বরফে গলছে অ্যান্টার্কটিকার। ছবি- রয়টার্স।
আন্টার্কটিকা এর আগে এতটা গরমে তেতে ওঠেনি আর কখনও! এমনকি, কোনও গ্রীষ্মেও।
দক্ষিণ মেরুর উত্তর প্রান্তের ‘এসপ্যারেঞ্জা বেসে’র তাপমাত্রা ছুঁয়ে ফেলেছে ১৮.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ফারেনহাইটের মানদণ্ডে ৬৪.৯৪ ডিগ্রি। আন্টার্কটিকার ইতিহাসে যা একটি রেকর্ড।
তার ফলে, আন্টার্কটিকার বরফের বিশাল বিশাল পুরু চাঙড়গুলি ভেঙে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। ভাঙলেই দ্রুত বরফ গলতে শুরু করবে আন্টার্কটিকার। চিড় ধরতে শুরু করেছে আন্টার্কটিকার বিশাল বিশাল গ্লেসিয়ারগুলিতেও। পরিণতিতে আর ১০০ বছরে অন্তত ১০ ফুট উঠে আসতে পারে সমুদ্রের জল-স্তর। তাতে বহু দেশের বহু শহর তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা।
আরও পড়ুন- বন কেটে বসতের দৌরাত্ম্যে দেশে ‘উষ্ণতম দ্বীপ’ এখন কলকাতা, জানাল আইআইটি
আন্টার্কটিকার এই ‘জ্বর’ সর্বকালীন রেকর্ড!
বিশ্বের ১৯৩টি সদস্য দেশের সংগঠন ‘ওয়ার্ল্ড মেটিওরোলজিক্যাল অর্গানাইজেশন (ডব্লিউএমও)’ শুক্রবার এই খবর দিয়েছে। গত বৃহস্পতিবারই গায়ের ‘জ্বর’ মাপা হয়েছে আন্টার্কটিকার।
যে হারে বরফ গলছে আন্টার্কটিকার। ছবি- রয়টার্স
‘ডব্লিউএমও’ জানিয়েছে, উষ্ণায়নের দরুন কুমেরুর এই তাপমাত্রা বৃদ্ধি আগের সব রেকর্ডকে ভেঙে দিয়েছে। ২০১৫ সালে আন্টার্কটিকার একটি অংশের তাপমাত্রা বেড়ে গিয়ে পৌঁছেছিল ১৭.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা সাড়ে ৬৩ ডিগ্রি ফারেনহাইটে।
৩ বছরে তাপমাত্রা-বৃদ্ধি ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস
গত তিন বছরে আন্টার্কটিকার ওই অংশের তাপমাত্রা বেড়েছে প্রায় ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ২০১৫-র প্যারিস জলবায়ু চুক্তিতে বলা হয়েছিল, বাতাসে গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমনের পরিমাণ উল্লেখযোগ্য ভাবে কমাতে না পারলে ২১০০ সালে পৃথিবীর ভূপৃষ্ঠের তাপমাত্রা অন্তত ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেড়ে যাবে। তাতে দুই মেরুর বরফ খুব দ্রুত গলতে শুরু করবে। যার জেরে উদ্বেগজনক ভাবে উঠবে সমুদ্রের জল-স্তর। যা সুমুদ্রোপকূলবর্তী বহু দেশের বহু শহরকে গ্রাস করবে। শহরগুলি চলে যাবে অতলান্ত জলের তলায়।
Temperatures in Antarctica reached 65 degrees Fahrenheit (18.3 degrees Celsius) on Thursday, the highest ever in its recorded history https://t.co/Rq8KAFMfCd pic.twitter.com/kSMkyQxTvD
বিশ্বে সবচেয়ে দ্রুত উষ্ণ হয়ে উঠছে অ্যান্টার্কটিকাই
ডব্লিউএমও-র মুখপাত্র ক্লেয়ার নুলিস বলেছেন, ‘‘গ্রীষ্মেও কোনও দিন আন্টার্কটিকার তাপমাত্রা এতটা বেড়ে যায়নি। এমনকি, তা তিন বছর আগের রেকর্ডকেও (১৭.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস) ভেঙে দিয়েছে।’’
আরও পড়ুন- সকালে গাছের ঘুম ভাঙে কখন কী ভাবে, এই প্রথম দেখল নাসার ‘ইকোস্ট্রেস’
নুলিস এও জানিয়েছেন, সুমেরু নয়, পৃথিবীতে সবচেয়ে দ্রুত হারে গরম হচ্ছে আন্টার্কটিকাই (কুমেরু)। তার ফলে, আগামী এক বা দুই শতকে সমুদ্রের জল-স্তর উঠে আসবে অন্তত ৩ মিটার বা ১০ ফুট।
দ্রুত গলে যাচ্ছে আন্টার্কটিকার বরফ। ছবি- রয়টার্স
কী হারে বরফ গলছে আন্টার্কটিকার?
ডব্লিউএমও-র মুখপাত্র বলছেন, ‘‘আগে বছরে যে পরিমাণে বরফ গলত আন্টার্কটিকায়, ১৯৭৯ থেকে ২০১৭, এই ৩৯ বছরে তা ৬ গুণ বেড়েছে।’’