কার্ড দেখেছেন। বুধবার গোকুলমের বিরুদ্ধে তাঁরা একটি করে কার্ড দেখলেই আগামী রবিবার মোহনবাগানের বিরুদ্ধে আই লিগের ডার্বিতে খেলতে পারবেন না। দুই) রক্ষণের আর এক ভরসা বোরখা গোমেস পেরেস তাঁর শিশু সন্তানের অসুস্থার খবর পেয়ে স্পেনে ফিরে গিয়েছেন। তিন) এই গোকুলমের কাছে হেরেই ডুরান্ড কাপ সেমিফাইনাল থেকে ছিটকে গিয়েছিল ইস্টবেঙ্গল। চার) মার্কোস খিমেনেস দে লা এসপারা মার্তিনদের গোল নষ্টের প্রবণতা।
আই লিগ টেবলে এই মুহূর্তে অষ্টম স্থানে থাকলেও সোমবার কলকাতায় বসেই গোকুলমের স্পেনীয় কোচ সান্তিয়াগো ভালেরা ডুরান্ড কাপ সেমিফাইনালের পুনরাবৃত্তি ঘটানোর হুঙ্কার দিয়েছেন। বলেছেন, ‘‘আলেসান্দ্রো দারুণ অভিজ্ঞ কোচ। ওদের স্পেনীয় ফুটবলারেরাও দারুণ। আমাদের দলও কিন্তু শক্তিশালী। আমরা কী করতে পারি, তা ডুরান্ড কাপেই দেখিয়েছি।’’
এই পরিস্থিতিতে ইস্টবেঙ্গলের স্পেনীয় কোচ ডার্বি নয়, গোকুলম ম্যাচ নিয়েই শুধু ভাবতে চান। সোমবার সন্ধ্যায় রাজারহাটের একটি পাঁচতারা হোটেলে সাংবাদিক বৈঠকে আলেসান্দ্রো বললেন, ‘‘এই মুহূর্তে আমি শুধু গোকলুম ম্যাচেই মনঃসংযোগ করছি। ডার্বি নিয়ে একেবারেই ভাবছি না।’’
কিন্তু ক্রেসপি ও কাশিম আর একটা কার্ড দেখলেই তো ডার্বি থেকে ছিটকে যাবেন? স্পেনীয় কোচের ব্যাখ্যা, ‘‘এই ব্যপারটা অবশ্যই আমাকে ভাবাচ্ছে। কিন্তু সমস্যার সমাধান নিজেদেরই করতে হবে।’’ এর পরেই যোগ করলেন, ‘‘এই ধরনের পরিস্থিতি হয়তো আমরা এড়াতেও পারতাম।’’ আর গোল নষ্টের প্রবণতা? লাল-হলুদ কোচ বলছেন, ‘‘আমার কাছে বেশি গুরুত্বপূর্ণ গোলের সুযোগ ফুটবলারেরা তৈরি করতে পারছে কি না।’’ তিনি যোগ করেন, ‘‘প্রচুর সুযোগ তৈরি করেও ইপিএলে টটেনহ্যাম গোল করতে পারেনি। লিভারপুল সুযোগের সদ্ব্যবহার করেছে। তাই জিতেছে’’
সোমবার সন্ধ্যায় যখন আলেসান্দ্রো সাংবাদিক বৈঠক করছেন, তখন স্পেনে অস্ত্রোপচার চলছে লাল-হলুদ ডিফেন্ডারের শিশু সন্তানের। উদ্বিগ্ন আলেসান্দ্রো বললেন, ‘‘বোরখা এবং ওর স্ত্রীর সঙ্গে সব সময় যোগাযোগ রাখছি। চেষ্টা করছি, ওদের সাহস জোগানোর।’’ ক্রেসপির কথায়, ‘‘বোরখার অভাব অনুভব করছি।’’
আলেসান্দ্রোর মতো সান্তিয়াগোও স্পেনের। দু’জনেরই পছন্দ তিকিতাকা ফুটবল। কাকতালীয় ভাবে বুধবারের দ্বৈরথের আগে দু’জনেই খুব একটা স্বস্তিতে নেই। আগের ম্যাচে লাল কার্ড দেখে ছিটকে গিয়েছে গোকুলমের মহম্মদ ইরশাদ ও হারুন আমিরি। অসুস্থতার কারণে মাঠের বাইরে গোলরক্ষক ভিকি। শেষ ম্যাচে ইস্টবেঙ্গল হেরেছে চার্চিল ব্রাদার্সের কাছে। গোকুলমকে বিধ্বস্ত করেছে চেন্নাই সিটি এফসি। মরসুমের শুরুতে দুরন্ত ছন্দে থাকা স্ট্রাইকার জুটি হেনরি কিসেক্কা ও মার্কাস জোসেফ একেবারেই চেনা মেজাজে নেই।
ব্রায়ান চার্লস লারার দেশ ত্রিনিদাদ ও টোব্যাগোর জাতীয় দলের স্ট্রাইকার মার্কাস পাখির চোখ করেছেন ইস্টবেঙ্গল ম্যাচকেই। শুধু তাই নয়। মোহনবাগান ডিফেন্ডার ড্যানিয়েল সাইরাসের মতো তিনিও বুধবার কল্যাণীতে গোল করে শ্রদ্ধা জানাতে চান গাড়ি দুর্ঘটনায় মৃত জাতীয় দলের সতীর্থ সাডন উইনচেস্টারকে।