পার্থিব তিন দিয়েই ফুরিয়ে যায় বছর এই ভিন্গ্রহের মুলুকে। -ফাইল ছবি।
গ্রীষ্মকালের আয়ু মাত্র ২৪ ঘণ্টার! আর মেরেকেট ৪৮ ঘণ্টার শীতকাল! পার্থিব তিন দিয়েই ফুরিয়ে যায় বছর এই ভিন্গ্রহের মুলুকে।
এমন অদ্ভুত একটি ভিন্গ্রহের হদিশ দিল নাসা-র স্পিৎজার স্পেস টেলিস্কোপ। ভিন্গ্রহটির নাম— ‘এক্সও-৩বি’। সংশ্লিষ্ট গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হয়েছে আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান গবেষণা পত্রিকা ‘দ্য অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল জার্নাল’-এ। আমেরিকান অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল সোসাইটির বৈঠকে সোমবার এই ভিন্গ্রহটিকে নিয়ে আলোচনাও হয়েছে সবিস্তারে।
কানাডার ম্যাকগিল বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক লিসা ড্যাং জানিয়েছেন, পর্যবেক্ষণ চালিয়ে দেখা গিয়েছে, এই ভিন্গ্রহে শীতকালের চেয়ে গ্রীষ্মের তাপমাত্রা কয়েকশো ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি। নক্ষত্রটির খুব কাছে আছে বলে বিকিরণে জ্বলেপুড়ে খাক হয়ে যায় গ্রহটি, গ্রীষ্মকালে।
শুধু তা-ই নয়। আমাদের সৌরমণ্ডলের গ্রহ বৃহস্পতির পৌনে ১২ গুণ ভরের এই ভিন্গ্রহটি আকারেও দানবাকৃতি। বৃহস্পতির ব্যাসার্ধের ১ হাজার ২১৭ গুণ এই ভিন্গ্রহের ব্যাসার্ধ।
গবেষকরা জানিয়েছেন, এই ভিন্গ্রহের শীতকাল আর গ্রীষ্ম- এই দু’টি ঋতুও পৃথিবীর মতো নয়। পৃথিবীতে বিভিন্ন ঋতু আসে যায় নিজের কক্ষপথে পৃথিবী কিছুটা ঝুঁকে থাকায়। এই ভিন্গ্রহে কিন্তু সেই একই কারণে ঋতুর পরিবর্তন ঘটে না। পৃথিবী থেকে ৮৪৮ আলোকবর্ষ দূরে থাকা দানবাকৃতি ভিন্গ্রহটি তার নক্ষত্রটিকে প্রদক্ষিণ করে অদ্ভুত ডিমের মতো দেখতে কক্ষপথে। উপবৃত্তাকার। যা হওয়ার কথা নয়।
গবেষকদের ধারণা, এর কারণ, এই ভিন্গ্রহটি দানবাকৃতি। প্রদক্ষিণও করছে একটি দানবাকৃতি নক্ষত্রকে। সে জন্য পরস্পরের উপর অভিকর্ষজ বলের টান খুব বেশি। সেই টানেই এই ভিন্গ্রহের দু’টি দূরতম বিন্দুর ক্রমশ কাছাকাছি চলে আসার কথা। তার ফলে, গ্রহটির কক্ষপথ হওয়ার কথা বৃত্তাকার।
এই যুক্তি থেকেই গবেষকরা জানিয়েছেন, ভিন্গ্রহটির হয়তো খুব বেশি দিন আগে জন্ম হয়নি। কালে কালে দানবাকৃতি নক্ষত্রের টানে এই গ্রহটির কক্ষপথও আর উপবৃত্তাকার থাকবে না। হয়ে পড়বে বৃত্তাকার। তখন তার ঋতুগুলির মধ্যে তাপমাত্রার এতটা ফারাক আর না-ও থাকতে পারে।