বস্তুত বিড়ালের প্রজাতি। কিন্তু আকার দেখলে বিড়াল বলে ভুল করবেন না। বিড়াল তো নয়ই, বরং বড়সড় আকারের হিংস্র এক পশু।
যার ভয়ে একসময়ে জড়োসড়ো হত বড় বড় মাংসাশী প্রাণীরাও। সাধারণত যে সমস্ত তৃণভোজী প্রাণীকে এখনকার বাঘ-সিংহেরাও কুপোকাত করতে পারে না, তাদেরও নিমেষে কুপোকাত করে দিত এরা।
এমন একটা প্রাণীর অস্তিত্ব নিয়ে বিজ্ঞানীদের মধ্যে সংশয় ছিল, কিন্তু সম্প্রতি উদ্ধার হওয়া প্রায় দেড় ফুট দৈর্ঘ্যের একটি খুলি সেই সংশয় পুরোপুরি দূর করে দিয়েছে।
এই প্রাণীদের বলা হত স্মিলোডন। একসময় দক্ষিণ আমেরিকায় এই প্রাণীর অস্তিত্ব ছিল। তবে আজ থেকে ১০ হাজার বছর আগে তাদের অস্তিত্ব সম্পূর্ণ বিলোপ হয়ে গিয়েছে।
রিকার্দো প্রাদেরি নামে গবেষক ১৯৮৯ সালে সেপ্টেম্বরে দক্ষিণ উরুগুয়ে থেকে বিশালাকার ওই প্রাণীর খুলি খুঁড়ে বার করেছিলেন। সম্প্রতি সেই প্রাণীর অস্তিত্ব নিয়ে জার্নাল অ্যালকেরিঙ্গাতে একটি প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে।
প্রায় দেড় ফুট লম্বা খুলির সবচেয়ে আকর্ষণীয় ছিল তাতে লেগে থাকা দুটো ক্যানাইন (শ্বদন্ত)। সেই দাঁতগুলোই লম্বায় ছিল১১ ইঞ্চি। অর্থাৎ প্রায় এক ফুট।
শক্তপোক্ত এই ক্যানাইন দেখেই শিকারের আকৃতির একটা আন্দাজ করাই যায়। এত বড় দাঁত এর আগে আর কোনও বিড়ালে প্রজাতির কোনও প্রাণীর মধ্যে মধ্যে দেখা যায়নি।
এতদিন বিজ্ঞানীদের জানা ছিল, সাবের টুথ টাইগারই ছিল এই প্রজাতির সবচেয়ে বড় এবং ভয়ানক প্রাণী। বিশালাকার তৃণভোজী প্রাণীদের তারাই শিকার করত।
কিন্তু এই স্মিলোডন প্রাণীর খুলি আবিষ্কারের পর বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, এই প্রজাতির সবচেয়ে ভয়ানক প্রাণী এরাই।
জলহস্তীর মতো এদের বিশাল মুখের মধ্যে খুব সহজেই বড় আকারের শাকাশি প্রাণীর মুখ ঢুকে যেত। আর সূচালো ক্যানাইন ফুঁড়ে যেত তাদের খুলি। বড় বড় শিকারকে সহজেই কুপোকাত করত এরা।
এমনকি, এদের ভয়ে সে সময় দক্ষিণ আমেরিকা থেকে প্লিসটোসিন মাংসাশী প্রাণীরাও লুপ্ত হয়ে গিয়েছিল।
বিশালাকার এই খুলি আপাতত উরুগুয়ের মন্টেভিডিয়োর ন্যাশনাল মিউজিয়াম অব ন্যাচারাল হিস্ট্রি-তে রাখা রয়েছে।