-ফাইল ছবি।
শুধুমাত্র রক্তপরীক্ষা করেই একেবারে প্রাথমিক পর্যায়েও এ বার ধরা পড়বে ক্যানসার। রোগীর শরীরে যদি ক্যানসারের কোনও উপসর্গ না-ও থাকে তা হলেও সফল হবে এই পরীক্ষা। শরীরের ওজন ঝপ করে কমে গেলে বা হঠাৎ খুব ক্লান্তিবোধ করলে অথবা অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়লেও এই রক্তপরীক্ষা করানো যাবে।
খুব সহজ পদ্ধতিতে রক্তপরীক্ষা করে অনেক আগেভাগে ক্যানসার হয়েছে কি না, তা বোঝার উপায় উদ্ভাবন করেছেন অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা। সংশ্লিষ্ট গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হয়েছে আন্তর্জাতিক চিকিৎসাবিজ্ঞান গবেষণা পত্রিকা ‘জার্নাল অব ক্লিনিক্যাল ক্যানসার রিসার্চ’-এ।
বিশেষজ্ঞদের একাংশের কথায়, এই গবেষণার অভিনবত্ব হল, যেগুলি ক্যানসারের চেনা উপসর্গ নয়, সেই ওজন কমে গেলে বা ক্লান্তি অথবা অবসাদ বোধ করলেও এই রক্তপরীক্ষা করানো যাবে। ফলে অচেনা উপসর্গ থেকেও যে পরে ক্যানসার হতে পারে বা তা ভয়াবহ রূপ নিতে পারে, সে ব্যাপারে রোগীকে আরও আগে সতর্ক করতে পারবেন চিকিৎসকরা। শুরু করতে পারবেন ক্যানসারের চিকিৎসা অনেক আগেই। এত দিন যা করা যেত না। কারণ, ওজন কমে যাওয়া বা ক্লান্তি বোধ করা ক্যানসারের চেনা উপসর্গগুলির মধ্যে পড়ে না। তাই বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই ক্যানসারে মৃত্যুর অন্যতম কারণ হয়ে দাঁড়ায় অনেক দেরিতে ধরা পড়া।
মূল গবেষক অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক চিকিৎসক জেমস লারকিন বলেছেন, ‘‘এত দিন রোগীরা এলে প্রাথমিক ভাবে তাঁদের দেখে ক্যানসার হয়েছে কি না বোঝা যেত না। কারণ, ক্যানসারের চেনা উপসর্গগুলির তখনও বহিঃপ্রকাশ হয়নি। পরে যখন সেই রোগীরা চিকিৎসকদের কাছে যেতেন, তখন তাঁদের দেহে ক্যানসার বেশ পাকাপোক্ত ভাবে ঘাঁটি গেড়ে ফেলেছে। ফলে তা সারানো কষ্টসাধ্য হয়ে পড়ত।’’
অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা ক্যানসার রোগীর রক্তে বিশেষ এক ধরনের যৌগের হদিস পেয়েছেন। শরীরের ওজন কমলে বা ক্লান্তিবোধ করলেও রক্তে যাদের পরিমাণ বেড়ে যায়। রক্তপরীক্ষায় সেই যৌগের মাত্রাবৃদ্ধি থেকেই এ বার আগেভাগে ক্যানসার নির্ণয় করা ও তার চিকিৎসা শুরু করা যাবে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। তাঁদের গবেষণা ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালেও সফল হয়েছে বলে দাবি গবেষকদের।
গবেষণাপত্রটি এ-ও জানিয়েছে, ক্যানসার কারও শরীরে স্থানীয় ভাবে বাসা বেঁধেছে। নাকি তা দ্রুত গোটা শরীরে ছড়িয়ে পড়তে চলেছে, সেটাও ৯৪ শতাংশ নিখুঁত ভাবে ধরা পড়বে এই অভিনব পদ্ধতির রক্তপরীক্ষায়।