তাঁর ডাকে এক বার ঘাড় ঘুরিয়েছিল বিজয়। কিন্তু দর্শকদের চিৎকারে ঢাকা পড়ে যায় তাঁর আওয়াজ। তাই প্রশিক্ষকের গলা শুনতেই পায়নি দিল্লির চিড়িয়াখানার ঘাতক সাদা বাঘটি। বিজয়ের প্রশিক্ষক শ্যামলালের আক্ষেপ, “একটু যদি দেরিতে খেতে যেতাম, তা হলে এমনটা হত না। ঘটনার সময় ওখানে থাকলে ঠিক বিজয়কে থামাতাম।” ঘটনার পরে এখন অবশ্য চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ নিরাপত্তা আরও আঁটোসাঁটো করতে উদ্যোগী হয়েছে।
জন্ম থেকেই বিজয়ের পরিচর্যা করছেন শ্যামলাল। বড় বাধ্য বাঘ সে। আর তাই বোধ হয় তার ঘাতক তকমা মানতে পারছেন না তার প্রশিক্ষক। শ্যামলালের বয়ানে, “বিজয় আমার ডাকে মুখ ফিরিয়েছিল। কিন্তু উপর থেকে দর্শকদের ক্রমাগত পাথর পড়ায় খেপে গিয়ে মকসুদকে আক্রমণ করে সে।” চিড়িয়াখানার কিউরেটর রিয়াজ খানও বলেন, “বাঘটি প্রথমে মোটেই আক্রমণ করতে যায়নি। বরং খেলার ছলে হাত বাড়িয়ে দিয়েছিল।”
শান্ত স্বভাবের জন্যই হয়তো তাকে নিয়ে নিশ্চিন্ত ছিলেন শ্যামলাল। চিড়িয়াখানার নিয়ম অনুযায়ী প্রতি দিন দুপুরে তিনটি সাদা বাঘের মধ্যে একটিকে পরিখা-চত্বরে ছেড়ে দেওয়া হয়। সে দিন ছিল বিজয়ের পালা। তাকে ছেড়ে দিয়ে খেতে যান শ্যামলাল। তবে অন্য দিনের তুলনায় একটু বেশিই দেরি হয়েছিল সে দিন। না হলে হয়তো দুর্ঘটনা এড়ানো যেত, মনে করেন মধ্যবয়সী ওই প্রশিক্ষক। তবে শ্যামলাল এ-ও জানিয়েছেন, মকসুদ বাঘের সামনে পড়ে যেতেই খাবার ফেলে ছুটে এসেছিলেন তিনি। খাঁচার বাইরে থেকে দরজায় আওয়াজ করে, বিজয়-বিজয় করে চিৎকার করে দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টাও করেন শ্যামলাল। ভিডিও ফুটেজে দেখা যাচ্ছে, তখন মকসুদকে ফেলে এক বার পিছনে তাকায় বিজয়। খোঁজে প্রশিক্ষককে। রিয়াজ বলেন, “তত ক্ষণে দর্শকদের চিৎকারে প্রশিক্ষকের গলা চাপা পড়ে গিয়েছে। শ্যামলালের আওয়াজ বিজয়ের কানে পৌঁছনোর আগেই দর্শকদের মধ্যে থেকে একটি বড় পাথর এসে পড়ে তার গায়ে।”
আর তাতেই খেপে যায় বিজয়। রিয়াজের বক্তব্য, “বিজয় সম্ভবত ধরে নেয় মকসুদই আক্রমণকারী। তাই তখনই মকসুদের টুঁটি চেপে ধরে।” তবে মকসুদ নেতিয়ে পড়েছে দেখে তাকে মুখ থেকে ফেলে দেয় বিজয়। শ্যামলালের কথায়, “তার পরেই বিজয় আবার বাধ্য ছেলে। হাবভাবও স্বাভাবিক। যেন কিছুই হয়নি।”
তাতে অবশ্য নিশ্চিন্ত হচ্ছেন না চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ। কালকের মতো আজও তাই খাঁচাবন্দিই ছিল বিজয়। আগামী দু’-তিন দিন তাকে পর্যবেক্ষণে রাখা হবে। রিয়াজ বলেন, “সব ঠিক থাকলে আগামী সোমবার বিজয়কে দেখতে পাবেন দর্শকেরা।” কর্তৃপক্ষের আরও দাবি, বিজয় সুস্থ, স্বাভাবিক। দোষ ছিল আংশিক ভাবে মানসিক ভারসাম্যহীন মকসুদেরই। প্রশিক্ষক শ্যামলালও তা-ই মনে করেন।
তবু অস্বস্তি যাচ্ছে না তাঁর। ঘটনার দু’দিন পরেও মকসুদের ক্ষতবিক্ষত মুখ ভাসছে শ্যামলালের চোখে। “কেন তখন ছিলাম না?” আফশোস যাচ্ছে না বিজয়ের প্রশিক্ষকের।
হাতির তাণ্ডব
নিজস্ব সংবাদদাতা • সোনামুখী
এক রাতে কয়েকশো বিঘা জমির ধানের ক্ষতি করেছে হাতির পাল। বৃহস্পতিবার সকালে বন দফতরের সোনামুখী রেঞ্জ অফিসে এসে বিক্ষোভ দেখালেন সোনামুখী থানার অনন্তবাটি, মাস্টারডাঙা-সহ বেশ কিছু গ্রামের বাসিন্দা। দ্রুত ক্ষতিপূরণের দাবিতে সোনামুখীর বিডিওর কাছেও স্মারকলিপিও দেন তাঁরা। অনন্তবাটি গ্রামের বাসিন্দা উদয় ঘোষের ক্ষোভ, “এক সপ্তাহের বেশি হয়ে গেল, প্রায় দেড়শো হাতির একটা দল দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। বুধবার রাতে শুধুমাত্র আমাদের গ্রামেই ৮০ বিঘা জমির ফসল গেছে হাতিদের পেটে। অথচ হাতিদের তাড়ানোর কোনও ব্যবস্থাই নিচ্ছে না বন দফতর।” বিডিও (সোনামুখী) বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য বলেন, “বন দফতরকে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। শীঘ্রই বন দফতরের সঙ্গেও বৈঠকে বসা হবে।”
মৃত চিতাবাঘ
গাড়ি চাপা পড়ে মৃত্যু হল একটি চিতাবাঘের। বন দফতর সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার মধ্যপ্রদেশের সিলওয়ানি-ভোপাল সড়কে ঘটনাটি ঘটেছে। স্থানীয় গ্রাম থেকে একটি গরু ধরে এনে রাস্তায় সেটি খাচ্ছিল চিতাবাঘটি। সে সময়েই একটি গাড়ির ধাক্কায় মৃত্যু হয় তার। গাড়িটির পরিচয় জানা যায়নি।