ছবি রয়টার্স।
আকারে চাঁদের থেকে একটু ছোট। কিন্তু তাতেই রয়েছে পৃথিবীর চেয়ে বহু গুণ বড় প্রকাণ্ড সমুদ্র। বৃহস্পতি-র উপগ্রহ ‘ইউরোপা’কে নিয়ে তাই বিজ্ঞানীমহলে জল্পনা তুঙ্গে। সম্প্রতি একটি গবেষণায় দাবি করা হয়েছে, ইউরোপা-র সাগরের জল প্রাণের অনুকূল হলেও হতে পারে।
তবে কি মানুষের বসবাসযোগ্য তুষারশুভ্র এই উপগ্রহটি? আগে কি এখানের প্রাণের অস্তিত্ব ছিল? এমনই সব প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে। ইউরোপা-র সমুদ্রটি রয়েছে তার উপপৃষ্ঠে। উপরে বরফের মোটা চাদর। বিজ্ঞানীদের অনুমান, জলসমৃদ্ধ একাধিক খনিজ রয়েছে এই উপগ্রহে। তার থেকেই জলের সৃষ্টি। উপগ্রহের পৃষ্ঠে উপস্থিত তেজস্ক্রিয় পদার্থগুলির বিকিরণে যে উত্তাপ তৈরি হয়েছিল, তাতে হয়তো ওই জলসমৃদ্ধ খনিজগুলো থেকে জল বেরিয়ে আসে। এ ভাবেই হয়তো বহু বহু সময়কাল আগে তৈরি হয়েছিল সমুদ্র। এখন সেটি লুকিয়ে রয়েছে মোটা বরফের স্তরের নীচে। এই বরফের চাদর দেখেই মহাকাশ বিজ্ঞানীদের নজরে পড়েছিল ইউরোপা।
পৃথিবীর বাইরে মহাবিশ্বে প্রাণের অনুকূল, এমন গ্রহের সন্ধান চলছে দীর্ঘদিন ধরেই। সেই তালিকায় মঙ্গল, শনির উপগ্রহ এনসেলাডাস-এর পাশাপাশি নাম রয়েছে ইউরোপা-রও। বাসযোগ্য কি না সে প্রশ্নে নাসার জেট প্রোপালশন ল্যাবরেটরির বিজ্ঞানী, তথা এই গবেষণার প্রধান, মোহিত মেলওয়ানি দাসওয়ানি বলেন, ‘‘যখন সমুদ্রটি হয়েছিল, তখন হয়তো বাসযোগ্য ছিল। আমাদের কাছে থাকা তথ্য বলছে, ইউরোপার সমুদ্রের জল সামান্য অ্যাসিডিক। এতে কার্বন ডাই-অক্সাইড ও কিছু সালফেট লবণ রয়েছে।’’ তিনি জানান, যে সব মাইক্রোবসের জীবনধারণের জন্য কার্বন ডাই-অক্সাইড অনুকূল, তাদের অস্তিত্ব অতীতে থাকতেই পারে। তবে এখন সেটির অবস্থা কী, সে সম্পর্কে বিশদ তথ্যপ্রমাণ নেই মোহিতদের কাছে। অর্থাৎ মানুষের বাসযোগ্য কি না ইউরোপা, সে প্রশ্নের উত্তর মিলতে ঢের দেরি। তবে এ কথা অনস্বীকার্য, পৃথিবীর বহু গুণ বেশি জলরাশি নিয়ে ইউরোপা-র ৬৫ থেকে ১৬০ কিলোমিটার গভীর সমুদ্র ‘জীবন-রহস্যে’ টইটম্বুর।