মহাকাশে এ বার প্রচুর ফুল ছড়াবে নাসা!
যাতে ফুলে-ফুলে ঢেকে যায় তারাদের মুখ।
আলো বড়ই ‘যন্ত্রণা’ হয়ে দাঁড়িয়েছে মহাকাশ বিজ্ঞানীদের কাছে!
তারাদের চোখ-ধাঁধানো আলোয় ধাঁধিয়ে যাচ্ছে চার পাশ, মহাকাশে। তাতে বড়ই অসুবিধা হচ্ছে টেলিস্কোপের।
এই নাগরিক সভ্যতায় যেমন আমাদের মুখ ঢেকে যায় বিজ্ঞাপনে, তেমন ভাবেই এ বার ফুলে-ফুলে ঢেকে দেওয়া হবে তারাদের মুখ।
তার জন্য বেছে নেওয়া হয়েছে সূর্যমুখী ফুল। যা এ বার তারামুখী হবে। টেলিস্কোপের মুখে বসিয়ে সেই ফুল পাঠানো হবে মহাকাশে। না-ফোটা সূর্যমুখী ফুল। তার পর মহাকাশেই টেলিস্কোপ থেকে বিচ্ছিন্ন করে তারাদের লক্ষ্য করে ছুঁড়ে দেওয়া হবে একটার পর একটা ফুল। সূর্যমুখী যারা, তারা-মুখী হয়ে একটু একটু করে খুলবে তাদের পাপড়িগুলো। আর সেই পাপড়িগুলো মেলে ধরবে তারাদের দিকে। তাতে ঠিক পূর্ণগ্রাস গ্রহণের মতো সূর্যমুখী ফুলই ঢেকে দেবে তারাদের মুখ। আশপাশে ঘনিয়ে আসবে জমাট অন্ধকার। সেই অন্ধকারেই হদিশ মিলবে তারাদের অত্যন্ত উজ্জ্বল আলোয় হারিয়ে যাওয়া গ্রহ বা উপগ্রহগুলোর মুখ। আমাদের সৌরমণ্ডলের বাইরে যারা এখনও বে-হদিশ।
নাসার এই অভিযানের নাম-‘অপারেশন স্টারশেড’। তারা ঢাকার অভিযান। ওই সূর্যমুখী ফুলগুলো বানানো হচ্ছে টাইটানিয়াম অক্সাইড দিয়ে। যা দিয়ে মহাকাশযানের বাইরের দিকের আস্তরণটা বানানো হয়।
কী ভাবে ফুল খুলছে মহাকাশে, দেখুন তার ভিডিও। সৌজন্যে-নাসা।
নাসার এই ‘অপারেশন স্টারশেড’ প্রকল্পে জড়িত মেরিল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স ও ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর মহম্মদ ইউনিস ই-মেলে পাঠানো প্রশ্নের জবাবে জানিয়েছেন, ‘‘নাসার এই স্টারশেড প্রকল্পে আমরা দু’বছর ধরে রয়েছি। বছর দু’-তিনেকের মধ্যেই সৌরমণ্ডলের বাইরে অন্য নক্ষত্রগুলোর চার পাশে চক্কর মারা গ্রহ, উপগ্রহগুলোর হদিশ পেতে ওই ফুলগুলো বানিয়ে ফেলা হবে।’’
কতটা নিখুঁত হবে মহাকাশে ফুল ছড়ানোর প্রকল্পটি?
দেখুন নাসার পাঠানো ছবির অ্যালবাম- মহাকাশে ছোঁড়া হচ্ছে ফুল, খুলে যাচ্ছে পাপড়ি
নাসার ওই প্রকল্পে বঙ্গসন্তান ইউনিস যাঁর অধীনে কাজ করছেন, সেই পাসাডেনার জেট প্রোপালসান ল্যাবরেটরির (জেপিএল) প্রজেক্ট অপারেটর অধ্যাপক স্টুয়ার্ট শাকলান ই-মেলে জানিয়েছেন, ‘‘ফুলগুলোর পাঁপড়িগুলোকে নিখুঁত করে তোলার জন্য এই মূহুর্তে জোর গবেষণা চলছে জেপিএল ও প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয়ে। আলাদা ভাবে হলেও, দু’টি গবেষণাই চলছে পারস্পরিক তথ্য আদানপ্রদানের মাধ্যমে। ফুলগুলো এমন ভাবে বানানো হচ্ছে, যাতে তারাদের মুখ ঢাকার পর ফুলগুলোর পেছনের অংশে (টেলিস্কোপ বা পৃথিবী-মুখী অংশটি) একটুও আলো না আসে। তার ফলে ফুলগুলোর পেছনের দিকটা ঢাকা থাকবে গাঢ় অন্ধকারে। এটাই আপাতত বে-হদিশ ভিন গ্রহ, উপগ্রহগুলোকে আমাদের নজরে আসতে সাহায্য করবে।’’