জিনটির উপস্থিতি ও অতি সক্রিয়তা কোভিডের ভয়াবহ হয়ে ওঠার আশঙ্কা কয়েক গুণ বাড়িয়ে তোলে, দাবি গবেষকদের। -ফাইল ছবি।
কোভিড কারও কারও ক্ষেত্রে যতটা ভয়াবহ হয়ে ওঠে অন্যের ক্ষেত্রে ততটা নয়। মানুষ থেকে মানুষে কেন কোভিড সংক্রমণের এই বৈষম্য তার অন্যতম কারণ খুঁজে পাওয়া গেল। এই প্রথম হদিশ মিলল মানবদেহে থাকা এমন একটি জিনের যা কোভিডের ভয়াবহ হয়ে ওঠার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেয়। জিনটির উপস্থিতি ও অতি সক্রিয়তা কোভিডের ভয়াবহ হয়ে ওঠার আশঙ্কা কয়েক গুণ বাড়িয়ে তোলে। যেটা আরও উদ্বেগের— গবেষণায় এও দেখা গিয়েছে, ভারতীয় নাগরিকদের ২৭ শতাংশের শরীরেই এই জিনটি রয়েছে। আর তা রয়েছে অতি সক্রিয় অবস্থাতেই।
বিশেষজ্ঞদের একাংশের বক্তব্য, এই গবেষণার ফলাফল কোন রোগীর ক্ষেত্রে কোভিডের ভয়াবহ হয়ে ওঠার আশঙ্কা বেশি তা চিকিৎসকদের আগেভাগে বুঝতে সাহায্য করবে।
পোল্যান্ডের ‘মেডিক্যাল ইউনিভার্সিটি অব বায়ালিস্টক’-এর জিন বিশেষজ্ঞদের সাম্প্রতিক গবেষণা এই খবর দিয়েছে। গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হয়েছে আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান গবেষণা পত্রিকা ‘নেচার জেনেটিক্স’-এ।
পোল্যান্ডের স্বাস্থ্যমন্ত্রী অ্যাডাম নিঝেলস্কি বলেছেন, ‘‘গত দেড় বছরের গবেষণায় এই প্রথম এই জিনটির হদিশ মিলল। এর ফলে কোভিড কার ক্ষেত্রে ভয়াবহ হয়ে উঠতে পারে তা অনেক আগেভাগেই বুঝতে পারবেন চিকিৎসকরা।’’
বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, যাঁরা কোভিড টিকা নিতে তেমন উৎসাহ এখনও দেখাচ্ছেন না তাঁদের দেহে এই জিন থাকলে তাঁদেরও টিকা নেওয়ার ব্যাপারে উৎসাহী করে তোলা যাবে। তাতে সার্বিক টিকাকরণের কাজও ত্বরান্বিত হতে পারে। আবার কোভিড রোগীদের সঠিক চিকিৎসাও অনেক আগেই শুরু করা যাবে।
গবেষকরা দেখেছেন, বয়স, শরীরের ওজন এবং লিঙ্গভেদের (পুরুষদের ক্ষেত্রে কোভিড বেশি ভয়াবহ হয়ে উঠতে দেখা যাচ্ছে) পর সদ্য হদিশ মেলা এই মানব জিনটির ভূমিকা খুবই গুরুত্বর্ণ হয়ে উঠছে কোভিডের ভয়াবহ হয়ে ওঠার ক্ষেত্রে।
গবেষণা জানিয়েছে, ভারতের জনসংখ্যার ২৭ শতাংশের দেহেই এই জিনটির হদিশ মিলেছে। এই জিনটি রয়েছে পোল্যান্ডের নাগরিকদের ১৪ শতাংশের দেহে। আর ইউরোপের দেশগুলির নাগরিকদের ৮ থেকে ৯ শতাংশের দেহে এই জিনের হদিশ মিলেছে।
গত বছর অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গবেষণায় এমন আরও একটি জিনের হদিশ মিলেছিল ব্রিটেনে ভয়াবহ পর্যায়ে পৌঁছনো কোভিড রোগীদের বেশির ভাগেরই শরীরে যার সক্রিয়তা ছিল চোখে পড়ার মতো।