প্রত্যয়ী: ফের বিশ্বসেরা হতে চান জাডেজা। বৃহস্পতিবার। পিটিআই
ইংল্যান্ডের মাটিতে হয়ে যাওয়া বিশ্বকাপে নিউজ়িল্যান্ডের বিরুদ্ধে সেমিফাইনাল প্রায় একাই জিতিয়ে দিচ্ছিলেন তিনি। কিন্তু পারেননি। ৫৯ বলে ৭৭ রান করেও হারের যন্ত্রণা নিয়ে ফিরতে হয়েছিল তাঁকে। যার পরে বাড়িতে ফোন করে কেঁদে ফেলেছিলেন রবীন্দ্র জাডেজা। এখন সেই কান্না মুছে শপথের আগুনে নিজেকে কঠিন করে তুলেছেন এই অলরাউন্ডার। প্রতিজ্ঞা করেছেন, আবার বিশ্বের এক নম্বর অলরাউন্ডার হয়ে দেখাবেন।
শুক্রবার তাঁরই ঘরের মাঠ, রাজকোটে খেলা। যেখানে দিদির স্নেহের ছায়ায় ডানা মেলেছিল জাড্ডুর স্বপ্ন। এ দিন জা়ডেজার সেই দিদি নয়না আনন্দবাজারকে বলছিলেন, ‘‘বিশ্বকাপ সেমিফাইনালে ভাই যখন ও রকম খেলছিল, তখন আমাদের সবার মনে হচ্ছিল জিতে যাব। কিন্তু শেষ মুহূর্তে এসে পারল না। পরে ফোন করে কেঁদে ফেলেছিল। বলেছিল, এত কাছে এসেও জেতাতে পারলাম না দেশকে।’’
আপনাদের কী প্রতিক্রিয়া হয়েছিল ওই সময়? নয়নার জবাব, ‘‘আমরাও ভেঙে পড়েছিলাম। পরে ভাইকে বলেছিলাম, ‘তুই তো আপ্রাণ চেষ্টা করেছিলি। হয়নি, কী আর করা যাবে।’ আর এটাও ঠিক, ক্রিকেট এক জনের খেলা নয়। শুধু জাডেজা কেন, ভারতের সবাই লড়াই করেছিল।’’
আরও পড়ুন: কোহালিকে থামাতে আজ ফিঞ্চদের অস্ত্র সেই লেগস্পিন
বিশ্বকাপের শুরুর দিকে জাডেজার অবশ্য জায়গা হয়নি ভারতীয় দলে। ওই সময় দিদি তাঁকে বারবার বলেছিলেন, ঠিক সুযোগ আসবে। আর সেটা কাজে লাগাতে হবে। জাডেজা ঠিক সেটাই করেন। আর সঞ্জয় মঞ্জরেকরদের মতো সমালোচকদের চুপ করিয়ে দেন। জাডেজার দক্ষতাকে কটাক্ষ করে মঞ্জরেকর তখন বলেছিলেন, ‘‘ও তো সাধারণ, গড়পরতা ক্রিকেটার।’’ যে জন্য পরে অনুতপ্তও হন মঞ্জরেকর।
আরও পড়ুন: শ্রীনির সওয়াল উপেক্ষা করে চুক্তিপত্র থেকে ছাঁটাই ধোনি
সে প্রসঙ্গ উঠতেই ভারতীয় ক্রিকেটারের দিদি বলছেন, ‘‘এখন আর ওই পুরনো কথা তুলতে চাই না। মঞ্জরেকর তো নিজের ভুল বুঝতে পেরে সে দিন বিবৃতিও দিয়েছে। আমরা ও সব মাথা থেকে মুছে ফেলেছি। ভাইকেও বলেছি, এই সব নিয়ে একদমই মাথা ঘামাবি না। তোর নজর থাকবে শুধু ক্রিকেটে।’’
জাডেজা এখন কী লক্ষ্য সামনে রেখে এগোচ্ছেন? আপনার চেয়ে জাডেজাকে কে আর ভাল চেনে। ভাইয়ের সঙ্গে কী কথা হয়েছে ইতিমধ্যে? নয়নার জবাব, ‘‘ও এক সময় আইসিসি র্যাঙ্কিংয়ে এক নম্বর অলরাউন্ডার ছিল। আবার সেই জায়গাটা ফিরে পেতে চায়। বলেছে, তার জন্য যা করার করবে। শুধু অলরাউন্ডার হিসেবেই নয়, এক নম্বর বোলার হওয়ার জন্যও কিন্তু আমার ভাই লড়াই করে যাচ্ছে।’’
বৃহস্পতিবার, ভারতীয় নেটেও দেখা গেল নিজেকে অনুশীলনে ডুবিয়ে রেখেছেন জাডেজা। কখনও থ্রো-ডাউন নিচ্ছেন, কখনও পেস-স্পিন সামলাচ্ছেন। আবার কখনও নির্ভুল লক্ষ্যে বাঁ-হাতি স্পিনটা করে চলেছেন।
ভাইয়ের এই সাধনা কী ফল দিচ্ছে জানতে শুক্রবার নিশ্চয়ই স্টেডিয়ামে আসবেন? বিশেষ করে যখন ঘরের মাঠে খেলা? অবাক করে দিয়ে নয়না বলছেন, ‘‘না, না। আমি মাঠে যাচ্ছি না।’’ কেন বলছেন এই কথা? জবাব আসে, ‘‘অত ভিড়ের মধ্যে যাওয়া হবে না। টিভি-তে ভাইয়ের খেলা দেখব।’’ বোঝা গেল, আড়ালে থেকেই প্রিয় ‘জাডডু’র দিকে আশীর্বাদের হাত বাড়িয়ে দেবেন দিদি নয়না।