প্রতীকী ছবি।
ব্যাটারি দিয়ে চালাতে হবে না। বিদ্যুৎ পরিবহণের জন্য কোনও তারও লাগবে না। কাজের মেয়াদ ফুরিয়ে গেলে অস্ত্রোপচার করে তা শরীর থেকে বার করে আনারও দরকার হবে না। নির্দিষ্ট সময় পর সেই যন্ত্রটি মানবশরীরেই দ্রবীভূত হয়ে যাবে। তার জন্য শরীরের কোনও ক্ষয়ক্ষতিও হবে না।
টেনিস র্যাকেটের মতো দেখতে এমন অভিনব একটি পেসমেকার বানিয়েছেন আমেরিকার ইলিনয়ের নর্থওয়েস্টার্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানী, গবেষকরা। গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হয়েছে আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান গবেষণা পত্রিকা ‘নেচার-বায়োটেকনোলজি’-তে।
গবেষকরা জানিয়েছেন, ওপন হার্ট সার্জারির পর কয়েক সপ্তাহের জন্য যাঁদের অস্ত্রোপচার করে পেসমেকার বসাতে হয়, তার পর আর পেসমেকারের প্রয়োজন হয় না হৃদযন্ত্রকে সচল রাখতে তাঁদের ক্ষেত্রে এই উদ্ভাবন খুবই প্রয়োজনীয় হয়ে উঠতে পারে। কারণ, এই পদ্ধতিতে পেসমেকার বসানো হলে তার মেয়াদ ফুরিয়ে যাওয়ার পর আর রোগীর অস্ত্রোপচার করার দরকার হবে না। ফলে, হৃদযন্ত্রের কোষগুলিরও আর কাটা-ছেঁড়া হওয়ার আশঙ্কা থাকবে না।
সেই অভিনব পেসমেকার। ছবি সৌজন্যে- নর্থওয়েস্টার্ন বিশ্ববিদ্যালয়।
আরও পড়ুন
করোনার প্রতিষেধক কি প্রভাব ফেলছে ঋতুচক্রের উপরে? তবে কি টিকা নেবেন না
আরও পড়ুন
নিভৃতবাসে কাটছে দিন? নিজেকে যত্নে রাখবেন কোন উপায়ে
অন্যতম প্রধান গবেষক নর্থওয়েস্টার্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক জন রজার্স জানিয়েছেন, পেসমেকারে যে ঢাকনা থাকে সেটা থেকে অনেক সময়েই যাঁর শরীরে বসানো হয় তাঁর নানা ধরনের সংক্রমণ হয়। সেই সব সংক্রমণ ভয়াবহ হয়ে ওঠারও আশঙ্কা থাকে। পেসমেকারের ব্যাটারিতে কোনও গোলযোগ ঘটে বিদ্যুৎ সরবরাহে ব্যাঘাত ঘটলে হৃদযন্ত্রের কোষগুলিরও খুব ক্ষয়ক্ষতি হয়। কিন্তু এই নতুন পেসমেকার কোনও ব্যাটারি দিয়ে চালাতে হবে না। কোনও তারও থাকবে না। থাকবে না পেসমেকারের ঢাকনাও। এর ওজন এক গ্রামেরও অর্ধেক। বানানো হয়েছে ম্যাগনেসিয়াম, টাংস্টেন ও সিলিকনের মতো পদার্থগুলির পলিমার দিয়ে। যে পদার্থগুলি একটি নির্দিষ্ট পরিমাণে থাকলে শরীরের কোনও ক্ষতি হয় না। এই পদার্থগুলি শরীরের তরলে আপনাআপনিই দ্রবীভূত হয়ে যেতে পারে বলে কাজের মেয়াদ ফুরনোর পর পেসমেকারটিকে আর অস্ত্রোপচার করে শরীর থেকে বার করে আনার দরকার হয় না।
পেসমেকারটিকে চালানো হয় বাইরে থেকে পাঠানো রেডিয়ো কম্পাঙ্ক দিয়ে। তা গ্রহণ করার জন্য পেসমেকারের মধ্যে থাকে একটি রিসিভার।