ছবি: সংগৃহীত।
চাঁদের আরও কাছে এগোল ভারতের বিক্রম। মঙ্গলবার তার প্রথম দফায় এটিকে অরবিটারের কক্ষপথ থেকে চাঁদের কাছে নিয়ে যাওয়া হল। এর জন্য ল্যান্ডারটির নিজস্ব ছোট রকেট বা প্রোপালশান সিস্টেমটিকে প্রথম বারের জন্য চালু করতে হয়েছিল। পথ বদলের কাজটি করতে লেগেছে মাত্র ৪ সেকেন্ড। বুধবার আরও এক বার ঠিক এই ভাবেই আরও এক বার পথ পাল্টাবে বিক্রমের। সেটাই চূড়ান্ত। এর পরে অবতরণ তথা সফ্ট ল্যান্ডিংয়ের জন্য তৈরি করা হবে বিক্রমকে।
কোনও মহাকাশযানের সফ্ট ল্যান্ডিং এই প্রথম বার করতে চলেছে ইসরো। ইসরোর প্রাক্তন প্রধান জি মাধবন নায়ার জানিয়েছেন, তিনি নিশ্চিত, ভারত এ কাজে প্রথম বারেই সফল হবে। তাঁর কথায়, ‘‘চাঁদের মাটিতে সফ্ট ল্যান্ডিংয়ের দিকে আমরা আরও এক ধাপ এগোলাম। এখনও পর্যন্ত সব ভাল ভাবেই চলছে। আভিযানের প্রতিটি ধাপ ঠিকঠাক ভাবে হয়েছে। যেমন যা হিসেব কষা হয়েছে, সবই নিখুঁত ভাবে কাজ করেছে।’’ ল্যান্ডার বিক্রম এই মুহূর্তে একটি উপবৃত্তাকার কক্ষপথে রয়েছে। এ কথা জানিয়ে মাধবন বলেন, ‘‘পরের কাজগুলি হবে আরও কঠিন। বিক্রম ও অরবিটারের ক্যামেরায় যে ছবি উঠছে তাতে চাঁদের পিঠের একটা মানচিত্র তৈরি হবে। তা দেখে আমাদের স্থির করতে হবে ঠিক কোথায় বিক্রমকে ধীর ধীরে নামিয়ে আনা হবে।’’ গোটা দেশের বাছাই করা পড়ুয়াদের সঙ্গে নিয়ে শ্রীহরিকোটা থেকে যা প্রত্যক্ষ করবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
গোটা বিশ্ব তাকিয়ে রয়েছে, ভারত প্রথম চেষ্টাতেই রাশিয়া আমেরিকা ও চিনকে নিয়ে সফ্ট ল্যান্ডিংয়ের ছোট্ট ঈর্ষণীয় ক্লাবে ঢুকে পড়তে পারে কি না। প্রযুক্তির দিক দিয়ে কাজটা খুবই জটিল, এক কথায় স্বীকার করছেন ইসরোর সব বিজ্ঞানীই। ‘রিয়েল টাইম’ ছবি দেখে হিসেবে কষে ল্যান্ডারকে নির্দেশ দেওয়া হবে। সেই অনুযায়ী বিক্রমের পথ ও অভিমুখ বদলাবে।’’ মাধবনের বর্ণনায়, ‘‘ফিল্মে যেমনটি দেখা যায়, উড়ন্ত সসার দূর থেকে উড়ে এসে আকাশে এক জায়গায় এসে স্থির হয়ে যায়। তার পরে ধীরে ধীরে নেমে আসে। বিক্রমের ক্ষেত্রেও ঘটবে তেমনটাই।’’ ইসরোর প্রধান কে শিবনের কথায় যা কিনা ‘দুর্ধর্ষ’ কিছু মুহূর্ত। প্রথম চন্দ্র অভিযানের সাফল্য যাঁর ঝুলিতে, সেই মাধবন বলছেন, ‘‘আমার মনে হয় না বিশ্বের আর কোনও দেশ এমনটা করেছে। উল্লেখযোগ্য একটা ঘটনা ঘটতে চলেছে। আমার সকলে সেটার দিকেই তাকিয়ে রয়েছি। আমি নিশ্চিত ১০০ শতাংশ সাফল্য আসবে।’’