দেশের এক নম্বর ক্লাব টুর্নামেন্ট করতে গিয়ে ল্যাজেগোবরে অবস্থা ফেডারেশনের।
আই লিগের জন্য টিমই পাচ্ছেন না সর্বভারতীয় ফুটবল কর্তারা। নতুন টিমের খোঁজে নিজেদের তৈরি করা নিয়ম নিজেদেরই ভাঙতে হচ্ছে এআইএফএফ-কে।
আই লিগে ফ্র্যাঞ্চাইজি টিমের জন্য বিড জমা দেওয়ার শেষ দিন ছিল ১৯ নভেম্বর। আর বুধবার ছিল বিড কমিটির বৈঠক। কিন্তু গোয়ার স্পোর্টিং ক্লুব এবং ডেম্পোর আই লিগ থেকে নাম তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্তে কার্যত দিশাহারা ফেডারেশন। বিডে টিম বাছতে গিয়ে কর্তারা বুঝে উঠতে পারছেন না, ক’টা দল নিয়ে এ বছর আই লিগ করবেন। টুর্নামেন্টে দলের সংখ্যা বাড়াতে আবার নতুন করে টেন্ডার ডাকছে ফেডারেশন। যার সময়সীমা ২৫ নভেম্বর-৮ ডিসেম্বর। নতুন বিড খোলার দিন নির্ধারিত হয়েছে ১১ ডিসেম্বর।
১৯ নভেম্বরের মধ্যে তিনটে নতুন টিমের নাম জমা পড়েছিল। পঞ্জাবের মিনার্ভা অ্যাকাডেমি এফসি, গোয়ার এফসি বার্দেজ এবং চেন্নাই সিটি এফসি। এ দিন ফেডারেশনের সিদ্ধান্তে এই তিনটে টিমকেই আবার নতুন করে বিডে অংশ নিতে হবে। তবে এর জন্য যে টাকা লাগবে সেটা দিতে হবে না এই দলগুলোকে। কিন্তু ফুটবলমহলে প্রশ্ন উঠে গিয়েছে, ১১ ডিসেম্বর যদি নতুন ফ্র্যাঞ্চাইজি টিমের নাম ঘোষিত হয়, সে ক্ষেত্রে আই লিগের জন্য কী ভাবে সেই টিম প্রস্তুত হবে? কবেই বা তারা দল গড়বে? আই লিগের সিইও সুনন্দ ধর আগে বলেছিলেন, ‘‘জানুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে আই লিগ শুরু হতে পারে।’’ সে ক্ষেত্রে নতুন টিমগুলো টুর্নামেন্টে নামার জন্য এক মাসও সময় হাতে পাবে না। যেখানে ইস্টবেঙ্গল, মোহনবাগানের মতো আই লিগের পুরনো দলগুলো ডিসেম্বর থেকেই পুরোদমে প্র্যাকটিস শুরু করার সুযোগ পাচ্ছে।
ফেডারেশন কর্তাদের অবশ্য এই নিয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া নেই। এ দিন সচিব কুশল দাস, আই লিগের সিইও, দু’জনের কাউকে ফোনে ধরা যায়নি। কুশলবাবু ফেডারেশনের নিজস্ব ওয়েবসাইটে কেবল এ দিন মন্তব্য করেছেন, ‘‘আই লিগ থেকে স্পোর্টিংয়ের নাম তুলে নেওয়া খুব দুঃখজনক। ভারতীয় ফুটবলে ওদের অনেক অবদান রয়েছে। সেটা অস্বীকার করা যাবে না।’’
স্পোর্টিং বা ডেম্পোকে কি আই লিগে ফেরত আসার অনুরোধ করা হবে? ফেডারেশনের সহ-সভাপতি সুব্রত দত্ত এই প্রশ্নের জবাবে বললেন, ‘‘আমি যত দূর জানি স্পোর্টিংকে অনুরোধ জানানো হবে না। আর ডেম্পো ফেডারেশনের কাছে সরকারি ভাবে এখনও কোনও চিঠি পাঠায়নি। তাই ওদের ব্যাপারে কিছু বলতে পারব না।’’ মঙ্গলবার কর্ণধার শ্রীনিবাস ডেম্পো একটি ওয়েবসাইটে সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে বলেছিলেন, ‘‘এক বছরের জন্য আমরা টাকা খরচ করে টিম করব। ফুটবলাররা লড়াই করবে আই লিগে ভাল ফল করার জন্য। অথচ সেই টুর্নামেন্টকেই পরের বছর দ্বিতীয় ডিভিশন টুর্নামেন্ট করে দেওয়া হবে। এর কোনও যৌক্তিকতা নেই। তা হলে কীসের ভিত্তিতে আমরা আই লিগ খেলব?’’ তবে শ্রীনিবাস যেহেতু ফেডারেশনের অন্যতম সহ-সভাপতিও, সে কারণে তাঁকে আই লিগ থেকে টিম না তোলার জন্য বোঝানো হবে বলে সূত্রের খবর।
হয়তো সে কারণেও কিছুটা সময় দরকার ছিল ফেডারেশন কর্তাদের। নতুন বিডের বাহানায় সেই সময়টা কি তাঁরা নিলেন? ভবিষ্যৎই বলবে সেটা!