এই ভারত অনেক বেশি ভয়ঙ্কর বলছে অস্ট্রেলিয়া

পার্কটার নাম ফার্স্ট ফ্লিট পার্ক। ঠিক সামনে সিডনি বন্দর। হাওয়া খেলছে চার দিকে। পিছনের অনুপম সেটিংয়ে সিডনি অপেরা হাউস। সেখানে উড়ছে বিশ্বকাপ ক্রিকেটের বেশ কিছু পোস্টার। আর তার নীচে একগাদা সাংবাদিকদের ভিড় আর মাইকের সামনে প্রাক্তন দুই তারকা। মাইকেল ভন আর ব্রেট লি। কিছু ভারতীয় সেই ভিড়-টিড় দেখে দৌড়ে চলে এল। এক জনের পরনে নীল ইন্ডিয়ান জার্সি। যাকে দেখে ভন রসিকতা করে বললেন, “বাবা তুমি স্বামী আর্মি না কি?”

Advertisement

গৌতম ভট্টাচার্য

সিডনি শেষ আপডেট: ২৫ মার্চ ২০১৫ ০৪:৩২
Share:

সাংবাদিক সম্মেলনে অ্যারন ফিঞ্চ। মঙ্গলবার। ছবি: গৌতম ভট্টাচার্য

পার্কটার নাম ফার্স্ট ফ্লিট পার্ক। ঠিক সামনে সিডনি বন্দর। হাওয়া খেলছে চার দিকে। পিছনের অনুপম সেটিংয়ে সিডনি অপেরা হাউস।

Advertisement

সেখানে উড়ছে বিশ্বকাপ ক্রিকেটের বেশ কিছু পোস্টার। আর তার নীচে একগাদা সাংবাদিকদের ভিড় আর মাইকের সামনে প্রাক্তন দুই তারকা। মাইকেল ভন আর ব্রেট লি। কিছু ভারতীয় সেই ভিড়-টিড় দেখে দৌড়ে চলে এল। এক জনের পরনে নীল ইন্ডিয়ান জার্সি। যাকে দেখে ভন রসিকতা করে বললেন, “বাবা তুমি স্বামী আর্মি না কি?”

কিন্তু এর বাইরে বৃহত্তর সিডনি যে বিশ্বকাপ সেমিফাইনাল নিয়ে বিশাল আলোড়িত বোঝার উপায় নেই। দক্ষিণ আফ্রিকা ফের আরও একটা ম্যাচ চোখের জলের কাছে রেখে আসার পর প্লেয়ারদের হোটেল সংক্রান্ত চত্বরটা একটু ঘুরে এলাম। আশেপাশের কিছু বারে তখন ম্যাচটার নতুন করে হাইলাইটস দেখাচ্ছে। কিন্তু তিন ঘণ্টা তিরিশ মিনিট বিমানদূরত্বের অকল্যান্ডের কোনও হ্যাংওভার আছে বলে তো চোখে পড়ল না।

Advertisement

হ্যাঁ, ভারতীয় টিম হোটেলের উল্টো দিকে টিভি ক্যামেরার জটলা। নিত্য দিনই ওগুলো থাকে প্লেয়ারদের গতিবিধি অনুসরণের জন্য। আজ দুপুর থেকে ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলের দিকে তাক করে রয়েছে। অনুষ্কা শর্মা এসেছেন এমন উড়ো খবরে। অনুষ্কা-বিরাট যদি কোথাও একসঙ্গে বেরোন তা হলে তাঁদের ধাওয়া করা হবে এই হচ্ছে চ্যানেলওয়ালাদের কর্মসূচি। তা যতক্ষণ নিষ্ফল তাদের দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেল তার আদ্ধেক সময়ও যদি বৃহস্পতিবারের ম্যাচে বিরাট ক্রিজে থাকেন, ভারতের মেলবোর্নের বিমানে ওড়া উচিত।

এ দিন ব্রেট লিও বলছিলেন, “অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে বিরাট ভাল খেলে। সেমিফাইনালে ও যদি একটা দুর্ধর্ষ কিছু খেলে দেয় আমি অবাক হব না।” ভন আবার মনে করেন, “ম্যাচের প্রথম কুড়ি ওভার খুব গুরুত্বপূর্ণ। ওই কুড়িটা ওভার কি বিপক্ষ ব্যাটসম্যানরা নিয়ে যায়, না বোলাররা সেটাই দেখার হবে।” মিচেল স্টার্ক এবং মিচেল জনসন বনাম ভারতীয় ওপেনাররা এই সমীকরণে কেউ যদি সাম্প্রতিক রেকর্ড দেখেন, তা হলে অস্ট্রেলিয়ার চিন্তা করার কিছু নেই।

তাঁদেরই এক জন মিচেল জনসন অবশ্য মঙ্গলবার বলে গেলেন, “ইতিহাস দিয়ে নতুন দিনের ক্রিকেট হয় না। এই ভারত আর টেস্ট সিরিজের ইন্ডিয়া এক নয়। এরা অনেক গুছিয়ে নিয়েছে।” সামগ্রিক মতবাদ হচ্ছে ইন্ডিয়া চার মাস কাটিয়ে উইকেটের ধর্মটা রপ্ত করে ফেলেছে। আর ট্রায়াঙ্গুলার সিরিজটা ওরা বুদ্ধি করে গুছিয়েছে। জিততে চায়নি। আসলে ধোনি ওই সময় বুদ্ধি করে হাতটা দেখায়নি। সাংবাদিক সম্মেলনে এসে অস্ট্রেলীয় ওপেনার অ্যারন ফিঞ্চও তাই বলে গেলেন, “যে ভারত দেখেছি আর এরা যা— দুটো আলাদা। আহ্লাদে আটখানা হয়ে খেলতে নামলে চলবে না যে এ বারই তো ওদের এত বার হারিয়েছি। এরা অনেক ভয়ঙ্কর।”

বোঝা গেল অস্ট্রেলিয়া এতটুকু সুযোগ নিতে চায় না। অস্ট্রেলীয় অনুশীলনে ক্লার্কের টিমের সঙ্গে দেখা করতে এসেছিলেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী বব হক। বলে গেলেন, তুফান তোলাটা জারি রাখো। পঁচাশি বছর বয়সী প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী এমন বিশ্বকাপের আগে টিমকে উৎসাহিত করতে চলে এসেছেন ভারতে ভাবাই যায় না।

নাকি ক্লার্ক ছেলেদের আরও টগবগে রাখতে ববকে অনুরোধ করেছিলেন আসার জন্য? এটাও হতে পারে যে অ্যাডিলেডে কোচ লেম্যান ডেকেছিলেন স্টিভ ওয়কে যিনি তাঁর দিকে নয়। তাই তিনি, ক্লার্ক ডেকে নিলেন কিনা প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীকে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement