নাসার পারসিভেরান্স (বাঁ দিকে উপরে), চিন (বাঁ দিকে নীচে) ও আমিরশাহির (ডান দিকে) মহাকাশযান। -ফাইল ছবি।
এই ফেব্রুয়ারি সভ্যতার কাছে যেন মঙ্গলের মাস!
একটা নয়, তিন-তিনটে মহাকাশযান এ মাসেই পৌঁছচ্ছে লাল গ্রহে। একটি আমেরিকার, অন্যটি চিনের। বাকি মহাকাশযানটি সংযুক্ত আরব আমিরশাহির। তিনটিই যাত্রা শুরু করেছিল গত জুলাইয়ে।
তিনটির মধ্যে দু’টি মহাকাশযানে আছে ল্যান্ডার ও রোভার। আমেরিকা ও চিনের। একটি, নাসার পাঠানো ‘পারসিভেরান্স’ রোভার। যা মঙ্গলে পা ছোঁয়াবে ১৮ ফেব্রুয়ারি। পরে যার থেকে ওড়ানো হবে হেলিকপ্টারও। ‘ইনজেনুইটি’। ৫ বার ওড়ানো হবে বিভিন্ন সময়। প্রতি বার মিনিট দেড়েকের জন্য। প্রাণের সন্ধানে। এই প্রথম অন্য কোনও গ্রহে হেলিকপ্টার ওড়াতে চলেছে সভ্যতা।
সঙ্গে ল্যান্ডার ও রোভার নিয়ে যাওয়া দ্বিতীয় মহাকাশযানটি পাঠিয়েছে চিনা মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ‘চায়না ন্যাশনাল স্পেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (সিএনএসএ)’। তাদের পাঠানো তিয়ানওয়েন-১ মঙ্গলের কক্ষপথে ঢুকে পড়বে ১০ ফেব্রুয়ারি। আর লাল গ্রহের ‘ইউটোপিয়া’ এলাকায় তার সঙ্গে থাকা ল্যান্ডারটির পা ছোঁয়ানোর কথা মে মাসে।
সংযুক্ত আরব আমিরশাহির পাঠানো মহাকাশযান ‘আল-আমাল’ (আশা)-এ অবশ্য কোনও ল্যান্ডার, রোভার নেই। এটি শুধুই মহাকাশযান। মঙ্গলের বিভিন্ন কক্ষপথ প্রদক্ষিণ করে যাবে আল-আমাল।
৩টি মহাকাশযানেরই উদ্দেশ্য লাল গ্রহকে আরও ভাল ভাবে চেনা, বোঝা। সেই গ্রহ সম্পর্কে নানা ধরনের তথ্য সংগ্রহ করা। যা খতিয়ে দেখে বোঝা যাবে লাল গ্রহে সত্যিই কোনও কালে প্রাণ ছিল কি না, থাকলে কত কোটি বছর আগে। জানার চেষ্টা থাকবে, এখনও প্রাণ সেখানে কোনও ভাবে টিঁকে আছে কি না। লাল গ্রহের ঋতুগুলি ঠিক কেমন ধরনের। আমাদের থেকে সেই ঋতুর চরিত্র কতটা আলাদা। মাটি খুঁড়ে দেখা তা কোন কোন পদার্থ দিয়ে তৈরি।
চিনের পাঠানো তিয়ানওয়েন-১ মহাকাশযানটি মঙ্গলের অতীতের একটি আগ্নেয়গিরি এলাকার মাটি খুঁড়ে পরীক্ষা করবে, তা কোন কোন পদার্থ দিয়ে তৈরি। জানার চেষ্টা করবে সেই এলাকায় কত কোটি বছর আগে শেষ বার অগ্নুৎপাত হয়েছিল।
আর সংযুক্ত আরব আমিরশাহির পাঠানো মহাকাশযান আল-আমাল লাল গ্রহের কক্ষপথে প্রদক্ষিণ করতে করতে পর্যবেক্ষণ করবে মঙ্গলের সারা বছরের সবক’টি ঋতু, তাদের আচার, আচরণ, মেয়াদ।
একটি এসইউভি গাড়ির আকারের এই মহাকাশযানটি মঙ্গলের কক্ষপথে ঢুকে পড়বে ৯ ফেব্রুয়ারি।