বাংলায় সাঁতারও চালু হচ্ছে খুব তাড়াতাড়ি। —ফাইল চিত্র
করোনার জেরে দীর্ঘ দিন ধরে বন্ধ খেলাধুলো। ক্রিকেট, ফুটবল চালু হলেও এখনও শুরু হয়নি টেবিল টেনিস, বক্সিং, কুস্তি, সাঁতারের মতো খেলা। নতুন বছরে কিছু খেলা চালু হলেও জাতীয় স্তরের প্রতিযোগিতার প্রস্তুতিই বাংলায় এখনও হয়নি অনেক ক্ষেত্রে। তবু বেশ কিছু ক্ষেত্রে আশার আলো দেখা যাচ্ছে। নতুন পরিকল্পনার কথাও শোনা যাচ্ছে বিভিন্ন অ্যাসোসিয়েশনে। আনন্দবাজার ডিজিটাল খোঁজ নিল এই সমস্ত খেলার হালহকিকত।
টেবিল টেনিসের অবস্থা এই পরিস্থিতিতে কিছুটা ভাল। জাতীয় পর্যায়ে সিনিয়র টেবিল টেনিস প্রতিযোগিতা চালু হতে চলেছে এ মাসেই। প্রথমে মহিলাদের সিঙ্গলস হবে পঞ্জাবের পাঞ্চকুলায়। তারপর ওই একই জায়গায় হবে পুরুষদের সিঙ্গলস। এ বছর ডাবলস বা মিক্সড ডাবলস খেলা হবে না। বাংলা থেকে ৫ জন করে যাচ্ছেন এই প্রতিযোগিতায়। মহিলাদের দলে আছেন প্রাপ্তি সেন, পয়মন্তী বৈশ্য, প্রিয়দর্শিনী দাস, মুনমুন কুণ্ডু। পুরুষদের দলে আছেন রণিত ভঞ্জ, আকাশ পাল, অর্জুন ঘোষ, সৌভিক বন্দ্যোপাধ্যায়, নীলদীপ দাস। মহিলা দলের প্রশিক্ষক প্রসেনজিৎ সরকার। আর পুরুষ দলের প্রশিক্ষক অমিত মুখোপাধ্যায়। বেঙ্গল স্টেট টেবিল টেনিস অ্যাসোসিয়েশনের যুগ্ম সম্পাদক শর্মি সেনগুপ্ত বলেন, ‘‘আমরা জাতীয় প্রতিযোগিতার জন্য প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছি। সোমবার থেকেই শুরু হচ্ছে এই প্রতিযোগিতা, সমস্ত স্বাস্থ্যবিধি মেনেই। জেলাস্তরে টুর্নামেন্ট বেশ কিছু দিন আগেই শুরু করে দিয়েছি আমরা।’’
এখন সবচেয়ে খারাপ অবস্থা বক্সিংয়ের। করোনার কারণে এখনও চালু হয়নি প্রস্তুতিও। জাতীয় স্তরে খেলা কবে শুরু করা যাবে, সেটাও স্পষ্ট নয়। আন্তর্জাতিক তারকাদের যদিও সাইয়ের বিভিন্ন শিবিরে রেখে অনুশীলন করার ব্যবস্থা করেছিল কেন্দ্র সরকার। উদ্দেশ্য ছিল, পরে অন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টে খেলতে যাতে সমস্যা না হয় খেলোয়াড়দের। বেঙ্গল অ্যামেচার বক্সিং অ্যাসোসিয়েনের সভাপতি অমিত বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘কোনও পর্যায়েই খেলা এখনই শুরু হয়নি। বক্সিংয়ে সরাসরি শারীরিক সঙ্ঘাত হয়। তাই অনেক সতর্ক থাকতে হয়। পুরোদমে খেলা শুরু হতে হতে পুজো পেরিয়ে যেতে পারে। বিভিন্ন ক্লাবে খেলা শুরু হয়েছে। ছেলেমেয়েরা আস্তে আস্তে ভয় কাটিয়ে খেলায় ফিরতে শুরু করেছে।’’
বাংলায় সাঁতারও চালু হচ্ছে খুব তাড়াতাড়ি। তবে জাতীয় স্তরে সাঁতার প্রতিযোগিতা কবে থেকে চালু হবে, তা ঠিক হয়নি। বেঙ্গল সুইমিং অ্যাসোসিয়েনের সচিব স্বপন আদক বলেন, ‘‘সমস্ত সুরক্ষাবিধি মেনেই আমরা সাঁতার শুরু করতে চাইছি। রাজ্য সরকারের তরফে নির্দেশ পাওয়ার পরই জেলায় জেলায় আমিও নির্দেশ পাঠিয়ে দিয়েছি। ডিসেম্বর থেকে সাঁতার চালু হয়েছে বিভিন্ন জেলায়। হুগলি, হাওড়া, দক্ষিণ ২৪ পরগনা ও কলকাতার কিছু অংশে চালু হয়েছে প্রশিক্ষণ। তবে গত বছর না হলেও এ বছর জাতীয় স্তরের প্রতিযোগিতা হবে। কবে শুরু হবে, তা এখনও স্পষ্ট নয়। সাঁতারুদের প্রস্তুত হতে হবে। তার জন্যও অনেকটা সময়ের দরকার।’’
অতিমারির কারণে বন্ধ ছিল কুস্তিও। তবে কুস্তিগিরদের বাড়িতেই প্রস্তুতি নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। ভার্চুয়াল মিটে নিয়মিত খেলোয়াড়দের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছিলেন প্রশিক্ষকরা। হাওড়া, বালুরঘাট-সহ বিভিন্ন জায়গায় অনেক দিন ধরেই অনুশীলন শুরু হয়েছিল। জাতীয় স্তরের প্রতিযোগিতায় বাংলা দল খেলতে গেলেও পদক আসেনি। তবে ভবিষ্যতে সফল হতে বেশ কিছু উদ্যোগ নিচ্ছে পশ্চিমবঙ্গ কুস্তি অ্যাসোসিয়েশন। সংস্থার যুগ্ম সম্পাদক অসিতকুমার সাহা বলেন, ‘‘প্রস্তুতিতে কিছুটা খামতি ছিল। তবে আমরা উত্তরবঙ্গের জেলাগুলির উপর জোর দিচ্ছি। ওখানে অনেক ভাল ভাল খেলোয়াড় আছে। তাদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে। জন্মসূত্রেই ওরা বেশি ফিট। ফলে এই খেলাটা আয়ত্ত করতে পারে সহজে। দরকার কিছুটা প্রশিক্ষণের। ২১ থেকে ২৭ ফেব্রুয়ারি জলপাইগুড়ির গজলডোবাতে প্রশিক্ষণ শিবির হবে। ৬০ জন বিভিন্ন জেলা থেকে যোগ দেবে এখানে। আশা করছি এ ভাবেই আমরা এগিয়ে যেতে পারব।’’