তাপপ্রবাহ থেকে বাঁচতে। ছবি- টুইটারের সৌজন্যে।
গত শুক্রবার থেকে শুধু কানাডার ভ্যাঙ্কুভারেই তাপপ্রবাহে মৃত্যু হয়েছে ১৩৪ জনের। ভ্যাঙ্কুভার থেকে ১৫৫ মাইল পূর্বে ব্রিটিশ কলম্বিয়ার লিটনের টানা ৩ দিন ধরে তাপমাত্রা ৪৯.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। কানাডার ইতিহাসে যা সর্বকালীন রেকর্ড।
কেন ভয়ঙ্কর তাপপ্রবাহে পুড়ছে প্রশান্ত মহাসাগরের উত্তর পশ্চিমাংশ? কেন গা পোড়ানো তাপে এখন ত্রাহি ত্রাহি অবস্থা কানাডার? কত দিন ধরেই বা চলবে এই তাপপ্রবাহ?
আবহাওয়াবিদরা জানাচ্ছেন, এর জন্য তো বিশ্ব উষ্ণায়ন অবশ্যই দায়ী। যার জন্য দায়ী মানুষই। উত্তরোত্তর বেড়ে চলা গ্রিনহাউস গ্যাসের পরিমাণ উষ্ণায়নের গতি বাড়াচ্ছে। তবে এ ক্ষেত্রে আরও একটি কারণ রয়েছে। যার নাম তাপগম্বুজ (হিট ডোম)। যা এক হাজার বছরে একবার হয়।
আবহবিজ্ঞানের পরিভাষায় তাপগম্বুজ বলতে বোঝায় অত্যন্ত উষ্ণ বায়ুর সুউচ্চ পাহাড়। যার মধ্যে খুব আলোড়ন হয়। ফলে বিশাল বিশাল তরঙ্গের সৃষ্টি হয়। বায়ুমণ্ডলের উপরের স্তরে যখন সেই উষ্ণ বাতাস খুব জোরে বইতে থাকে তখন তার মধ্যে আরও বেশি তরঙ্গের জন্ম হয় বলে তা দ্রুত প্রসারিত হওয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু বায়ুমণ্ডল তার নির্দিষ্ট চাপ বজায় রাখতে গিয়ে সেই তরঙ্গকে বেশি দূর এগোতে বাধা দেয়। তাকে একটি নির্দিষ্ট জায়গার মধ্যে ধরে রাখে। এই ভাবেই তৈরি হয় তাপগম্বুজ।
আরও পড়ুন
এখনও দ্বিতীয় টিকা পাননি রাজ্যে ৮.৫ লক্ষ, তাঁদের জন্য ৫০% বরাদ্দের নির্দেশ
আরও পড়ুন
কার্যকারিতা থেকে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া, মর্ডানা টিকা নিয়ে আপনার যাবতীয় প্রশ্নের উত্তর
কানাডার ক্ষেত্রে এ বার সেটাই ঘটেছে। প্রশান্ত মহাসাগরের উত্তর পশ্চিম দিকের বায়ুমণ্ডলের উপরের স্তরের এখন এটাই অবস্থা। যা উষ্ণ বায়ুর তরঙ্গকে এগোতে বাধা দিচ্ছে। তাকে একটি জায়গায় আটকে রাখছে।
তাপমাত্রা এতটা বাড়ছে কেন?
আবহাওয়াবিদদের ব্যাখ্যা, এর ফলে ওই এলাকার বায়ুমণ্ডলে খুব সঙ্কোচন ঘটছে। বায়ু প্রসারিত হতে না পেরে সঙ্কুচিত হয়ে পড়ছে। তার জন্য যে বাড়তি চাপের জন্ম হচ্ছে তা থেকেই তাপশক্তির উদ্ভব হচ্ছে। সেই তাপপ্রবাহ উপর থেকে নীচে নেমে আসছে বলে আরও তাপশক্তির জন্ম হচ্ছে। এমন ঘটনা এক হাজার বছরে হয় এক বার। তবে তার মানে এই নয় যে আগামী ১ হাজার বছরের মধ্যে এমন ঘটনা আর ঘটবে না ওই এলাকায়। সেটার কারণ হবে উষ্ণায়ন। যার জন্য দায়ী মানুষই।
এই তাপপ্রবাহ কত দিন চলবে কানাডায়?
আবহাওয়াবিদদের ধারণা, খুব সম্ভবত এই সপ্তাহেই কানাডা রেহাই পাবে এই ভয়ঙ্কর তাপপ্রবাহ থেকে।