এদের কেউ দেশের অন্যতম সেরা বোলার, কেউ আবার বিশ্বের সর্বকালের অন্যতম সেরা অলরাউন্ডার। বল হাতে টেস্টে তাক লাগানো পরিসংখ্যান রয়েছে এঁদের অনেকেরই। কিন্তু ওয়ানডে ক্রিকেটে এই চ্যাম্পিয়ন বোলারদের কেউই কখনও ৫ উইকেট পাননি। তালিকায় রয়েছেন তারকা ভারতীয় স্পিনারও। দেখে নিন তেমনই কয়েক জনকে।
এই মুহূর্তে খেলছেন এমন ক্রিকেটারদের মধ্যে একমাত্র রবিচন্দ্রন অশ্বিনেরই ৫০ ওভারের ফরম্যাটে পাঁচ উইকেট নেই। ১১১ ওয়ানডে ম্যাচে তিনি নিয়েছেন ১৫০ উইকেট। এর সঙ্গে ৬৫ টেস্টে রয়েছে ৩৪২ উইকেট। তবে টেস্টে খেললেও অশ্বিন ভারতের একদিনের স্কোয়াডে অনেকদিন ধরেই নেই।
ওয়ানডে কেরিয়ারে মাত্র একবারই চার উইকেট নিয়েছেন অশ্বিন। সেটাও এসেছে সংযুক্ত আরব আমিরশাহির বিরুদ্ধে, ২০১৫ বিশ্বকাপে। ২৫ রানে চার উইকেট নিয়েছিলেন অফস্পিনার। সংযুক্ত আরব আমিরশাহি শেষ হয় ১০২ রানে। ভারত জেতে নয় উইকেটে।
ব্যাটসম্যানদের দুঃস্বপ্নে হানা দিতেন ম্যালকম মার্শাল। কিন্তু তাঁরও একদিনের ফরম্যাটে পাঁচ উইকেট নেই। ১৩৬ ওয়ানডে ম্যাচে ২৯.৯৬ গড়ে ১৫৭ উইকেট নিয়েছেন তিনি। ছয় বার এই ফরম্যাটে চার উইকেট নিয়েছিলেন এই ক্যারিবিয়ান পেসার।
১৯৯১ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে মেলবোর্নে বেনসন হেজেস ওয়ার্ল্ড সিরিজের ম্যাচে ১৮ রানে চার উইকেট পেয়েছিলেন মার্শাল। তাঁর চার শিকারের মধ্যে ছিলেন জিওফ মার্শ, ডেভিড বুন, ডিন জোন্সরা। চার ওভার মেডেন নিয়েছিলেন তিনি। তবে সেই ম্যাচ জিততে পারেনি ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
বব উইলিস ছিলেন নিজের সময়ে ইংল্যান্ডের অন্যতম সেরা পেসার। যে কোনও ব্যাটসম্যানের আতঙ্ক ছিলেন তিনি। কিন্তু তাঁরও ওয়ানডে ফরম্যাটে পাঁচ উইকেট নেই। ৬৪ একদিনের ম্যাচ খেলে ২৪.৬০ গড়ে ৮০ উইকেট নিয়েছেন তিনি।
উইলিস ওয়ানডে কেরিয়ারে চারবার নিয়েছেন চার উইকেট। ১৯৭৯ বিশ্বকাপে ম্যাঞ্চেস্টারে কানাডার বিরুদ্ধে ১১ রানে চার উইকেট তাঁর সেরা বোলিং। সেই ম্যাচে ৪৫ রানে শেষ হয়ে গিয়েছিল কানাডা। আট উইকেটে জিতেছিল ইংল্যান্ড।
ইয়ান বথাম সর্বকালের সেরা অলরাউন্ডারদের অন্যতম। ইংল্যান্ডের হয়ে ১১৬ ওয়ানডে ম্যাচে ২১১৩ রান করেছেন তিনি। সঙ্গে নিয়েছেন ১৪৫ উইকেটও। গড় ২৮.৫৪। তিনবার চার উইকেট নিয়েছেন তিনি। কিন্তু পাঁচ উইকেট পাননি একবারও।
১৯৯২ বিশ্বকাপে সিডনিতে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ৩১ রানে চার উইকেট নেওয়া বথামের এই ফরম্যাটে সেরা বোলিং। তিনি আউট করেছিলেন অজি অধিনায়ক অ্যালান বর্ডার, ইয়ান হিলি, পল টেলর ও ক্রেগ ম্যাকডারমটকে। তারপর ব্যাট করতে নেমে ম্যাচ-জেতানো অর্ধশতরানও করেছিলেন বথাম।
শোয়েব আখতার, ব্রেট লি দাপট দেখানোর আগে বিশ্বক্রিকেটের দ্রততম বোলার ছিলেন অস্ট্রেলিয়ার জেফ থমসন। টেস্টে ২০০ উইকেট ছাড়াও ৫০টি একদিনের ম্যাচে ৫৫ উইকেট নিয়েছিলেন তিনি। গড় ছিল ৩৫.৩০।
ওয়ানডে কেরিয়ারে মাত্র একবারই চার উইকেট নিয়েছিলেন থমসন। ১৯৭৮ সালে সেন্ট জনসের মাঠে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে ৬৭ রানে নেন তা। সেই ম্যাচে শতরানের পর ফিরিয়েছিলেন ডেসমন্ড হেনসকে। কিন্তু ক্যারিবিয়ানরা ৩১৩ রান তুলেছিল। অস্ট্রেলিয়া হেরেও গিয়েছিল ৪৪ রানে।
গাভিন লারসেনকে বলা হত একদিনের ক্রিকেট বিশেষজ্ঞ। নয়ের দশকে নিউজিল্যান্ডের হয়ে এই ফরম্যাটে নিয়মিত খেলতেন তিনি। বেশি জোরে বল করতেন না। কিন্তু তাঁর মিডিয়াম পেসের বৈশিষ্ট্য হল, নিখুঁত নিশানা। ফলে ব্যাটসম্যানরা মারতে পারতেন না।
১৯৯৪ সালে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ২৪ রানে চার উইকেট লারসেনের ওয়ানডে কেরিয়ারের সেরা বোলিং। তাঁর চার শিকার ছিলেন সঈদ আনোয়ার, আমির সোহেল, ইনজামাম-উল-হক, ওয়াসিম আক্রম। ১২১ একদিনের ম্যাচে তিনি নিয়েছেন ১১৩ উইকেট। গড় ৩৫.৩৯। ইকনমি রেট দুর্দান্ত, ৩.৭৬।
রঙ্গনা হেরাথ ৯৩ টেস্টে ৪৩৩ উইকেট নিয়েছেন। কিন্তু শ্রীলঙ্কার বাঁ-হাতি স্পিনার ওয়ানডে ফরম্যাটে তেমন সাফল্য পাননি। ৭১ ম্যাচে তিনি নিয়েছেন ৭৪ উইকেট। গড় ৩১.৯১। স্ট্রাইক রেট ৪.৩৭।
হেরাথ ৫০ ওভারের ফরম্যাটে মাত্র একবারই চার উইকেট নিয়েছিলেন। ২০১৩ সালে পোর্ট অফ স্পেনে ত্রিদেশীয় সিরিজের ফাইনালে ভারতের বিরুদ্ধে ২০ রানে চার উইকেট নিয়েছিলেন তিনি। রোহিত শর্মা, দীনেশ কার্তিক, রবীন্দ্র জাডেজা ও রবিচন্দ্রন অশ্বিনকে ফিরিয়েছিলেন তিনি।