সুমিত নাগাল। —ফাইল চিত্র।
সর্বভারতীয় টেনিস অ্যাসোসিয়েশনের (এআইটিএ) সঙ্গে সুমিত নাগালের সম্পর্ক বরাবরই অম্ল-মধুর। দেশের এক নম্বর টেনিস খেলোয়াড়ের বিরুদ্ধে আবার বিস্ফোরক অভিযোগ টেনিস সংস্থার। নাগালের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি দেশের হয়ে খেলতে অস্বীকার করেছেন।
প্যারিস অলিম্পিক্সে প্রথম রাউন্ডে হেরে গিয়েছিলেন নাগাল। তার পর ইউএস ওপেনেও প্রথম রাউন্ডে ছিটকে দেন। তার পর আর ভারতের হয়ে ডেভিস কাপ টাই খেলেননি সুইডেনের বিরুদ্ধে। নাগাল জানিয়েছিলেন, পিঠের ব্যথায় ভুগছেন। চিকিৎসকেরা বিশ্রাম নিতে বলেছেন। টাইয়ের আগে পর্যাপ্ত প্রস্তুতি নিতে পারবেন না। এই পরিস্থিতিতে ডেভিস কাপ খেলতে চান না। যদিও এআইটিএর দাবি অনুযায়ী সম্ভবত ইচ্ছাকৃত ডেভিস কাপ খেলেননি নাগাল। প্রশ্ন তোলা হয়েছে চিনের হ্যাংঝোউয়ে তাঁর একটি এটিপি প্রতিযোগিতায় খেলা নিয়ে।
সুইডেনের কাছে ওয়ার্ল্ড গ্রুপ ওয়ানের টাইয়ে ০-৪ ব্যবধানে বিধ্বস্ত হয়েছে ভারত। এর পরই নাগালের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন টেনিস কর্তারা। এআইটিএ সচিব অনিল ধুপার বলেছেন, ‘‘সুমিত নাগাল এবং ইউকি ভাম্বরি খেললে নিশ্চিত ভাবে আমাদের ফল অনেক ভাল হয়ে পারত। ওরা এআইটিএ কর্তাদের অধিনায়ক, দল নিয়ে নানা প্রশ্ন করেছিল। নাগাল বলেছিল, ওর পিঠে ব্যথা। মনে হয় এর মধ্যেই সমস্যা মিটে গিয়েছে। নাগাল তো এখন চিনে একটা প্রতিযোগিতায় খেলছে। আমার মনে হয় সকলের উচিত যুক্তিগ্রাহ্য কথা বলা।’’
সুইডেনের বিরুদ্ধে টাইয়ে নাগাল, ভাম্বরি ছাড়ও খেলেননি মুকুন্দ শশীকুমার। এ নিয়ে ধুপার বলেছেন, ‘‘শশীকুমারকে নিলম্বিত (সাসপেন্ড) করা হয়েছে। তাও ডেভিস কাপ দলের অধিনায়ক রোহিত রাজপাল ওকে দলে রাখার চেষ্টা করেছিলেন। অন্তত ১০ বার ওকে ফোন করেছিলেন রাজপাল। শাস্তি প্রত্যাহারের জন্য এক্সিকিউটিভ কমিটির কাছে আবেদন করতে বলেছিলেন। খেলার সুযোগ করে দেওয়ার জন্যই চেষ্টা করেছিলেন রাজপাল। কিন্তু শশীকুমার আবেদন করতে রাজি হয়নি।’’
সুইডেনের বিরুদ্ধে লজ্জার হারের পর এআইটিএর ভূমিকার সমালোচনা করেছিলেন সোমদেব দেববর্মন, পূরব রাজার মতো প্রাক্তন টেনিস খেলোয়াড়েরা। সরব হন নাগালও। সেই সমালোচনার জবাবে সমাজমাধ্যমে এআইটিএ লিখেছে, ‘‘ডেভিস কাপে ভারতের প্রতিনিধিত্ব করা টেনিসের থেকেও বেশি কিছু। এটা একটা সম্মান। জাতীয় গর্ব। পরবর্তী প্রজন্মকে উদ্বুদ্ধ করার সুযোগ। অথচ সুমিত নাগাল, ইউকি ভাম্বরি, মুকুন্দ শশীকুমারের মতো খেলোয়াড়েরা দেশের হয়ে খেলতে চান না। তাঁরা অন্যত্র অন্য প্রতিযোগিতায় খেলছেন।’’ সংস্থার পক্ষে আরও লেখা হয়েছে, ‘‘এআইটিএ কর্তৃপক্ষ এবং অধিনায়ক রোহিত রাজপাল প্রত্যেক খেলোয়াড়ের সঙ্গে আলাদা কথা বলে বোঝানোর চেষ্টা করেছে। দেশের জন্য খেলতে অনুরোধ করেছে। কিন্তু ওরা কেউ রাজি হয়নি।’’ রাজপালও তাঁর রিপোর্টে বলেছেন, ‘‘শুধু ডাবলস খেলোয়াড়দের উপর নির্ভর করে ডেভিস কাপ টাই জেতা সম্ভব নয়।’’
নাগালের সঙ্গে এআইটিএর সমস্যা এই প্রথম নয়। এর আগে গত বছরের শেষে পাকিস্তানের বিরুদ্ধেও ডেভিস কাপ টাই খেলতে রাজি হননি। তার পর গত অস্ট্রেলিয়ান ওপেনে নাগালকে ওয়াইল্ড কার্ড দেওয়ার জন্য আয়োজকদের অনুরোধ করতে রাজি হননি এআইটিএ কর্তৃপক্ষ। ২০১৬ সালে দলের অনুশীলন এড়িয়ে যাওয়ার অভিযোগে ডেভিস কাপ দল থেকে বাদ দেওয়া হয়েছিল তাঁকে।