আমি গ্রামে বড় হলেও, বড় পরিবার হওয়ায় সব সময় পরিবারের সকলের সাপোর্ট পেয়েছি। তাই মেয়ে হিসেবে কখনও সে ভাবে বাধা আসেনি। গ্রামেও আমাদের পরিবারের একটু নামডাক ছিল। তাই হয়তো কেউ কোনও দিন ‘মেয়ে কেন হাফ প্যান্ট পরে দৌড়য়?’ এ সব বলার সাহস পেত না।
তবে কি জানেন, যখন প্রথম খেলার জন্য বাইরে গেলাম, স্পোর্টস হস্টেলে থাকতে গেলাম, তখন বাবা-মা বেশ ভয় পেতেন। হস্টেলে মেয়ে অ্যাথলিটদের নানা রকম টিটকিরি শুনতে হয়। সে সব ভেবে সব সময় চিন্তায় থাকতেন ওঁরা। আর আমাকে তো চেহারার জন্য টিটকিরি শুনতেই হত।
ভারতীয় মেয়েদের তুলনায় আমি অনেকটাই লম্বা। চেহারাও বড়সড়। তার জন্য নানা রকম কথা শুনতে হয়েছে। কেউ বলল, ‘বাব্বা! যেন জলের ট্যাঙ্কি।’ এ রকম আরও অনেক কথা। সব কিছু আর মনেও পড়ে না। তখন ভাবতাম যে কোনও মেয়েকেই টিটকিরি শুনতে হয়। সে তুমি যেই হও না কেন!
সল্টলেক স্টেডিয়ামে সোমা বিশ্বাস। আনন্দবাজার আর্কাইভ থেকে।
তবে উত্তর ভারতে এই সমস্যা অনেক বেশি। হরিয়ানার মতো রাজ্যে সাক্ষীকে অনেক প্রতিকূলতার মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছে। আমাদের রাজ্যে অনেক কম। এখন অনেক রক্ষণশীল পরিবারের মুসলিম মেয়েরা কিন্তু অ্যাথলিট হওয়ার স্বপ্ন দেখছে। বেঁচে থাকার তাগিদে হলেও তাঁরা সেই বাধা কাটিয়ে উঠতে পেরেছে।
তাই আমি জুনিয়র অ্যাথলিটদের বলব নিজের টার্গেটটা আগে স্থির কর। লক্ষ্য স্থির থাকলে কে কী বলছে সে দিকে মন দেওয়ার সময়ই থাকবে না। রাস্তায় বেরোলে কুকুর ডাকবেই, তা বলে কি তোমাকেও উল্টে ডাকতে হবে? তবে কুকুর যদি কামড়াতে আসে তখন কিন্তু অবশ্যই সেলফ ডিফেন্সের জন্য নিজেকে তৈরি করতে হবে। আর তার প্রথম ধাপ হল নিজেকে কমজোরি না ভাবা। মেয়ে বলে শারীরিক বা প্রতিভার দিক থেকে কোনও অংশে তাঁরা ছেলেদের থেকে কম নয়। তার প্রমাণ আজ সাক্ষী, সিন্ধু, দীপা।