রাশিয়ার ল্যান্ডার লুনা-২৫বাহী মহাকাশযান। ছবি: সংগৃহীত।
ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরোর চন্দ্রযান-৩-কে নিয়ে যখন চর্চা থামতে চাইছে না, তখন চাঁদের এই দৌড়ে শামিল হয়েছে রাশিয়াও। পাঁচ দশক পর তারাও চাঁদে নিজেদের ল্যান্ডার পাঠাচ্ছে। শুক্রবার রাশিয়ার মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্র থেকে চাঁদের উদ্দেশে পাড়ি দেবে রাশিয়ার লুনা-২৫। তারও গন্তব্য চাঁদের দক্ষিণ মেরু।
চাঁদের দক্ষিণ মেরুর দিকেই এগোচ্ছে ভারতের চন্দ্রযান-৩। তবে রুশ ল্যান্ডারটি ভারতকে টক্কর দিতে তৈরি। রাশিয়ার দাবি, চন্দ্রযান-৩-এর সঙ্গে প্রায় একই সময়ে চাঁদে নামার কথা তাঁদের ল্যান্ডারেরও। সে ক্ষেত্রে কে দক্ষিণ মেরুতে আগে পৌঁছয়, কার অভিযান সফল হয়, তা ইতিমধ্যে প্রতিযোগিতার আবহ তৈরি করে ফেলেছে।
গত ১৪ জুলাই চাঁদের উদ্দেশে পাড়ি দিয়েছিল ইসরোর চন্দ্রযান। তার ২৮ দিন পর রাশিয়ার ল্যান্ডার উৎক্ষেপিত হবে। দাবি, উৎক্ষেপণের দিন পাঁচেকের মধ্যেই নাকি চাঁদের কক্ষপথে পৌঁছে যাবে লুনা-২৫। পরিকল্পনা অনুযায়ী, তার চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে নামার কথা আগামী ২৩ অগস্ট। ওই দিনই চন্দ্রযান-৩-ও চাঁদের মাটিতে নামতে পারে।
রাশিয়ার মহাকাশ গবেষণা সংস্থা রসকসমসের তরফে দাবি করা হয়েছে, উৎক্ষেপণের পাঁচ দিনের মধ্যে চাঁদের কক্ষপথে পৌঁছবে লুনা-২৫। তার পর চাঁদের কক্ষপথ ধরে দক্ষিণ মেরুর কাছাকাছি পৌঁছতে আরও পাঁচ থেকে সাত দিন সময় নেবে।
চাঁদের দক্ষিণ মেরু এখনও অনাবিষ্কৃত। এর আগে পৃথিবী থেকে চাঁদে যত অভিযান হয়েছে, সবই উপগ্রহটির উত্তর গোলার্ধে। দক্ষিণ মেরু চিরকালীন অন্ধকারে নিমজ্জিত। সেখানে সূর্যের আলো পড়ে না। পুরু বরফের চাদরে আচ্ছাদিত এই অংশ অত্যন্ত দুর্গম। সেই কারণেই এখনও পর্যন্ত এখানে কোনও অভিযান সফল হয়নি। চার বছর আগে চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে সফ্ট ল্যান্ডিংয়ের সময়েই ব্যর্থ হয়েছিল চন্দ্রযান-২।
যদিও রাশিয়া জানিয়ে দিয়েছে, ল্যান্ডিংয়ের সময় প্রায় একই হওয়া সত্ত্বেও ভারতের চন্দ্র অভিযানের পথে রুশ ল্যান্ডার কোনও প্রতিবন্ধকতা তৈরি করবে না। চন্দ্রযান-৩ এবং লুনা-২৫-এর একে অপরের সঙ্গে ধাক্কা খাওয়ারও কোনও সম্ভাবনা নেই।
চাঁদের অনাবিষ্কৃত দক্ষিণ মেরুতে চন্দ্রযান-৩-এর আগে যদি লুনা-২৫ সফল ভাবে অবতরণ করতে পারে, তবে ইতিহাস তৈরি হবে। দক্ষিণ মেরুর সফল অভিযানের কৃতিত্ব সে ক্ষেত্রে যাবে রাশিয়ার দখলে।