মঙ্গল অভিযানের এ বার যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি। ফের প্রথম সারিতে দেশকে পৌঁছে দিলেন ভারতীয় গবেষণা সংস্থার (ইসরো) বিজ্ঞানীরা।
শুক্রবার বিকেল ৫টা ১৪ মিনিটে শ্রীহরিকোটার সতীশ ধবন মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্র থেকে ‘আইআরএনএসএস-১বি’ নামে একটি কৃত্রিম উপগ্রহ উৎক্ষেপণ করে। এর ১৯ মিনিট পর সেটি নির্দিষ্ট কক্ষপথে পৌঁছেও যায়। এই উপগ্রহটি ভারতের ‘গ্লোবাল পজিশনিং সিস্টেম’ ও দিক-নির্ণয় (নেভিগেশন) ব্যবস্থাকে আরও উন্নত করার প্রকল্পের অংশ বলে ইসরো জানিয়েছে। আমেরিকা, রাশিয়া, চিন, জাপান এবং ইওরোপীয় মহাকাশ গবেষণা এর আগেই এই ধরনের উপগ্রহ পাঠিয়েছে। সেই তালিকায় নতুন সংযোজন ভারত।
গত বছরই অবশ্য ‘আইআরএনএসএস-১এ’ নামে এমনই একটি উপগ্রহ পাঠিয়েছিল। কিন্তু ইসরো সূত্রের ব্যাখ্যা, সেটি ছিল প্রকল্পের প্রাথমিক কাজ। এ দিনের সাফল্যের পর প্রকল্পটি বাস্তব রূপ পেয়েছে এবং সে কারণেই এই প্রথম সারিতে উঠে আসা। ইসরো জানিয়েছে, এই ব্যবস্থার উন্নতিতে মোট সাতটি উপগ্রহ পাঠানো হবে। ১এ এবং ১বি উৎক্ষেপণের পর চলতি বছরেই আরও এই প্রকল্পের তৃতীয় ও চতুর্থ উপগ্রহটি পাঠানো হবে। পঞ্চম থেকে সপ্তমএই তিনটি উপগ্রহ আগামী বছর উৎক্ষেপণ করার পরিকল্পনা রয়েছে। ২০১৬ সাল থেকেই এই উপগ্রহগুলির সাহায্যে নতুন যোগাযোগ ব্যবস্থা কাজ করা শুরু করবে। এই উপগ্রহগুলি দেশের স্থলভূমি এবং চার দিকের সীমান্তের বাইরে ১৫০০ কিলোমিটার পর্যন্ত জিপিএস-নেভিগেশনের কাজ করবে বলেও ইসরো জানিয়েছে।
২০১৩ সালে এই ব্যবস্থার প্রথম উপগ্রহটি পাঠানো হলেও তেমন হইচই হয়নি। বরং বছরের শেষে মঙ্গলযান উৎক্ষেপণ নিয়েই সরগরম ছিল দেশ। বিষয়টি মেনে নিয়েছেন ইসরোর কর্তারাও। তবে তাঁদেরই একাংশ বলছেন, জন্মলগ্নের পর থেকেই ইসরোর মূল কাজ ছিল, মহাকাশ প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি করা। তবে আগে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতিতে যা কাজ হয়েছে, তার থেকে ‘আইআরএনএসএস বা ইন্ডিয়ান রিজিওনাল নেভিগেশনাল স্যাটেলাইট সিস্টেম’ প্রকল্পের উপগ্রহগুলির কাজ আরও উন্নত ধরনের। কী কাজ?
ইসরো সূত্রের খবর, উপগ্রহগুলির কাজ হবে বিমান, সড়ক পরিবহণে সাহায্য করা। তা ছাড়া, দেশের সামরিক ব্যবস্থায় জিপিএস প্রযুক্তির ব্যবহারও অনেক সহজ করে দেবে। এখন বিভিন্ন স্মার্টফোনে জিপিএস প্রযুক্তির ব্যবহার করা যায়। “কিন্তু সেই ব্যবহার সামরিক ক্ষেত্রে উপযোগী নয়।”বলছেন এক ইসরোর কর্তা।