আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন। ফাইল চিত্র।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ছায়া আপাতত পড়ছে না মহাকাশে। মস্কোর তরফে জানানো হয়েছে, ২০২৪ সাল পর্যন্ত আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন ছাড়বেন না রুশ মহাকাশচারীরা।
যুদ্ধের জেরে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির গবেষণার কাজকর্ম ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে বলে গত কয়েক মাস ধরেই জল্পনা চলছিল। কিন্তু মঙ্গলবার রুশ মহাকাশ গবেষণা সংস্থা রসকসমস-এর নয়া প্রধান ইউরি বরিসভ জানিয়েছেন, ২০২৪ সাল পর্যন্ত আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে সে দেশের মহাকাশচারীরা থাকবেন।
রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে বৈঠকের পরে বরিসভ বলেন, ‘‘আমরা এখন মহাকাশ চুক্তি মেনে চলব।’’ প্রসঙ্গত, ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে রেষারেষির জেরে আমেরিকার সঙ্গে রাশিয়ার মহাকাশ চুক্তি ভেস্তে যেতে পারে বলে জল্পনা ছিল। যার জেরে অনিশ্চিত হয়ে পড়ার আশঙ্কা ছিল আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনের ভবিষ্যতও। কারণ যে পাঁচটি দেশের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা যৌথ ভাবে পরিচালনা করে মহাকাশ স্টেশন তাদের মধ্যে রয়েছে আমেরিকার মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ‘নাসা’ এবং রুশ সংস্থা ‘রসকসমস’। মস্কোর ঘোষণার পর আপাতত সেই জল্পনায় ইতি পড়ল। যদিও মস্কোর সিদ্ধান্তে স্পষ্ট, আমেরিকা-সহ পশ্চিমী দুনিয়ার সঙ্গে মহাকাশ গবেষণাক্ষেত্রে সহযোগিতা সংক্রান্ত চুক্তি দীর্ঘায়িত করতে চায় না মস্কো।
ভূপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ৪০০ কিলোমিটার উপরে পৃথিবীর কক্ষপথে মহাকাশ স্টেশনের অবস্থান। ভরশূন্য অবস্থায় সেটি দিন-রাতে প্রায় দেড় ঘণ্টা অন্তর এক বার করে পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করে চলেছে ১৯৯৮ সাল থেকে। আমেরিকার সংবাদমাধ্যম সিএনএন-এর দাবি, বয়সের কারণে মহাকাশ স্টেশনের দেহে অসংখ্য ফাটল দেখা দিচ্ছে। তা ছাড়া পৃথিবীর কক্ষপথে জমা হওয়া নানা মহাকাশ-বর্জ্যের (‘স্পেস ডেব্রি’ বা ‘স্পেস জাঙ্ক’) কারণে মহাকাশ স্টেশনে অবস্থানকারী নভশ্চরদের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে ২০৩১ সালে সেটি পাকাপাকি ভাবে বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নাসা। সেখানে এখন রয়েছেন আমেরিকার চার এবং রাশিয়ার তিন জন মহাকাশচারী।