আদিগঙ্গার দূষণ ঠেকাতে গাফিলতি নিয়ে পরিবেশকর্মীদের অভিযোগের পরে এ বার জাতীয় পরিবেশ আদালতের (ন্যাশনাল গ্রিন ট্রাইব্যুনাল) ক্ষোভের মুখেও পড়ল পুরসভা। দূষণ ঠেকাতে তৎপর না হলে পুরসভার শীর্ষ কর্তাদের বিরুদ্ধে রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার অধিকার আছে বলেও বৃহস্পতিবার মন্তব্য করেছে বিচারপতি প্রতাপ রায় ও বিশেষজ্ঞ-সদস্য পি সি মিশ্রের ডিভিশন বেঞ্চ।
ট্রাইব্যুনালের পূর্বাঞ্চলীয় বেঞ্চে কালীঘাট মন্দির এলাকার দূষণ নিয়ে এক মামলায় জানা যায়— নাকতলা, গড়িয়ার বর্জ্য আদিগঙ্গায় মিশছে। দূষণ ঠেকানোর পরিকল্পনা জানিয়ে পুরসভাকে হলফনামা দিতে বলে ট্রাইব্যুনাল। এ দিন তা জমা না পড়ায় ক্ষুব্ধ হয় আদালত। পুর-আইনজীবী গোপালচন্দ্র দাস বলেন, ‘‘আমাদের আরও তিন সপ্তাহ সময় দেওয়া হয়েছে। ৩০ তারিখ ফের শুনানি।’’
আদিগঙ্গার পাশে অবৈধ কারখানা, হোটেলের নিকাশি ব্যবস্থা পর্ষদকে খতিয়ে দেখতে বলেছিল ট্রাইব্যুনাল। এ দিন পর্ষদের আইনজীবী অর্পিতা চৌধুরী জানান, কাজ চলছে। আদালত বলেছে, দূষণ ঠেকাতে পুরসভা কী করছে, তার রিপোর্ট পর্ষদকেও দিতে হবে। রিপোর্ট চাওয়া হয়েছে মুখ্যসচিবের কাছেও।
পরিবেশকর্মীরা জানান, বর্জ্য মিশে আদিগঙ্গার সর্বত্রই মারাত্মক দূষণ। দক্ষিণ শহরতলির অবস্থা আরও খারাপ। পর্ষদের এক বিজ্ঞানী জানান, জল পরীক্ষার অন্যতম মানদণ্ড ফিক্যাল কলিফর্ম নামে এক ধরনের ব্যাক্টিরিয়ার উপস্থিতি, যা মানুষ ও গবাদি পশুর মল থেকে মেশে। প্রতি ১০০ মিলিলিটার জলে তার সর্বোচ্চ স্বাভাবিক মাত্রা ২৫০০। আদিগঙ্গায় যা ন্যূনতম ২০ লক্ষ। পরিবেশবিদদের মতে, নিকাশি নালার পাশাপাশি আদিগঙ্গার দু’পাশে অবৈধ বসতি, খাটাল রয়েছে। সে সব সরাতেও নির্দেশ দিয়েছিল ট্রাইব্যুনাল। যা এক চুলও এগোয়নি বলে অভিযোগ।
পুর সূত্রের দাবি, আদিগঙ্গার দু’পাশে বসতি বা নিকাশি নালা বহু দিনের। বসতি উচ্ছেদ করতে গেলে আইন-শৃঙ্খলার সমস্যা হতে পারে। শোধনের জন্য নিকাশি নালা বন্ধ করলে দক্ষিণ শহরতলিতে জল জমে নাগরিক পরিষেবা ব্যাহত হতে পারে।