প্রতীকী ছবি।
কন্যাসন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার আক্ষেপ করাটা একেবারেই অর্থহীন। কাজকর্মের নৈপুণ্য, দক্ষতার নিরিখে পুরুষ ও নারীর মস্তিষ্কে (ব্রেন) কোনও ভেদাভেদই নেই। মানবমস্তিষ্ক তার কাজকর্ম চালাতে কোনও লিঙ্গবিচার করে না। সাম্প্রতিক একটি গবেষণা এ কথা জানিয়েছে।
গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হয়েছে আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান-গবেষণা পত্রিকা ‘নিউরোসায়েন্স অ্যান্ড বায়োবিহেভিয়্যারাল রিভিউজ’-এর সাম্প্রতিক সংখ্যায়। মানবমস্তিষ্ক নিয়ে গত ৩০ বছরের বিভিন্ন গবেষণার ফলাফলের ভিত্তিতেই এই তথ্য দিয়েছে সাম্প্রতিক গবেষণাপত্রটি।
গবেষকরা জানিয়েছেন নারীর মস্তিষ্কের তুলনায় পুরুষের মস্তিষ্ক আকারে বড় হলেও মানবমস্তিষ্কের কাজকর্মের দক্ষতা (‘কগনিশন’)-র নিরিখে তাদের মধ্যে কোনও ভেদাভেদ নেই বললেই হয়। যেটুকু আছে তা ১ শতাংশেরও কম।
সাম্প্রতিক গবেষণাপত্রটি আরও একটি চমকদার তথ্য দিয়েছে। যা গত তিন দশকে বিজ্ঞানের গবেষণায় পুরুষের আধিপত্য প্রতিষ্ঠার চেষ্টার দিকেই আঙুল তুলেছে।
মানবমস্তিষ্ক। -ফাইল ছবি।
গবেষকরা জানিয়েছেন, মানবমস্তিষ্ক নিয়ে গত তিন দশকের বেশির ভাগ গবেষণার ফলাফলই দেখিয়েছে পুরুষ ও নারীর মস্তিষ্কের মধ্যে আকারে কিছুটা তারতম্য থাকলেও কাজকর্মের দক্ষতার নিরিখে মানবমস্তিষ্কের কোনও লিঙ্গবিচার নেই। কিন্তু সেই সব গবেষণার ফলাফল পুরুষের আধিপত্যবাদ কায়েমের প্রচেষ্টাকে থামিয়ে দিতে পারে এই আশঙ্কায় কোনও প্রতিষ্ঠিত বিজ্ঞান-গবেষণা পত্রিকা গবেষণাপত্রগুলি প্রকাশ করা হয়নি। বরং সেই সব গবেষণাপত্র প্রকাশ করা হয়েছে যেগুলির ফলাফল জানিয়েছে পুরুষের তুলনায় নারীর মানবমস্তিষ্ক কাজকর্মের নিরিখে কম দক্ষ। কম নিপুণ। গবেষকরা যাকে ‘ফাইল ড্রয়ার এফেক্ট’ নাম দিয়েছেন।
তাঁদের বক্তব্য, ‘‘এর ফলে মানবমস্তিষ্ক নিয়ে গত তিন দশকের গবেষণায় নিউরোসেক্সিজম-ই প্রাধান্য পেয়েছে। যা অত্যন্ত নিন্দনীয়। আর পুরুষের মস্তিষ্ক যে আকারে গড়ে নারীমস্তিষ্কের চেয়ে ১১ শতাংশ বড়, তা উনবিংশ শতাব্দী থেকেই সুবিদিত।’’