উৎসব: ৩৬ বছর পরে বিশ্বকাপের মূল পর্বে উঠে ফুটবলাররা। ছবি রয়টার্স।
দলের উইঙ্গারের জন্ম ঘানার এক শরণার্থী শিবিরে। যাঁর ১৯৯৯ সালে লাইবেরিয়ায় গৃহযুদ্ধের সময় দেশ থেকে পালিয়ে এসে আশ্রয় নিতে হয়েছিল এই শিবিরে।
দলের গোলকিপার সাত বছর বয়সে ক্রোয়েশিয়ার ভয়ঙ্কর যুদ্ধের কারণে দেশ ছাড়তে বাধ্য হয়েছিলেন।
দলের তিন ফরোয়ার্ডের মধ্যে একজনের জন্ম নিউ ইয়র্কে, কিন্তু চলে যেতে হয়েছিল হাইতিতে। বাকি দুজনের জন্ম নাইজিরিয়ায়, কিন্তু রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে তাঁদের পরিবারকে পাড়ি দিতে হয়েছিল ইংল্যান্ডে।
এমনই বৈচিত্রে ভরা সামাজিক অবস্থান থেকে উঠে আসা এই সব অভিবাসীরা একজোট হয়ে কাতার বিশ্বকাপে লড়াই করবেন কানাডার জার্সি পরে!
দীর্ঘ ৩৬ বছর পরে বিশ্বকাপ ফুটবলের মূলপর্বে উঠল কানাডা। রবিবার রাতে তারা জামাইকাকে ৪-০ হারানোয় ১৯৮৬ সালের পরে কনকাকাফ গ্রুপ থেকে বিশ্বকাপের মূল পর্বে গেল তারা। ঐতিহাসিক জয়ের রাতে কানাডা দলের কোচ জন হার্ডম্যান বলেছেন, “এই মিশ্র সংস্কৃতিতে ভরপুর দলকে কী নামে ডাকা উচিত, তা আমার জানা নেই। তবে এটুকু বলতে পারি লারিন, বুকাননরা যা করে দেখাল, তা ফুটবল ইতিহাসে রূপকথা হিসেবে চিহ্নিত হয়ে থাকবে।”
১৯৮৬ সালে কোনও গোল না করে এবং কোনও ম্যাচ না জিতে গ্রুপ সেরা হয়েছিল কানাডা। রবিবার জামাইকার বিরুদ্ধে কাইল লারিন ও টায়োন বুকাননের গোলে প্রথমার্ধেই ২-০ এগিয়ে গিয়েছিল কানাডা। দ্বিতীয়ার্ধে জুনিয়র হইলেট ও আদ্রিয়ান মারিয়াপ্পার আত্মঘাতী গোলে কানাডা ম্যাচ শেষ করে ৪-০ জিতে।
জয়ের পরে দ্বিতীয় বার বিশ্বকাপে খেলার আনন্দে স্টেডিয়ামে কানাডার সমর্থকেরা উল্লাসে ফেটে পড়েন। তবে কানাডার সঙ্গে মূল পর্বে যাওয়ার দৌড়ে অনেকটাই এগিয়ে গিয়েছে আমেরিকা। রবিবার তারাও ৫-১ হারিয়ে দিয়েছে পানামাকে। হ্যাটট্রিক করেছেন চেলসির মিডফিল্ডার ক্রিশ্চিয়ান পুলিসিচ। তিনি তিনটি গোল করেন ১৭, ৪৫+৪ এবং ৬৫ মিনিটে। এর মধ্যে দুটি গোলই আসে পেনাল্টি থেকে। বাকি দুই গোলদাতা পল আরিয়োলা এবং জেসাস ফেরেইরা। পরে পুলিসিচ বলেছেন, “দেশের জার্সিতে হ্যাটট্রিকের বিশেষ তৃপ্তি রয়েছে। আমরা কাতারে খেলার বিষয়ে আশাবাদী।”