অর্থনীতি-র নোবেল পুরস্কার পেলেন বেনগট হোলমস্টর্ম এবং ওলিভার হার্ট। ছবি: সংগৃহীত
জীবন জুড়ে চুক্তি। চাকরি করবেন চুক্তি। গাড়ি কিনলেন, ইনসিওরেন্স-এর চুক্তি। বিমা করালেন, আবার চুক্তি। এ ভাবে পদে পদে কতই না চুক্তি করতে হয় আমাদের। সেই চুক্তি নিয়ে কাজ করে এ বারে অর্থনীতি-র নোবেল পুরস্কার পেলেন ওলিভার হার্ট এবং বেনগট হোলমস্টর্ম। অর্থনীতির ‘কনট্রাক্ট থিয়োরি’-তে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য এই পুরস্কার বলে জানিয়েছে নোবেল কমিটি।
হার্ট পড়ান হার্ভাডে। আর হোলমস্টর্ম এমআইটি-র অধ্যাপক। নানা অর্থনৈতিক সম্পর্ক চুক্তি নির্ভর। ১৯৭০-এ কোম্পানির শেয়ারহোল্ডার আর কোম্পানির সিইও-র মধ্যে চুক্তি নিয়ে কাজ করেছিলেন হোলমস্টর্ম। হোলমস্টর্ম দেখালেন কী ভাবে কোম্পানির সিইও-র বেতনের সঙ্গে তার কাজের ফলাফলকে জুড়ে দেওয়া যায়। অর্থনীতির ‘প্রিন্সিপ্যাল-এজেন্ট’ মডেল ব্যবহার করে ঠিকঠাক চুক্তির ধরনটি কেমন হবে তার আন্দাজ দেন হোলমস্টর্ম। পরে সেই মডেলটিকে আরও বিস্তৃত করেন। সেখানে এজেন্ট (সিইও) একাধিক কাজের সঙ্গে জড়িত। আর প্রিন্সিপ্যাল বা শেয়ারহোল্ডাররা ফলাফলের কিছুটা দেখতে পাচ্ছে।
১৯৮০-এর দশকে অলিভার হার্ট এই তত্ত্বকে আর এগিয়ে নিয়ে গেলেন। বাস্তবে চুক্তিতে সব বলে দেওয়া সম্ভব নয়। তাই প্রত্যেকটি চুক্তিই অসম্পূর্ণ। নানা অবস্থায় চুক্তিতে কোন পক্ষের কখন কেমন সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা থাকবে তা নিয়েই কাজ করলেন হার্ট। হার্টের কাজ সংস্থার মালিকান নিয়ে নতুন আলো ফেলে। হার্টের কাজ, কখন দু’টি সংস্থা মিলে যাবে, সংস্থার ঋণ এবং ইক্যুয়টির অনুপাত কী হবে, স্কুল, জেলেখানার মতো সংস্থা সরকারি না কি বেসরকারি ক্ষেত্রের হাতে থাকবে— নানা বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করবে। এই দু’জনের কাজ অর্থনীতির গবেষণার নতুন দিগন্ত খুলে গিয়েছে। শুধু অর্থনীতি নয়, রাষ্ট্রবিজ্ঞানে এই তত্ত্বের ব্যবহার করা হচ্ছে।
অর্থনীতির পুরস্কারটি মূল নোবেল পুরস্কার নয়। সুইডেনের সেন্ট্রাল ব্যাঙ্ক নোবেলের স্মৃতিতে এই পুরস্কার দেন। ১৯৬৮ থেকে এই পুরস্কার দেওয়া শুরু হয়। এখনও পর্যন্ত ৭৬ জন নোবেল প্রাপকের মধ্যে ৫৫ জনই মার্কিন নাগরিক। সকাল সাড়ে চারটায় ঘুম থেকে উঠে নোবেল প্রাপ্তির খবর পান হার্ট। খবর পেয়েই স্ত্রীকে জড়িয়ে ঘরেন হার্ট। তার পরে ছেলেকে ঘুম থেকে তুলে খবর দেন। খবর শুনে হোলমস্টর্ম জানান, তিনি অত্যন্ত ভাগ্যবান এবং কৃতজ্ঞ।
আরও পড়ুন: তাঁদের যন্ত্র অণু দিয়ে গড়া, এক চুলে ধরে হাজারখানা