প্রতীকী ছবি
কালো মেঘে ঢাকা আকাশ কিংবা দিনভর বৃষ্টির পূর্বাভাস নেই। তবুও আজ, রবিবার কলকাতা-সহ রাজ্যে সূর্যগ্রহণ দেখা নিয়ে দোলাচল পুরোপুরি কাটল না। হাওয়া অফিসের পূর্বাভাস, ওড়িশার কাছে একটি ঘূর্ণাবর্ত থাকার ফলে আকাশে মেঘের আনাগোনা থাকবে। আকাশ আংশিক মেঘাচ্ছন্ন থাকতে পারে। তবে গ্রহণ দেখা যাবে না, এ কথাও নিশ্চিত ভাবে বলা যাচ্ছে না। আলিপুর আবহাওয়া দফতরের অধিকর্তা গণেশকুমার দাস বলছেন, ‘‘গ্রহণ চলার সময় মেঘ আসবে কি না বা এলেও তা কত ক্ষণ স্থায়ী হবে, তার উপরেই গ্রহণ দেখা নির্ভর করছে।’’ গ্রহণ চলাকালীন মেঘের গতিবিধি কী হবে তা অবশ্য এত আগে বলা সম্ভব নয় বলেই আবহবিদেরা জানান। ভরদুপুরে আচমকা আকাশ সাফ হয়ে গেলে নির্ঝঞ্ঝাটে গ্রহণ দেখা যেতেই পারে।
আজ, সূর্যের বলয়গ্রাস গ্রহণ। তবে কেন্দ্রীয় সরকারি সংস্থা পজিশন্যাল অ্যাস্ট্রোনমি সেন্টারের অধিকর্তা সঞ্জীব সেন জানান, উত্তরাখণ্ডের দেহরাদূন ও হরিয়ানার সিরসার মতো জায়গায় বলয়গ্রাস দেখা যাবে। দেশের বাকি সব জায়গা থেকে আংশিক গ্রহণ দেখা যাবে। কলকাতায় গ্রহণ শুরু হবে সকাল ১০টা ৪৬ মিনিটে। শেষ হবে বেলা ২টো ১৭ মিনিটে। কলকাতায় সূর্যের সর্বোচ্চ ৬৬ শতাংশ ঢাকা পড়তে দেখা যেতে পারে।
মহাজাগতিক ঘটনা পর্যবেক্ষণের ক্ষেত্রে মেঘের বাধা নতুন নয়। ২০০৯ সালের জুলাই মাসে বিরল একটি সূর্যগ্রহণ দেখার জন্য পূর্ব ভারতে সব থেকে উপযুক্ত জায়গা ছিল পটনা। দেশ-বিদেশ থেকে বিজ্ঞানী ও উৎসাহী মানুষেরা সেখানো জড়ো হয়েছিলেন। কিন্তু গ্রহণের ঠিক আগেই বর্ষার মেঘ এসে আকাশ ঢেকে দিয়েছিল, তাই বিরল দৃশ্য চাক্ষুষ করা যায়নি। ২০১২ সালের জুন মাসে আরেক বিরল ঘটনা সূর্যের উপর দিয়ে শুক্রের সরণ দেখা গিয়েছিল। সে দিন আবার আকাশে মেঘ জমলেও দ্রুত সরে গিয়েছিল। তাই বিনা বাধায় সেই ঘটনা পর্যবেক্ষণ করা গিয়েছিল। ফলে আজ, রবিবার কী হবে তা নিয়ে দোলাচল রয়েই যাচ্ছে।
এই দোলাচলের মধ্যে অবশ্য বিভিন্ন গবেষণা সংস্থা এবং মহাকাশবিজ্ঞানে উৎসাহীরা গ্রহণ দেখার তোড়জোড় করছেন। কলকাতার ইন্ডিয়ান সেন্টার ফর স্পেস ফিজ়িক্সের অধিকর্তা পদার্থবিজ্ঞানী সন্দীপ চক্রবর্তী জানান, ইচ্ছে থাকলেও করোনা পরিস্থিতির জেরে তাঁরা উত্তরাখণ্ডে যেতে পারেননি। তাই কলকাতায় ই এম বাইপাস সংলগ্ন সংস্থার নতুন ভবন এবং মেদিনীপুর ও মালদহ থেকে তাঁদের তিনটি দল গ্রহণ পর্যবেক্ষণ করবেন। টেলিস্কোপের মাধ্যমে গ্রহণের তথ্য জোগাড় করা ছাড়াও দু’টি রেডিয়ো অ্যান্টেনার মাধ্যমেও গ্রহণ চলাকালীন আয়নোস্ফিয়ারের পরিবর্তন সংক্রান্ত তথ্যও সংগ্রহ করা হবে। সেগুলি পদার্থবিদ্যায় গুরুত্বপূর্ণ গবেষণায় উপযোগী বলেও তিনি জানান। সন্দীপবাবু বলেন, ‘‘যেহেতু সূর্যের প্রায় ৯৯ শতাংশ চাঁদের আড়ালে ঢাকা পড়বে, তাই অনাবৃত বলয়টি সরু হলেও দেখতে খুবই আকর্ষণীয় হতে পারে। সেটা উত্তরাখণ্ড, হরিয়ানা থেকেই দেখা যেতে পারে।’’
আরও পড়ুন: এক অন্য করোনা রহস্যের সন্ধান