কোভিড সারানোর বীজ রয়েছে রান্নাঘরেই! -ফাইল ছবি।
খুব কম খরচে, অনেক সহজলভ্য উপায়ে কোভিড ও সর্দি, কাশির সংক্রমণ রোখার পথের খোঁজ মিলল।
মিলল এমন একটি রাসায়নিকের হদিশ যা ডেল্টা, ওমিক্রন-সহ করোনাভাইরাসের সবক’টি রুপ (‘ভেরিয়্যান্ট’)-কে খুব সহজেই কাবু করতে পারে। মানব দেহকোষে তাদের দ্রুত বংশবৃদ্ধি রুখে দিতে পারে অনায়াসেই।
সেই রাসায়নিকটি প্রচুর পরিমাণে রয়েছে সব প্রজাতির বাঁধাকপি, ব্রকোলিতে। রয়েছে ব্রাসল্স স্প্রাউট্স, এমনকি বাঁধাকপি, ব্রকোলির বীজেও।
রাসায়নিকটি মানবকোষে অনায়াসে রুখে দিতে পারে সর্দি, কাশির জন্য দায়ী ভাইরাসের সংক্রমণ। কয়েক ধরনের ক্যানসার রোখার ক্ষেত্রেও যে এই রাসায়নিকটি কার্যকর হয়, তা আগের কয়েকটি গবেষণায় জানা গিয়েছিল।
বাঁধাকপি, ব্রকোলিতে প্রচুর পরিমাণে থাকা সেই রাসায়নিকের খুব সামান্য পরিমাণই যে মানবকোষে সার্স-কোভ-২ এবং সর্দি, কাশির ভাইরাসের বংশবৃদ্ধিও খুব দ্রুত রুখে দিতে পারে, এই প্রথম তা দেখালেন আমেরিকার জন্স হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা। তাঁদের গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হয়েছে আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান গবেষণা পত্রিকা ‘কমিউনিকেশন্স বায়োলজি’-তে। শুক্রবার।
রাসায়নিকটির নাম— ‘সালফোরাফেন’। গবেষণাগারে পেট্রি ডিশে নানা ধরনের রাসায়নিক দ্রবণে রাখা মানব দেহকোষ ও ইঁদুরের উপর এই রাসায়নিকটি প্রয়োগ করে দেখেছেন গবেষকরা। মানুষ ও ইঁদুরের দেহে এখনও পর্যন্ত যত রকমের যত রূপ বা প্রজাতির করোনাভাইরাসের সংক্রমণ হয়েছে, গবেষকরা দেখেছেন, সেই সবক'টি রূপ বা প্রজাতির বংশবৃদ্ধিই এই রাসায়নিকটি রুখে দিতে পারছে।
এ বার তাঁরা মানুষের উপর এই রাসায়নিকটি প্রয়োগ (‘ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল’) করে দেখবেন বলে জানিয়েছেন।
তাঁরা এ-ও দেখেছেন, কোভিড গুরুতর হয়ে ওঠা রুখতে যে ওষুধটির ব্যবহার আমেরিকার ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফডিএ) অনুমোদন করেছিল, সেই রেমডেসিভির-এর সঙ্গে এই সালফোরাফেন রাসায়নিকটিকে প্রয়োগ করা হলে মানবকোষে সার্স-কোভ-২ এবং সর্দি, কাশির ভাইরাসের বংশবৃদ্ধি আরও দ্রুত আরও সহজে রোখা যায়।
বাঁধাকপি, ব্রকোলিতে প্রচুর পরিমাণে রয়েছে এই রাসায়নিক। -ফাইল ছবি।
গবেষকদের আশা, এই রাসায়নিকটি আগামী দিনে করোনাভাইরাসের সম্ভাব্য রূপগুলির সংক্রমণও সমান দক্ষতায় রুখে দিতে পারবে। তবে সে ব্যাপারে নিশ্চিত হতে গবেষকরা এ বার ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল শুরু করতে চাইছেন।
এখন ওষুধের দোকানে এমন অনেক ওষুধ পাওয়া যা্ যার অন্যতম উপাদান সালফোরাফেন। এমনকি, সালফোরাফেন আলাদা ভাবেও মেলে ওষুধের দোকানগুলিতে। তাই গবেষকরা সতর্কও করে দিয়েছেন, এই গবেষণার ফলাফলের ভিত্তিতে এখনই যেন ওষুধের দোকান থেকে সালফোরাফেন কিনে কোভিড রোগীরা তা যথেচ্ছ খেতে শুরু না করেন। ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের পরেই বোঝা যাবে মানুষের দেহে এই রাসায়নিক কতখানি কার্যকর হচ্ছে। তবে এই রাসায়নিকের তেমন গুরুতর কোনও পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়ার আশঙ্কা নেই বলেই মনে করছেন গবেষকরা।