টেস্ট ক্রিকেটের আভিজাত্য বা বিশুদ্ধবাদীদের সমর্থন না-ই বা থাকল! চোখধাঁধানো জনপ্রিয়তায় ইতিমধ্যেই কয়েকশো মাইল এগিয়ে টি-টোয়েন্টি। হবে না-ই বা কেন? নিলামে প্লেয়ারদের ঘিরে কাড়াকাড়ি, ঝকঝকে জার্সি, ফ্লাডলাইটে খেলা বা আফটার-ম্যাচ পার্টি থেকে শুরু করে টি-টোয়েন্টির টুর্নামেন্ট ঘিরে উন্মাদনা বরাবরই তুঙ্গে। তা এই ক্রিকেট ফরম্যাটে রয়েছে অবিশ্বাস্য সব রেকর্ড। সেই সব রেকর্ডগুলির দিকে এক বার নজর ঘোরানো যাক।
১। ক্রিস গেইল— সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত রান (অপরাজিত ১৭৫)
টি-টোয়েন্টির ইতিহাসে সবচেয়ে আলোচিত ব্যাটসম্যান বোধহয় ক্রিস গেইল। কে ভুলতে পারে আইপিএলে সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত রানের রেকর্ডের কথা। ২০১৩-র আইপিএলে মাত্র ৬৬ বলে অপরাজিত ১৭৫ করে মাঠ ছাড়েন রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্সের গেইল। সে বার ক্যালিপ্সো কিংয়ের ঝড়ে উড়ে গিয়েছিল পুণে ওয়ারিয়র্স। ১৭ ছয় ও ১৩টি চার দিয়ে সাজানো ইনিংসে মাত্র ১৭ বলে হাফ-সেঞ্চুরি করেছিলেন গেইল।
২। সুনীল নারিন— উইকেট মেডেন সুপার ওভার
মিস্ট্রি বোলারের সাফল্যের শুরুটা হয়েছিল আইপিএলে যখন কেকেআরের জার্সিতে তিনি মাঠে নেমেছিলেন। টি-টোয়েন্টিতে সেই নারিনই প্রথম মেডেন সুপার ওভারটি করেন। ক্যারিবিয়ান ক্রিকেট লিগে গায়ানা আমাজন ওয়ারিয়র্সের বিরুদ্ধে ত্রিনিদাদ ও টোবাগো রেড স্টিল ম্যাচে এক ওভারে দরকার ছিল ১২ রানের। গায়ানা আমাজন ওয়ারিয়র্সের হয়ে নেমে নারিন সে দিন একার হাতেই শেষ করে দিয়েছিলেন রেড স্টিলকে।
৩। ক্রিস গেইল— সবচেয়ে বেশি ছয় (১৭টি)
ক্যালিপ্সো কিংয়ের দাপটে সে দিন বোধহয় চোখে সর্ষেফুল দেখেছিল পুণে ওয়ারিয়র্স। বেশির ভাগ বোলারের ওভারে ১৫ রানের ওপরে তুলেছিলেন গেইল। গেইলের ১০২ রান এসেছিল কেবলমাত্র ছয় মেরে!
৪। যুবরাজ সিংহ— দ্রুততম হাফ-সেঞ্চুরি (১২ বল)
ডারবানের দর্শকরা বোধহয় কোনও দিন ভুলতে পারবে না সে রাতের কথা। ভুলবেই বা কী করে? ক্রিকেটের যুবরাজ যে সে দিন ব্যাটে ঝড় তুলেছিলেন। সে দিন ছয় বলে ছয়ের রেকর্ডও এসেছিল যুবরাজের ব্যাট থেকে। হতভাগ্য বোলার ছিলেন ইংল্যান্ডের স্টুয়ার্ট ব্রড। গ্যালারিতে উড়ে যাওয়া ছয়ের বর্ণনা দিতে দিতে নিজের খোলোয়াড় জীবনেও ফিরে গিয়েছিলেন সে ম্যাচের ধারাভাষ্যকার রবি শাস্ত্রী। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে স্যর গ্যারি সোবার্সের ছয়ে-ছক্কার রেকর্ড তো এর আগে শাস্ত্রীই ভেঙেছিলেন। তা সে দিন যুবি মাত্র ১২ বলে হাফ-সেঞ্চুরিও করেন।
৫। শ্রীলঙ্কা— সর্বোচ্চ দলগত রান (২৬০)
কেনিয়ার বিরুদ্ধে টি-টোয়েন্টিতে জয়সূর্য অ্যান্ড কোম্পানি সর্বোচ্চ দলগত রানের রেকর্ড গড়েছিলেন জো’বার্গের মাটিতে। ২০০ স্ট্রাইক রেট নিয়ে একাই মাঠ মাতিয়েছিলেন সনৎ জয়সূর্য (৮৮ রান)। সঙ্গতে ছিলেন মাহেলা জয়বর্ধনে (২৭ বলে ৬৫ রান)। কম যাননি জেহান মুবারকও। ৩৫২.৮৪ স্ট্রাইক রেটে ১৩ বলে ৪৬ করেছিলেন তিনি। আর ২০ ওভারে ২৬০ রান করেছিল শ্রীলঙ্কা। যা কোনও দেশের ক্ষেত্রে সর্বাধিক স্কোর।
৬। কাইল অ্যাবট— ইনিংসে সবচেয়ে বেশি রান দেওয়া বোলার (৬৮)
দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ২৩২ রান তাড়া করতে নেমে একটি রুদ্ধশ্বাস ম্যাচ জিতেছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। মূলত ফাফ দু’প্লেসির শতরানের জেরে ম্যাচ পকেটে মনে হলেও শেষ মুহূর্তে তা প্রোটিয়াদের হাত ফস্কে যায়। ৪ উইকেটে ম্যাচ জিতে নেয় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। আর ৪ ওভারে ৬৪ রান দিয়ে রেকর্ড বইয়ে জায়গা করে নেন কাইল অ্যাবট।
৭। ক্রিস গেইল— দ্রুততম সেঞ্চুরি (৩০ বল)
এ তালিকাতেই গেইল ঝড়। ম্যাচও একই— ২০১৩-র আইপিএলে পুণে-বেঙ্গালুরু। ৩০ বলে সেঞ্চুরি করে দলকে ২৬৩ রানের টাগের্ট দেন গেইল।
৮। আরুল সুপ্পাইয়া— সেরা বোলিং ফিগার (৫ রানে ৬ উইকেট)
২০০৮-এর আইপিএলে রাজস্থানের হয়ে সোহেল তনভিরের গড়া রেকর্ডটা মাটি করেছিলেন তাঁরই সতীর্থ আরুল সুপ্পাইয়া। ইংল্যান্ড কাউন্টি সমারসেটের হয়ে মাত্র ৩.৪ ওভারে ৫ রান দিয়ে ৬ উইকেট নিয়ে গ্ল্যামারগনকে একার হাতে শেষ করে দেন সুপ্পাইয়া।
৯। শ্রীলঙ্কা—রানের ভিত্তিতে সবচেয়ে বড় ব্যবধানে জয় (১৭২ রান)
জো’বার্গের মাটিতে কেনিয়ার বিরুদ্ধে মাহেলা ও জয়সূর্যের যুগলবন্দিতে ১৭২ রানের ব্যবধানে জয় পেয়েছিল শ্রীলঙ্কা।