চাঁদের মাটিতে চন্দ্রযান-৩-এর ল্যান্ডার বিক্রম। ছবি: ইসরো।
চাঁদে চন্দ্রযান-৩-এর কীর্তি যেন ‘শেষ হয়েও হইল না শেষ’। সূর্য ডুবে গিয়েছে। রোভারকে ‘ঘুম পাড়িয়ে’ দিয়েছে ইসরো। তার পরেও কাজ করে চলেছে ল্যান্ডার বিক্রম। চাঁদে প্রত্যাশা ছাপিয়ে চলছে ইসরোর অনুসন্ধান। সোমবার ভারতের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা জানিয়েছে, চাঁদের মাটিতে দ্বিতীয় বার অবতরণ (সফ্ট ল্যান্ডিং) করেছে বিক্রম।
ইসরোর টুইট অনুযায়ী, চাঁদের মাটিতে আবার বিক্রম ল্যান্ডারের ইঞ্জিন জ্বালানো হয়েছে। আচমকা সেখানে লাফ দিয়েছে ল্যান্ডারটি। মাটি থেকে ৪০ সেন্টিমিটার পর্যন্ত উঠে কিছু দূরে অবতরণ করেছে। ইসরোর নিয়ন্ত্রণে থেকেই এই কাজ করে দেখিয়েছে ল্যান্ডার। পূর্ব অবস্থান থেকে ৩০-৪০ সেন্টিমিটার দূরে গিয়ে নেমেছে বিক্রম। ইসরো সেই মুহূর্তের একটি ভিডিয়ো প্রকাশও করেছে।
ভিডিয়োতে দেখা গিয়েছে, ধীরে ধীরে চারদিকে ধুলো ছড়িয়ে পড়ছে। বিক্রম ল্যান্ডারের কিছু অংশও ভিডিয়োতে ধরা পড়েছে। বিক্রমের ক্যামেরাতেই সেই মুহূর্ত ধরা পড়েছে।
ইসরো জানিয়েছে, চন্দ্রযান-৩ অভিযানের যে যে উদ্দেশ্য ছিল, তা ইতিমধ্যেই সফল হয়েছে। এর পরেও প্রত্যাশা ছাপিয়ে কাজ করছে বিক্রম। ইসরোর নির্দেশেই ল্যান্ডারটি লাফ দিয়ে এই পরীক্ষাটি করেছে।
এই পরীক্ষার গুরুত্ব কী? ইসরোর দাবি, ভবিষ্যতে চাঁদের মাটিতে মহাকাশচারী পাঠানো কিংবা অন্য যে কোনও অভিযানে এই পরীক্ষাটি কাজে লাগবে। বিক্রমের এই পরীক্ষাকে ‘হপ এক্সপেরিমেন্ট’ বলা হচ্ছে।
চন্দ্রযান-৩-এর যাবতীয় যন্ত্রপাতি স্বাভাবিক রয়েছে। কোথাও কোনও গোলমাল এখনও দেখা দেয়নি বলে জানিয়েছে ইসরো। ল্যান্ডারের সঙ্গে চ্যাস্টে, ইলসার মতো যে পেলোডগুলি ছিল, সেগুলিকে গুটিয়ে নেওয়া হয়েছে। রোভারকে আগেই পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে ‘ঘুমের দেশে’ (স্লিপ মোড)।
গত ২৩ অগস্ট চাঁদের দক্ষিণ মেরুর কাছে সফল ভাবে অবতরণ করেছিল বিক্রম। তার পেট থেকে বেরিয়ে এসেছিল প্রজ্ঞান। ছ’চাকা বিশিষ্ট এই রোভার তার পর থেকে ঘুরে ঘুরে চাঁদের মাটিতে নানাবিধ অনুসন্ধান চালিয়েছে। ইসরো চাঁদের মাটিতে সালফার এবং অন্যান্য খনিজের উপস্থিতির খোঁজ পেয়েছে। ১০০ মিটারের বেশি পথ অতিক্রম করেছে রোভার। চাকার সঙ্গে চাঁদের মাটিতে এঁকে দিয়েছে ইসরোর লোগো এবং ভারতের অশোকস্তম্ভের ছবি।