প্রথম বার নিজের লিভ ইন পার্টনারের ধর্ষণের শিকার। আর দ্বিতীয় বার এক পানশালার মালিকের হাতে। সবে অভিনয়ের জগতে কেরিয়ার শুরু করেছেন। চরম অবসাদে মাত্র ২২ বছরেই আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন। তার পর জীবন বদলাল আস্তে আস্তে। শেষমেশ আর চুপ থাকতে পারলেন না হলিউড অভিনেতা ইভান র্যাচেল উড। নিজের দুঃসহ অতীতকেই তুলে ধরলেন সোশ্যাল মিডিয়ায়। মঙ্গলবার টুইটারে একটি খোলা চিঠি লিখে ফ্যানদের সব কথাই জানিয়েছেন তিনি। সেই সঙ্গে ‘রোলিং স্টোন’ ম্যাগাজিনে এক সাক্ষাৎকারে সেই দুঃস্বপ্নের দিনগুলির কথা বলেছেন ২৯ বছরের এই চোখধাঁধাঁনো সুন্দরী।
র্যাচেল জানিয়েছেন, বহু বছর আগেই তাঁর সঙ্গে ওই ঘটনাগুলি ঘটেছিল। তবে এত বছর পরে হঠাৎ মুখ খুললেন কেন? আমেরিকার হিট টেলিভিশন সিরিজ ‘ওয়েস্টওয়ার্ল্ড’-এর অভিনেতার কথায়: “আর চুপ করে থাকতে পারছিলাম না!” ধীরে ধীরে বুঝতে পারছিলেন, ওই ঘটনায় কোন ভাবেই তাঁর ‘দোষ’ ছিল না।
বাইসেক্সুয়াল হওয়ায় র্যাচেলের জীবনে পুরুষের সঙ্গে সঙ্গে নারীসঙ্গও হয়েছে। নিজের অন্ধকার অতীত নিয়ে মুখ খুলতে প্রথম দিকে জড়তা থাকলেও এখন খোলাখুলিই জানাতে চান তাঁর কথা। কিন্তু, এর আগে তিনি কোনও কথা জানাননি কেন? র্যাচেল বলেন, “ভয় ছিল, সকলে না বলে বসেন, এটা এমন কোনও বড় বিষয়ই নয়, আসলে পাবলিসিটির জন্যই আমি এ সব বলছি। অথবা কেউ যদি বলেন যে, ওগুলি আসলে ধর্ষণই নয়।”
একাধিক গ্লোডেন গ্লোব ও এমি অ্যাওয়ার্ড মনোনীত র্যাচেলের অভিনয় জীবন শুরু টেলিভিশনের পর্দায়। মাত্র সাত বছর বয়সে। মাত্র ১২ বছর বয়সেই ‘প্র্যাক্টিক্যাল ম্যাজিক’-এ অভিনয় দিয়ে নজর কাড়ে নর্থ ক্যারোলাইনায় বেড়ে ওঠা ছোট্ট র্যাচেল। ধীরে ধীরে ফিল্ম-টেলিভিশন মিলিয়ে লাইমলাইটে এসেছেন ‘ডাউন উইল কাম বেবি’, ‘প্রোফাইলার’, ‘ওয়ান্স অ্যান্ড এগেইন’, ‘মিসিং’, ‘থার্টিন’, ‘দ্য রেসলার’, ‘মিলড্রেড পিয়ার্স’ বা দ্য ‘আইডস অব মার্চ’-এ কাজের মাধ্যমে। তবে এই খ্যাতির আড়ালেই লুকিয়ে ছিল অন্ধকার দিনগুলি। মাত্র ২২-শেই মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত হয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন।
সে সব ঘটনার কথা জানাতে গিয়েই র্যাচেল টুইটারে লিখেছেন, “আমি মনে করি না, আমরা এখন এমন এক সময়ে বসবাস করি যেখানে মানুষজন বেশি দিন নিঃশ্চুপ হয়ে থাকতে পারেন। আমি তো চুপ করে থাকতে পারছিই না! যদিও জগৎ জুড়েই এখন এক ভয়ানক ধর্মান্ধতা আর সেক্সিজমের আবহাওয়া।”
টুইটারে তাঁর খোলা চিঠি পোস্ট করার পরই র্যাচেল জানিয়েছেন, আপাতত সোশ্যাল মিডিয়া থেকে বিদায় নিতে চান তিনি। তবে তাঁর কাহিনি শোনার পর র্যাচেলের পাশে দাঁড়িয়েছেন একের পর এক ফ্যান। সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁর সমর্থনে টুইট করে জানিয়েছেন, তিনি তাঁদের রোল মডেল। এক জন ফ্যান তো লিখেছেন, “আপনার ফিরে আসা পর্যন্ত আমরা এখানেই অপেক্ষায় থাকব!”
আরও পড়ুন