প্রতীকী ছবি।
প্রায় তিন-তিনটি দশক কিছুটা থমকে থাকার পর খুব মারাত্মক যৌনরোগ সিফিলিস আবার ফিরে এসেছে দোর্দণ্ডপ্রতাপে। যে ব্যাক্টেরিয়ার জন্য এই যৌনরোগটি হয়, তার নতুন দু’টি বংশ (‘লাইনেজ’) দাপিয়ে বেড়াতে শুরু করেছে বিশ্বজুড়ে।
৩৩টি দেশের সিফিলিস রোগীদের জিনোম পরীক্ষা করে এই উদ্বেগজনক খবর দিয়েছে একটি সাম্প্রতিক গবেষণা। গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হয়েছে আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান গবেষণা পত্রিকা ‘নেচার মাইক্রোবায়োলজি’-তে। গবেষণাটি যৌথ ভাবে চালিয়েছে ‘লন্ডন স্কুল অব হাইজিন অ্যান্ড ট্রপিক্যাল মেডিসিন (এলএসএইচটিএম)’, ‘ওয়েলকাম স্যাঙ্গার ইনস্টিটিউট’, ব্রিটেনের ‘হেল্থ সিকিওরিটি এজেন্সি’ এবং আরও কয়েকটি আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞ সংস্থা।
গবেষকরা জানিয়েছেন, গত দু’দশকে অন্তত সিফিলিসের এত দ্রুত হারে সংক্রমণ ঘটতে দেখা যায়নি। তাই বিষয়টি খুবই উদ্বেগজনক। কারণ, সিফিলিস দুরারোগ্য না হলেও রোগীর শরীর থেকে এর উপসর্গগুলি কিছু দিনের মধ্যেই উধাও হয়ে যায়। অনেক সময় কোনও উপসর্গই দেখা যায় না। ফলে, রোগী বুঝতেই পারেন না তিনি সিফিলিসে আক্রান্ত হয়েছেন কি না। রোগ ধরা না পড়লে বা অনেক দেরিতে চিকিৎসকের কাছে গেলে সিফিলিস ভয়াবহ হয়ে ওঠে। তার থেকে নানা ধরনের জটিল রোগের জন্ম হয়। যা রোগীর সঙ্গী হয় আজীবন।
সিফিলিস ব্যাক্টেরিয়াঘটিত রোগ। যে ব্যাক্টেরিয়ার সংক্রমণের জন্য সিফিলিস হয় তার নাম— ‘ট্রেপোনেমা প্যালিডাম’। বিশ্বে ফি বছর গড়ে ৬০ লক্ষ মানুষ আক্রান্ত হন সিফিলিসে।
গবেষকরা আমেরিকা, পশ্চিম ইউরোপ, মধ্য এশিয়া, অস্ট্রেলিয়া ও আফ্রিকার যে ৩৩টি দেশের সিফিলিস রোগীর জিনোম পরীক্ষা করেছেন তার মধ্যে হালে ট্রেপোনেমা প্যালিডাম ব্যাক্টেরিয়ার দু'টি নতুন বংশের সংক্রমণের আধিক্যই বেশি চোখে পড়েছে। তাদের নাম— ‘এসএস১৪’ এবং ‘নাইকল্স’।
অন্যতম গবেষক ওয়েলকাম স্যাঙ্গার ইনস্টিটিউটের চিকিৎসক ম্যাথু বিল বলেছেন, ‘‘এডস দাপিয়ে বেড়ানো শুরু করার পর গত শতাব্দীর আট এবং নয়ের দশকে সিফিলিসের সংক্রমণ উল্লেখযোগ্য ভাবে কমে গিয়েছিল। কিন্তু ২০১০ সাল থেকে সিফিলিস সংক্রমণের হার ৩০০ শতাংশ বেড়ে গিয়েছে।’’