এক ফুটের স্কেলের অর্ধেকেরও কম এই ক্রিসমাস ট্রি-র উচ্চতা। ছবি সৌজন্যে- টেকনিক্যাল ইউনিভার্সিটি অব ডেনমার্ক।
এ বার বড়দিনের নতুন চমক— বিশ্বের সবচেয়ে পাতলা ‘ক্রিসমাস ট্রি’।
কোনও ব্যাক্টেরিয়া যতটা পুরু হয়, তার তিন হাজার ভাগের এক ভাগ পুরু সেই গাছ। কাগজে পেন্সিল দিয়ে আঁকার পর সেটি কেটে নিলে যতখানি পুরু দেখায়, তার দশ হাজার ভাগের এক ভাগ মাত্র।
পদার্থের ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র পরমাণুর ব্যাসের সমান। বিশ্বের সবচেয়ে পাতলা এই ক্রিসমাস ট্রি বানিয়েছে টেকনিক্যাল ইউনিভার্সিটি অব ডেনমার্ক। গ্র্যাফিন দিয়ে। যা বহুরূপী কার্বনেরই একটি রূপ। যার অন্য রূপটি পেন্সিলের সিস। যা আদতে গ্র্যাফাইট।
বিশ্বের সবচেয়ে পাতলা তো বটেই, বিজ্ঞানীদের বানানো এই ক্রিসমাস ট্রি উচ্চতাতেও খুব কম। একটি এক ফুটের স্কেলের অর্ধেকেরও কম এই ক্রিসমাস ট্রি-র উচ্চতা (১৪ সেন্টিমিটার বা সাড়ে পাঁচ ইঞ্চি)। গ্র্যাফিনে থাকা কার্বনের শুধুমাত্র একটি স্তর দিয়ে এটি বানানো হয়েছে। তাই এটি একটি কার্বন পরমাণুর ব্যাসের চেয়ে বেশি পুরু নয়। ১০ মিটার দীর্ঘ গ্র্যাফিনের রোল থেকে কেটে নিয়ে বানানো হয়েছে এই ক্রিসমাস ট্রি।
শনিবার বড়দিন বলেই ক্রিসমাস ট্রি। যদিও বিজ্ঞানীদের আদত উদ্দেশ্য ক্রিসমাস পালন করা ছিল না। কী ভাবে খুব কম জায়গায় অত্যন্ত সুপরিবাহী গ্র্যাফিনকে ঢুকিয়ে নানা ধরনের ইলেকট্রনিক গ্যাজেট্স বানানো যায় তারই গবেষণা চালিয়েছেন ডেনমার্কের টেকনিক্যাল ইউনিভার্সিটির বিজ্ঞানীরা।
গ্র্যাফিন আদতে দ্বিমাত্রিক। তা তৈরি হয় কার্বন পরমাণুর শুধুমাত্র একটি স্তর দিয়ে। তাই যে কোনও পরিচিত মৌলের চেয়ে এটি বেশি শক্তপোক্ত হয়। সবচেয়ে বেশি তাপ ও বিদ্যুৎ পরিবাহীও হয় এটি। তামার পাতের চেয়ে তার পরিবাহিতা অন্তত ১৫০ গুণ বেশি।
তাই যে কোনও ইলেকট্রনিক সার্কিট তৈরি করতে গ্র্যাফিনেরই দরকার হয় সবার আগে। কারণ, সেই সার্কিটে গ্র্যাফিন ব্যবহার করলে তা খুব হাল্কা হয়। জায়গায় লাগে খুব সামান্য। তাকে অনায়াসে প্রয়োজন মতো বাঁকিয়েচুরিয়ে নেওয়া যায়। আবার তাপ ও বিদ্যুৎ পরিবাহিতার ক্ষেত্রেও তা সর্বোত্তম।