নীরজ চোপড়া। ছবি: রয়টার্স।
অ্যাথলেটিক্সের বিভিন্ন ইভেন্টে জোচ্চুরি করার চেষ্টা করছে চিন। বুধবার নীরজ চোপড়া, কিশোর জেনার জ্যাভলিন থ্রো ইভেন্টের পর এশিয়ান গেমসের আয়োজকদের বিরুদ্ধে সরাসরি অভিযোগ করলেন অঞ্জু ববি জর্জ। প্রাক্তন অ্যাথলিটের অভিযোগ, গেমস আয়োজকদের ভূমিকা হতাশাজনক।
প্রথমে মহিলাদের ১০০ মিটার হার্ডলসে জ্যোতি ইয়ারাজ্জি। পরে নীরজ, জেনাদের জ্যাভলিন থ্রো। প্রতিযোগিতার সময় ভারতীয় খেলোয়াড়দের নানা ভাবে হেনস্থার অভিযোগ করেছেন তিনি। অঞ্জুর অভিযোগ, চিনের আয়োজকেরা ভারতীয় অ্যাথলিটদের মনোবল ভেঙে দেওয়ার চেষ্টা করছেন। তিনি বলেছেন, ‘‘আমার মনে হচ্ছে পরিকল্পনা করেই এ সব করা হচ্ছে। ওরা আমাদের ছেলে-মেয়েদের সঙ্গে প্রতারণা করার চেষ্টা করছে। নীরজ অলিম্পিক্স চ্যাম্পিয়ন। ও সেরা পারফরম্যান্স করে দেখিয়ে দিয়েছে। জানতাম চিনে সাফল্য পাওয়া কঠিন হবে। কারণ, ওরা এই ধরনের ঘটনা ঘটিয়েই থাকে।’’ তিনি আরও বলেছেন, ‘‘নীরজের সঙ্গে যেটা হল, সেটা আগের দিন অন্নু রানির সঙ্গে হয়েছে। ওর প্রথম থ্রো মাপা হয়নি। সেটাও খুব ভাল থ্রো ছিল। জ্যোতির সঙ্গে খারাপ করেছিল ওরা। এর পরেও জ্যাভলিনে সোনা, রুপো দুটোই জিতেছি আমরা। অফিসিয়ালদের বিরুদ্ধে আমরা লিখিত অভিযোগ জানাব।’’
অঞ্জু এখন অ্যাথলেটিক্স ফেডারেশন অফ ইন্ডিয়ার সহ-সভাপতি। অ্যাথলেটিক্সের সব ইভেন্টে তিনি স্টেডিয়ামে উপস্থিত থাকছেন। খেলোয়াড়দের উৎসাহ এবং প্রয়োজনে পরামর্শ দিচ্ছেন। ফলে সামনে থেকে সব কিছু দেখতে পাচ্ছেন তিনি।
বুধবার ইচ্ছাকৃত ভাবে নীরজের প্রথম থ্রো বাতিল করে দেওয়ার অভিযোগ তুলেছে ভারতীয় শিবির। নীরজের প্রথম থ্রোয়ের পর প্রযুক্তিগত সমস্যায় দূরত্ব মাপতে পারেনি আয়োজকেরা। ফলে সেই থ্রো বাতিল করে দেওয়া হয়। ফলে তাঁকে ছ’বারের বদলে সাত বার জ্যাভলিন ছুড়তে হয়। কিশোর জেনার একটি বৈধ থ্রোও প্রথমে অবৈধ বলে ঘোষণা করেছিলেন লাইন জাজ। সে ক্ষেত্রেও নীরজ ছুটে গিয়ে সতীর্থের পাশে দাঁড়িয়ে প্রতিবাদ করেছিলেন। রিপ্লে দেখার পর কিশোরের থ্রোটির মান্যতা দেওয়া হয়। এত কিছু করেও অবশ্য ভারতের দুই জ্যাভলিন থ্রোয়ারের সাফল্য আটকাতে পারেনি চিন। নীরজ সোনা এবং কিশোর রুপো জিতেছেন।
বিরক্ত নীরজ বলেছেন, ‘‘এমন ঘটনা এ বারের এশিয়ান গেমসে ভারতের অন্য অ্যাথলিটের সঙ্গেও হয়েছে। এটা ঠিক না। কিশোরের দ্বিতীয় থ্রো বাতিল করে দিয়েছিল। সেটাও ভুল সিদ্ধান্ত ছিল। কিন্তু এটা নিয়ে ঝগড়া করে কী হবে। অন্য অ্যাথলিটদের সম্মান করা উচিত। দেরি করার জন্য আমার মতো বাকিদের শরীরও ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছিল।”
গ্রাফিক: সৌভিক দেবনাথ।
এর আগে হেনস্থার শিকার হন ইয়ারাজ্জি। মহিলাদের ১০০ মিটার হার্ডলসে নির্দিষ্ট সময়ের আগে দৌড় শুরু করার অভিযোগে প্রথমে ইয়ারাজ্জিকে বাতিল করে দেওয়া হয়। ইয়ারাজ্জিকে জানানো হয়, তাঁর সময় মাপা হবে না। ভারতীয় দলের প্রতিবাদে রিপ্লে দেখা হয়। তাতে দেখা যায় নির্দিষ্ট সময়ের আগে দৌড় শুরু করেছিলেন আসলে দ্বিতীয় স্থানে শেষ করা চিনের প্রতিযোগীই। দু’জনে পাশাপাশি লেনে থাকায় গুলিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন আয়োজকেরা। শেষ পর্যন্ত অবশ্য চিনের প্রতিযোগীকে বাতিল বলে ঘোষণা করতে বাধ্য হন আয়োজকেরা। রুপো পান ইয়ারাজ্জি।
সব মিলিয়ে চিনের রেফারি এবং আম্পায়ারদের ভূমিকায় ক্ষুব্ধ ভারতীয় শিবির। আয়োজকদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে সরকারি ভাবে অভিযোগ জানাতে পারে ভারত।