পর্যবেক্ষণ: পিচ পরিদর্শন কোচ ম্যাকডোনাল্ড এবং ফিঞ্চের। পিটিআই
দাবানলে আক্রান্ত হয়ে এখনও পর্যন্ত ২৬জনের মৃত্যু হয়েছে অস্ট্রেলিয়ায়। ক্ষতি হয়েছে পরিবেশ ও পশুপাখির। প্রাকৃতিক দুর্যোগে বিধ্বস্ত দেশের মানুষের মুখে হাসি ফেরাতে মরিয়া অ্যারন ফিঞ্চ। সেই হাসি ফেরানোর উপায়? ভারতের মাটিতে ভারতকেই হারিয়ে দেশে ফেরা।
শুক্রবারই মুম্বইয়ে নেমেছেন ফিঞ্চ। সাংবাদিক বৈঠকে তাঁকে জিজ্ঞাসা করা হয় অস্ট্রেলিয়ার পরিবেশ সম্পর্কে। ফিঞ্চের উত্তর, ‘‘আমাদের দেশে যা ঘটেছে, তার সামনে ক্রিকেট একেবারে তুচ্ছ। কত বন্যপ্রাণীর মৃত্যু হয়েছে। ধ্বংস হয়ে গিয়েছে বহু প্রজাতি। এই পরিস্থিতিতে তাদের মুখে কিছুটা হলেও হাসি ফিরিয়ে দিতে চাই।’’ কী করে? ফিঞ্চের উত্তর, ‘‘ভারতের মাটিতে ভারতকে হারিয়ে।’’
ফিঞ্চের ধারণা, এই পরিস্থিতিতে সে দেশের মানুষ টিভির পর্দায় হয়তো চোখ রাখতে পারবেন না। কিন্তু খবর নিশ্চয়ই পাবেন। বলছিলেন, ‘‘ক্রিকেটার হিসেবে আমাদের দায়িত্ব নিজেদের সেরাটা উজাড় করে দেওয়ার। এখান থেকে জিতে ফিরলে, বিধ্বস্ত এলাকার মানুষেরা কিছুটা হলেও স্বস্তি পাবেন।’’
কিন্তু ভারতকে হারাতে হলে যশপ্রীত বুমরাকে সামলানোর পরীক্ষা দিতে হবে স্টিভ স্মিথ, মার্নাস লাবুশানেদের। বর্তমানে বিশ্বের প্রত্যেকটি দল ভয় পেতে শুরু করেছে ভারতীয় পেসারকে। ফিঞ্চরাও তাঁকে সম্মান করেন। কিন্তু অতিরিক্ত সতর্ক হওয়ার কোনও কারণ দেখছেন না। ১৪ জানুয়ারি মুম্বইয়েই শুরু হচ্ছে ভারত-অস্ট্রেলিয়া দ্বৈরথ। তার চার দিন আগে ফিঞ্চ বলে দিলেন, ‘‘বুমরাকে যত খেলবে, ততই ওর বিস্ময় ফাঁস হবে। প্রত্যেকের ক্ষেত্রেই সেটা হয়ে এসেছে। তাই বুমরার বিরুদ্ধে অতিরিক্ত সতর্ক হওয়ার কোনও প্রয়োজন নেই।’’ যোগ করেন, ‘‘নিঃসন্দেহে বুমরা অসাধারণ বোলার। বাইরে থেকে ওর বোলিং খুব উপভোগ করি। কিন্তু বুমরার চেয়েও আমরা নিজেদের ক্ষমতা নিয়ে ভাবছি। প্রত্যেকেই নিজেদের শক্তি ও দুর্বলতা সম্পর্কে ওয়াকিবহাল। আমরা সব চ্যালেঞ্জ নিতেই তৈরি।’’
২০১৯-এ ভারত সফরে এসে ওয়ান ডে সিরিজ ৩-২ জিতে ফিরেছিল অস্ট্রেলিয়া। ফিঞ্চ জানিয়েছেন, সেটাই তাদের অনুপ্রেরণা। অস্ট্রেলীয় অধিনায়কের কথায়, ‘‘বেশির ভাগ দলই ঘরের মাঠে খেলতে পছন্দ করে। আমরা কিন্তু বাইরের পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে সিরিজ জিতে ফিরতে ভালবাসি। ২০১৯-এ ভারতে ওয়ান ডে সিরিজ জিতেছিলাম। সেটাই আমাদের অনুপ্রেরণা। মুম্বইয়ে প্রথম ম্যাচে শুরুটা ভাল করতে হবে।’’
ফিঞ্চের দলের অন্যতম তারকা ডান-হাতি পেসার প্যাট কামিন্স। এ বারই তাঁকে ১৫.৫ কোটি টাকায় দলে নিয়েছে কলকাতা নাইট রাইডার্স। তাই কামিন্সের পারফরম্যান্সের উপর নজর থাকবে ভারতীয় ক্রিকেট সমর্থকদের। বিধ্বংসী পেসার যদিও জানিয়ে দিলেন, ভারতীয় পরিবেশে স্পিনাররাই সব চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। অস্ট্রেলিয়ার বিমানবন্দরে কামিন্স বলেছেন, ‘‘বিশ্বের অন্য প্রান্তের চেয়ে ভারতে স্পিনাররাই বেশি সাহায্য পায়। এই সিরিজেও তাই হবে। কিন্তু টেস্টে যে ধরনের ঘূর্ণি পিচ তৈরি যায়, ওয়ান ডে-তে যায় না। তা সুবিধা হতে পারে।’’
অস্ট্রেলিয়া তাদের দুই বিশেষজ্ঞ স্পিনারকে নিয়ে ভারত সফরে এসেছে। লেগস্পিনার অ্যাডাম জ়াম্পা ও বাঁ-হাতি স্পিনার অ্যাশটন আগার। বিশ্রাম দেওয়া হয়েছে নেথান লায়নকে। বাঁ-হাতি ব্যাটসম্যান ডার্সি শর্টও চায়নাম্যান বোলার হিসেবে পরিচিত। পেস বিভাগে মিচেল স্টার্ক, কামিন্সরা তো রয়েইছেন।
ভারতীয় পরিবেশে ওয়ান ডে-তে পেসারদের সফল হওয়ার সুযোগ কতটা? কামিন্সের উত্তর, ‘‘যে কোনও জায়গাতেই পেসাররা সফল হতে পারে। কিন্তু ভারতে বল দ্রুত পুরনো হয়। তাই মাঝের ওভারে বল করতে সুবিধা হয়। স্লোয়ার, কাটার করতে সমস্যা হয় না।’’